ড. জাকির নায়েক এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছে যে, কুরআনে এমন কোন দলীল নেই যা মহিলাদের মসজিদে যেতে নিষেধ করে | এমনকি কোন হাদীছও এমন নেই। যেখানে বলা হয়েছে যে, মহিলারা মসজিদে যেতে পারবে না | বরং এর বিপরীতে অনেক হাদীছ আছে | সহীহ বুখারী শরীফ-এ আছে যখন তোমার স্ত্রী মসজিদে যাওয়ার অনুমতি চায় তখন তাদের নিষেধ কর না | (হাদীছ নং ৮৩২)
এমনকি সহীহ বুখারীতে আছে, যদি তোমার স্ত্রী রাতের বেলায়ও মসজিদে যেতে চায় তাহলে তাকে অনুমতি দাও | হাদীছ নং ৮২৪ | মুসলিম শরীফ-এ আরও আছে, হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত | মহিলাদের জন্য মসজিদে সবচেয়ে ভালো স্থান হচ্ছে তারা প্রথম কাতারে দাঁড়াবে আর পুরুষরা শেষ কাতারে দাঁড়াবে | অথবা পুরুষরা প্রথম কাতারে দাঁড়াবে আর মহিলাদের জন্য ভাল হলো শেষ কাতারে দাঁড়ানো |
√ দলীল- বুখারী শরীফ ১ম খন্ড, হাদীছ নং ৮৮১; সূত্র ডাক্তার জাকির নায়েক উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর ৪/২৩৪, পিস পাবলিকেশন্স, ঢাকা
জাকির নায়েকের উপরোক্ত ভ্রান্ত বক্তব্যের জবাব-
———————————————-------
মসজিদে না যাওয়া সম্পর্কিত বর্ণনাসমূহ
———————————————-------
হাদিস নং ১:-
عن حضرت ام حميد امرأة ابى حميد الساعدى انها جاءت النبى صلى الله عليه وسلم فقالت يا رسول الله صلى الله عليه وسلم انى احب الصلوة معك، قال علمت انك تحبين الصلاة معى، وصلاتك فى بيتك خيرلك من صلاتك فى حجرتك وصلاتك فى حجرتك خير من صلاتك فى دارك وصلاتك فى دارك خيرلك من صلاتك فى مسجد قومك وصلاتك فى مسجد قومك خيرلك من صلاتك فى مسجدى، قال فأمرت فبنى لها مسجد، فى اقصى شىء من بيتها واظلم فكانت تصلى فيه حتى لقيت الله عزوجل
অর্থ : হযরত উম্মে হুমাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি একবার হুযূর পাক صلى الله عليه و آله وسلم এর খিদমতে হাজির হয়ে আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم ! আপনার সাথে নামায পড়ার আমার খুবই ইচ্ছে হয় |
হুযূর পাক صلى الله عليه و آله وسلم ইরশাদ করলেন, আমি জানি, আপনি আমার সাথে নামায পড়তে ভালোবাসেন | কিন্তু মনে রাখবেন, বদ্ধ ঘরে আপনার নামায পড়া খোলা ঘরে নামায পড়ার চেয়ে উত্তম | আর খোলা ঘরের নামায বারান্দার নামাযের চেয়ে উত্তম। আর বারান্দার নামায মহল্লার মসজিদের নামাযের চেয়ে উত্তম | আর মহল্লার মসজিদের নামায আমার মসজিদের (মসজিদে নববী শরীফ) নামাযের চেয়ে উত্তম | এই ইরশাদ শ্রবণের পর হযরত উম্মে হুমাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি স্বীয় ঘরের সবচেয়ে নির্জন কোণে বিশেষভাবে নামাযের জায়গা তৈরি করেন এবং ইনতিকাল পর্যন্ত সেখানেই নামায পড়তে থাকেন | সুবহানাল্লাহ!
√ দলীল- মুসনাদে আহমদ শরীফ, ছহীহ ইবনে খুযাইমা শরীফ, ছহীহ ইবনে হিব্বান শরীফ, সূত্র: আত তারগীব- ১/১৩৫
হাদিস নং ২:-
عن ام الـمؤمنين حضرت عائشة الصديقة عليها السلام قالت قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لان تصلى الـمراة فى بيتها خير من ان تصلى فى حجرتها خير من ان تصلى فى الدار، ولان تصلى فى الدار خير من ان تصلى فى الـمسجد
অর্থ: উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم বলেছেন , মহিলাদের বদ্ধ কামরার মধ্যে নামায পড়া খোলা কামরায় নামায পড়ার চেয়ে উত্তম | আর খোলা কামরার নামায বারান্দার নামাযের চেয়ে উত্তম | আর ঘরের বারান্দার নামায মহল্লার মসজিদের নামাযের চেয়ে উত্তম |
√ দলীল- তবারানী শরীফ- সূত্র: কানযুল উম্মাল শরীফ- ৮/২৬৮
হাদীছ নং ৩ :-
عن حضرت ابن مسعود رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم الـمرأة عورة فاذا خرجت استشرفها الشيطان. رواه الترمذى وقال حديث حسن صحيح غريب وابن خزيمة وابن حبان فى صحيحها بلفظ وزادا واقرب ما تكون من وجه ربها وهى فى قعر بيتها.
অর্থ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্নিত, রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم বলেছেন , নারী জাতি পর্দার সহিত বা আবৃত অবস্থায় অবস্থান করবে | তারা যখন বাড়ি থেকে বের হয় তখন শয়তান তাদেরকে মানুষের দৃষ্টিতে তুলে ধরে | পক্ষান্তরে মহিলারা স্বীয় বাড়ির সবচেয়ে গোপন স্থানে মহান আল্লাহ পাক উনার অধিক নৈকট্য লাভ করে থাকে |
√ দলীল- তবারানী ফিল আওসাত, সূত্র: আত তারগীব- ১/১৩৬
হাদীছ নং ৪:-
عن ام الـمؤمنين حضرت ام سلمة عليها السلام عن رسول الله صلى الله عليه قال خير مساجد النساء قعر بيوتـهن.
অর্থ : উম্মুল মু’মিনীন হযরত উম্মে সালামা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم বর্ণনা করেন যে, মহিলাদের জন্য সর্বোত্তম মসজিদ হলো তাদের বাড়ির গোপন প্রকোষ্ঠ |
√ দলীল- ছহীহ ইবনে খুযাইমা, মুসতাদরাকে হাকিম, সূত্র: আত তারগীব
হাদীছ নং ৫:-
عن حضرت عبد الله بن مسعود رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم صلوة الـمراة فى بيتها افضل من صلوتـها فى حجرتها، وصلوتـها فى مخدعها افضل من صلوتها فى بيتها.
অর্থ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم ইরশাদ করেন, মহিলাদের ঘরের নির্জন কোণে নামায পড়া এটা (খোলা) ঘরে নামায পড়ার চেয়েও উত্তম |
√ দলীল- আবূ দাউদ শরীফ, ছহীহ ইবনে খুযাইমা শরীফ, সূত্র: আত তারগীব- ১/১৩৫
হাদীছ নং ৬:-
عن حضرت ابى عمرو الشيبانى انه رأى عبد الله يخرج النساء من المسجد يوم الجمعة ويقول اخرجن الى بيوتكن خير لكن.
অর্থ : হযরত আবু আমর শায়বানী বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে দেখেছি তিনি জুমুয়ার দিন মহিলা উনাদেরকে মসজিদ থেকে বের করে দিতেন এবং বলতেন আপনারা বের হয়ে যান | আপনাদের ঘরই আপনাদের জন্য উত্তম |
√ দলীল- তবারানী শরীফ, আত তারগীব- ১/১৩৬
হাদীছ নং ৭:-
ليس على النساء غزو ولا جمعة ولا تشبيع جنازة.
অর্থ : মহিলাদের জন্য জিহাদও নেই জুমুয়ার নামাযও নেই এবং জানাযায় শরীক হওয়া নেই |
√ দলীল- তবারানী ফিছছগীর শরীফ, কানযুল উম্মাল শরীফ- ৮/২৬৪
হাদীছ নং ৮:-
উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্নিত, একবার রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم
মসজিদে বসা ছিলেন এমন সময় মুযাইনা গোত্রের জনৈকা মহিলা সুন্দর পোশাকে সজ্জিতা হয়ে অহঙ্কারী চালে মসজিদে এসে উপস্থিত হলেন |
রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم বললেন যে, হে লোক সকল! তোমরা স্বীয় মহিলাদেরকে উগ্র পোশাক পরিধান থেকে এবং মসজিদে অঙ্গভঙ্গি করা থেকে বিরত রাখো | বনী ইসরাইলরা ততক্ষণ পর্যন্ত অভিশপ্ত হয় নাই যতক্ষণ না তাদের মহিলারা উগ্র পোশাক পরা এবং মসজিদে অহঙ্কারী পদক্ষেপে চলা শুরু করেছে |
√ দলীল- ইবনে মাজাহ শরীফ
হাদীছ নং ৯:-
اذا استعطرت الـمراة فمرت على القوم ليجدوا ريحها فهى زانية.
অর্থ : যখন কোন মহিলা সুগন্ধি লাগিয়ে বের হয় আর লোকেরা তার খুশবু পায় সেই মহিলা ব্যভিচারী হিসেবে গণ্য হয় |
√ দলীল- নাসায়ী শরীফ, ইবনে খুযাইমা শরীফ, তারগীব তারহীব শরীফ
হাদিস নং ১০:-
এই ফিতনার কথা উপলব্ধি করেই উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দিকা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেছিলেন, যদি রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم মহিলাদের এই (দুঃখজনক) অবস্থা দেখতেন তাহলে অবশ্যই তাদেরকে মসজিদে আসতে নিষেধ করে দিতেন | যেমন নাকি বনী ইসরাইলের মহিলাদেরকে মসজিদে আসতে নিষেধ করে দেয়া হয়েছিল |
√ দলীল- বুখারী শরীফ- ১/১২০
হযরত উম্মু হুমাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইরশাদ মুবারক উনার উপর আমল করার জন্যেই মসজিদ ছেড়ে সারাজীবন বাড়ির নির্জন প্রকোষ্ঠে নামায আদায় করেছেন এবং সে যুগের মহিলারা সাধারণভাবে এটাই করতেন |
বুখারী শরীফ-এর বিখ্যাত ব্যাখ্যাকার আল্লামা হযরত বদরুদ্দীন আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আজকের যুগে খোদার পানাহ! আজকের যুগে মহিলারা যে বিদয়াত আর নিষিদ্ধ জিনিস অবলম্বন করছে, পোশাকপরিচ্ছদ আর রূপচর্চায় তারা যে নিত্যনতুন ফ্যাশন আবিষ্কার করছে যদি উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা (রা) তিনি এই দৃশ্য দেখতেন তাহলে আরও কঠোরভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতেন | এর পরে হযরত আল্লামা আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা (রা) এর উক্ত মন্তব্য তো
রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم বিছাল শরীফ এর কিছুদিন পরের মহিলাদের সম্বন্ধে | অথচ আজকের যুগের মহিলাদের উগ্রতা আর বেহায়াপনার হাজার ভাগের এক ভাগও সেকালে ছিল না | তাহলে এ অবস্থায় তিনি কি মন্তব্য করতেন?
√ দলীল- আইনী শরহে বুখারী- ৩/২৩১
আল্লামা হযরত বদরুদ্দীন আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হিজরী নবম শতাব্দীর মহিলাদের সম্বন্ধে এই কথা বর্ণনা করেছেন | তাহলে আজ হিজরী পঞ্চদশ শতাব্দীর এই সূচনালগ্নে সারা বিশ্ব যে অশ্লীলতা আর উলঙ্গপনার দিকে ছুটে চলেছে | বেপর্দা আর বেহায়াপনার আজ যে ছড়াছড়ি, মেয়েরা যখন পুরুষের পোশাক পরছে, বব কার্টিং করছে, পেট পিঠ খুলে পার্কে হাওয়া খেয়ে বেড়াচ্ছে, সমানাধিকারের শ্লোগান দিয়ে সম্মানিত ওহী মুবারক উনার দ্বারা প্রবর্তিত সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার হুকুম-আহকাম সম্পর্কে চু-চেরা ও কীল ও ক্বাল করছে | নাঊযুবিল্লাহ!
এমনকি সহীহ বুখারীতে আছে, যদি তোমার স্ত্রী রাতের বেলায়ও মসজিদে যেতে চায় তাহলে তাকে অনুমতি দাও | হাদীছ নং ৮২৪ | মুসলিম শরীফ-এ আরও আছে, হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত | মহিলাদের জন্য মসজিদে সবচেয়ে ভালো স্থান হচ্ছে তারা প্রথম কাতারে দাঁড়াবে আর পুরুষরা শেষ কাতারে দাঁড়াবে | অথবা পুরুষরা প্রথম কাতারে দাঁড়াবে আর মহিলাদের জন্য ভাল হলো শেষ কাতারে দাঁড়ানো |
√ দলীল- বুখারী শরীফ ১ম খন্ড, হাদীছ নং ৮৮১; সূত্র ডাক্তার জাকির নায়েক উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর ৪/২৩৪, পিস পাবলিকেশন্স, ঢাকা
জাকির নায়েকের উপরোক্ত ভ্রান্ত বক্তব্যের জবাব-
———————————————-------
মসজিদে না যাওয়া সম্পর্কিত বর্ণনাসমূহ
———————————————-------
হাদিস নং ১:-
عن حضرت ام حميد امرأة ابى حميد الساعدى انها جاءت النبى صلى الله عليه وسلم فقالت يا رسول الله صلى الله عليه وسلم انى احب الصلوة معك، قال علمت انك تحبين الصلاة معى، وصلاتك فى بيتك خيرلك من صلاتك فى حجرتك وصلاتك فى حجرتك خير من صلاتك فى دارك وصلاتك فى دارك خيرلك من صلاتك فى مسجد قومك وصلاتك فى مسجد قومك خيرلك من صلاتك فى مسجدى، قال فأمرت فبنى لها مسجد، فى اقصى شىء من بيتها واظلم فكانت تصلى فيه حتى لقيت الله عزوجل
অর্থ : হযরত উম্মে হুমাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি একবার হুযূর পাক صلى الله عليه و آله وسلم এর খিদমতে হাজির হয়ে আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم ! আপনার সাথে নামায পড়ার আমার খুবই ইচ্ছে হয় |
হুযূর পাক صلى الله عليه و آله وسلم ইরশাদ করলেন, আমি জানি, আপনি আমার সাথে নামায পড়তে ভালোবাসেন | কিন্তু মনে রাখবেন, বদ্ধ ঘরে আপনার নামায পড়া খোলা ঘরে নামায পড়ার চেয়ে উত্তম | আর খোলা ঘরের নামায বারান্দার নামাযের চেয়ে উত্তম। আর বারান্দার নামায মহল্লার মসজিদের নামাযের চেয়ে উত্তম | আর মহল্লার মসজিদের নামায আমার মসজিদের (মসজিদে নববী শরীফ) নামাযের চেয়ে উত্তম | এই ইরশাদ শ্রবণের পর হযরত উম্মে হুমাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি স্বীয় ঘরের সবচেয়ে নির্জন কোণে বিশেষভাবে নামাযের জায়গা তৈরি করেন এবং ইনতিকাল পর্যন্ত সেখানেই নামায পড়তে থাকেন | সুবহানাল্লাহ!
√ দলীল- মুসনাদে আহমদ শরীফ, ছহীহ ইবনে খুযাইমা শরীফ, ছহীহ ইবনে হিব্বান শরীফ, সূত্র: আত তারগীব- ১/১৩৫
হাদিস নং ২:-
عن ام الـمؤمنين حضرت عائشة الصديقة عليها السلام قالت قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لان تصلى الـمراة فى بيتها خير من ان تصلى فى حجرتها خير من ان تصلى فى الدار، ولان تصلى فى الدار خير من ان تصلى فى الـمسجد
অর্থ: উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم বলেছেন , মহিলাদের বদ্ধ কামরার মধ্যে নামায পড়া খোলা কামরায় নামায পড়ার চেয়ে উত্তম | আর খোলা কামরার নামায বারান্দার নামাযের চেয়ে উত্তম | আর ঘরের বারান্দার নামায মহল্লার মসজিদের নামাযের চেয়ে উত্তম |
√ দলীল- তবারানী শরীফ- সূত্র: কানযুল উম্মাল শরীফ- ৮/২৬৮
হাদীছ নং ৩ :-
عن حضرت ابن مسعود رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم الـمرأة عورة فاذا خرجت استشرفها الشيطان. رواه الترمذى وقال حديث حسن صحيح غريب وابن خزيمة وابن حبان فى صحيحها بلفظ وزادا واقرب ما تكون من وجه ربها وهى فى قعر بيتها.
অর্থ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্নিত, রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم বলেছেন , নারী জাতি পর্দার সহিত বা আবৃত অবস্থায় অবস্থান করবে | তারা যখন বাড়ি থেকে বের হয় তখন শয়তান তাদেরকে মানুষের দৃষ্টিতে তুলে ধরে | পক্ষান্তরে মহিলারা স্বীয় বাড়ির সবচেয়ে গোপন স্থানে মহান আল্লাহ পাক উনার অধিক নৈকট্য লাভ করে থাকে |
√ দলীল- তবারানী ফিল আওসাত, সূত্র: আত তারগীব- ১/১৩৬
হাদীছ নং ৪:-
عن ام الـمؤمنين حضرت ام سلمة عليها السلام عن رسول الله صلى الله عليه قال خير مساجد النساء قعر بيوتـهن.
অর্থ : উম্মুল মু’মিনীন হযরত উম্মে সালামা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم বর্ণনা করেন যে, মহিলাদের জন্য সর্বোত্তম মসজিদ হলো তাদের বাড়ির গোপন প্রকোষ্ঠ |
√ দলীল- ছহীহ ইবনে খুযাইমা, মুসতাদরাকে হাকিম, সূত্র: আত তারগীব
হাদীছ নং ৫:-
عن حضرت عبد الله بن مسعود رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم صلوة الـمراة فى بيتها افضل من صلوتـها فى حجرتها، وصلوتـها فى مخدعها افضل من صلوتها فى بيتها.
অর্থ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم ইরশাদ করেন, মহিলাদের ঘরের নির্জন কোণে নামায পড়া এটা (খোলা) ঘরে নামায পড়ার চেয়েও উত্তম |
√ দলীল- আবূ দাউদ শরীফ, ছহীহ ইবনে খুযাইমা শরীফ, সূত্র: আত তারগীব- ১/১৩৫
হাদীছ নং ৬:-
عن حضرت ابى عمرو الشيبانى انه رأى عبد الله يخرج النساء من المسجد يوم الجمعة ويقول اخرجن الى بيوتكن خير لكن.
অর্থ : হযরত আবু আমর শায়বানী বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে দেখেছি তিনি জুমুয়ার দিন মহিলা উনাদেরকে মসজিদ থেকে বের করে দিতেন এবং বলতেন আপনারা বের হয়ে যান | আপনাদের ঘরই আপনাদের জন্য উত্তম |
√ দলীল- তবারানী শরীফ, আত তারগীব- ১/১৩৬
হাদীছ নং ৭:-
ليس على النساء غزو ولا جمعة ولا تشبيع جنازة.
অর্থ : মহিলাদের জন্য জিহাদও নেই জুমুয়ার নামাযও নেই এবং জানাযায় শরীক হওয়া নেই |
√ দলীল- তবারানী ফিছছগীর শরীফ, কানযুল উম্মাল শরীফ- ৮/২৬৪
হাদীছ নং ৮:-
উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্নিত, একবার রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم
মসজিদে বসা ছিলেন এমন সময় মুযাইনা গোত্রের জনৈকা মহিলা সুন্দর পোশাকে সজ্জিতা হয়ে অহঙ্কারী চালে মসজিদে এসে উপস্থিত হলেন |
রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم বললেন যে, হে লোক সকল! তোমরা স্বীয় মহিলাদেরকে উগ্র পোশাক পরিধান থেকে এবং মসজিদে অঙ্গভঙ্গি করা থেকে বিরত রাখো | বনী ইসরাইলরা ততক্ষণ পর্যন্ত অভিশপ্ত হয় নাই যতক্ষণ না তাদের মহিলারা উগ্র পোশাক পরা এবং মসজিদে অহঙ্কারী পদক্ষেপে চলা শুরু করেছে |
√ দলীল- ইবনে মাজাহ শরীফ
হাদীছ নং ৯:-
اذا استعطرت الـمراة فمرت على القوم ليجدوا ريحها فهى زانية.
অর্থ : যখন কোন মহিলা সুগন্ধি লাগিয়ে বের হয় আর লোকেরা তার খুশবু পায় সেই মহিলা ব্যভিচারী হিসেবে গণ্য হয় |
√ দলীল- নাসায়ী শরীফ, ইবনে খুযাইমা শরীফ, তারগীব তারহীব শরীফ
হাদিস নং ১০:-
এই ফিতনার কথা উপলব্ধি করেই উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দিকা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেছিলেন, যদি রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم মহিলাদের এই (দুঃখজনক) অবস্থা দেখতেন তাহলে অবশ্যই তাদেরকে মসজিদে আসতে নিষেধ করে দিতেন | যেমন নাকি বনী ইসরাইলের মহিলাদেরকে মসজিদে আসতে নিষেধ করে দেয়া হয়েছিল |
√ দলীল- বুখারী শরীফ- ১/১২০
হযরত উম্মু হুমাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইরশাদ মুবারক উনার উপর আমল করার জন্যেই মসজিদ ছেড়ে সারাজীবন বাড়ির নির্জন প্রকোষ্ঠে নামায আদায় করেছেন এবং সে যুগের মহিলারা সাধারণভাবে এটাই করতেন |
বুখারী শরীফ-এর বিখ্যাত ব্যাখ্যাকার আল্লামা হযরত বদরুদ্দীন আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আজকের যুগে খোদার পানাহ! আজকের যুগে মহিলারা যে বিদয়াত আর নিষিদ্ধ জিনিস অবলম্বন করছে, পোশাকপরিচ্ছদ আর রূপচর্চায় তারা যে নিত্যনতুন ফ্যাশন আবিষ্কার করছে যদি উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা (রা) তিনি এই দৃশ্য দেখতেন তাহলে আরও কঠোরভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতেন | এর পরে হযরত আল্লামা আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা (রা) এর উক্ত মন্তব্য তো
রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم বিছাল শরীফ এর কিছুদিন পরের মহিলাদের সম্বন্ধে | অথচ আজকের যুগের মহিলাদের উগ্রতা আর বেহায়াপনার হাজার ভাগের এক ভাগও সেকালে ছিল না | তাহলে এ অবস্থায় তিনি কি মন্তব্য করতেন?
√ দলীল- আইনী শরহে বুখারী- ৩/২৩১
আল্লামা হযরত বদরুদ্দীন আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হিজরী নবম শতাব্দীর মহিলাদের সম্বন্ধে এই কথা বর্ণনা করেছেন | তাহলে আজ হিজরী পঞ্চদশ শতাব্দীর এই সূচনালগ্নে সারা বিশ্ব যে অশ্লীলতা আর উলঙ্গপনার দিকে ছুটে চলেছে | বেপর্দা আর বেহায়াপনার আজ যে ছড়াছড়ি, মেয়েরা যখন পুরুষের পোশাক পরছে, বব কার্টিং করছে, পেট পিঠ খুলে পার্কে হাওয়া খেয়ে বেড়াচ্ছে, সমানাধিকারের শ্লোগান দিয়ে সম্মানিত ওহী মুবারক উনার দ্বারা প্রবর্তিত সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার হুকুম-আহকাম সম্পর্কে চু-চেরা ও কীল ও ক্বাল করছে | নাঊযুবিল্লাহ!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন