❤ `````````` শানে আউলিয়া ````````` ❤
★ ওলি আরবী শব্দ। আরবী ভাষায় “আউলিয়া” শব্দটি “ওলি'র বহুবচন।
ওলি' অর্থ বন্ধু,মিত্র বা অনুসারি, মুরব্বী, অভিভাবক ।
কখনো শব্দটির অর্থ হয় শাসক, অভিভাবক বা কর্তা।
(তথ্যসূত্রঃ আরবী-বাংলা অভিধান,প্রকাশনায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ)।
★ প্রসিদ্ধ আরবী-ইংরেজী অভিধান “আল-মাওয়ারিদ” অনুসারে ওলি শব্দের অর্থঃ guardian, patron, friend,companion ইত্যাদী।
★ পবিত্র কোরআনে “ওলি” এবং “আউলিয়া” এ উভয় শব্দটির ব্যবহার হয়েছে অসংখ্য বার।
★★★ ওলীগনের অবস্থা সম্পর্কে বোঝার জন্য কিছু মুল্যবান বানী দেখে নেই :
★ "সুফি তিনিই যার নিকট জাহের ও বাতেন (গায়েব) পরিষ্কার"
- বড় পীর আব্দুল কাদির জিলানী (রা)।।
★ "দরবেশের শান সেটাই যার ঘর থেকে কেউ খালি হাতে ফেরে না"
- সুলতানুল হিন্দ খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রা)।।
★ "মানুষ ফকীরী ও দরবেশীর যোগ্য তখনই হয় যখন তার এই অস্থায়ী
জগতের কোন কিছু অবশিষ্ট না থাকে।"
- সুলতানুল হীন্দ খাজা গরিবে নেওয়াজ (রহঃ)
★ একদিন হযরত খাজা গারিবে নেওয়াজ মইনুদ্দিন চিশতী (র) কাবার হেরেম শরীফে ধ্যানমগ্ন অবস্থায় এলহাম হইলো যে, “হে মইনুদ্দিন! আমি তোমার উপর সন্তোষ্ট আছি এবং আমি তোমাকে ক্ষমা করিলাম। যাহা ইচ্ছা হয় চাও; আমি তোমাকে প্রদান করিব।” খাজা বাবা আরজ করিলেন, “হে এলাহি! মইনুদ্দিনের সাজরা ভুক্ত মুরিদদের ক্ষমা করুন।” আল্লাহ্ তায়ালার হুকুম হইলো, “ হে মইনুদ্দিন, তুমি আমার; তোমার মুরিদের মুরিদ কেয়ামত পর্যন্ত, যাহারা তোমার সাজরা ভুক্ত হইবে, আমি ক্ষমা করিব।” অতঃপর হযরত খাজা গারিবে নেওয়াজ মইনুদ্দিন চিশতী (র) অধিকাংশ সময়ই বলতেন, “আমার মুরিদ ও আমার মুরিদগণের মুরিদগণ, যাহারা কেয়ামত পর্যন্ত আমার সাজারা ভুক্ত হইবে, উহাদিগকে বেহেশতে না লইয়া মইনুদ্দিন কখনো বেহেশতে কদম রাখিবে না।”
★★★ ওলী কারা?
★ হাদীছ শরীফে ইরশাদ করেনঃ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রা) ও ইবনে আব্বাস সহ অনেক সাহাবায় কেরাম বলেছেন-
```আউলিয়া আল্লাহিল্লাযিনা ইজা রুয়ুযা জুকেরাল্লাহ।```
অর্থঃ " তারাই অলী আল্লাহ যাদের কে দেখলে খোদার কথা স্মরণ হয়।"
★ ভারতের জমীনে সুলতালুন হিন্দ খাজা মাইনুদ্দীন চিশতী (রাঃ) এসে দ্বীন প্রচার করেন তিনি ৯২ লক্ষ্য মানুষকে মুসলমান করেেছে। এখনও খাজা বাবার (রা:) পবিত্র রওজা মোবারকে অনেক বিধর্মী মুসলমান হচ্ছে। কই নামধারী আহলে হাদিস ড জাকির নায়েক কি ১০০০ মুসলমান করতে পেরেছে? এত প্রচার আর এত tv show আর lecture দিয়ে? যেখানে ওলীদের চেহারা দেখেই কত বিধর্মী মুসলমান হয়ে গেছে তার হিসেব নেই।
আউলিয়া কেরাম (মুমিন বান্দাগন) সম্পর্কে আল-কোরান থেকে দেখুন :
★ হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ্ পাককে ভয় কর এবং তাঁর নৈকট্য লাভের উপায় বা ওসিলা তালাশ কর।[সুরা ৫ মায়েদা: ৩৫]।
(বহু সহিহ হাদিসে আসছে যে সাহাবীগন রাসুলুল্লাহ (সা) এর উসিলা দিতেন বা ওনারা একে অন্যের উসিলা দিতেন এখন আমরা নবী-রাসুল, সাহাবী, ইমাম, ওলী-আউলিয়ার উসিলা দেই)
★ এ আয়াতে কারীমায় সুষ্পষ্টভাবে আল্লাহর হেদায়াতপ্রাপ্ত বুযুর্গদের সাহচর্যে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে:-
اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ
অনুবাদ- আমাদের সরল সঠিক পথ [সীরাতে মুস্তাকিম] দেখাও। তোমার নিয়ামতপ্রাপ্ত বান্দাদের পথ।{সূরা ফাতিহা-৬,৭}
★ আর তার নিয়ামত প্রাপ্ত বান্দা হলেন –
الَّذِينَ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ مِنَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِينَ
অনুবাদ-যাদের উপর আল্লাহ তাআলা নিয়ামত দিয়েছেন, তারা হল নবীগণ, সিদ্দীকগণ, শহীদগণ, ও নেককার বান্দাগণ।{সূরা নিসা-৬৯}
★ নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাকের রহমত (মুহসিনিন) আউলিয়া কিরামগনের নিকটবর্তী । [সুরা ৭ আরাফ: ৫৬]
★ হে মুমিনগণ! তোমরা অনুস্মরণ কর, আল্লাহ্ পাক এর, তাঁর রাসুল পাক (সাঃ) এর এবং তোমাদের মধ্যে যারা উলিল আমর (ন্যায় বিচারক) রয়েছে তাদের। [সুরা ৪ নিসা: ৫৯]
★ আল্লাহ পাক বলেন, “তোমরা সব আল্লাহওয়ালা হয়ে যাও”। (সূরা ইমরান-৭৯)
★ পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা’য়ালা আরো বলেন,
إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ اللّهُ وَرَسُولُهُ وَالَّذِينَ آمَنُواْ الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلاَةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُمْ رَاكِعُونَ
'' নিশ্চয়ই তোমাদের ওলি (বন্ধু) হলেন আল্লাহ এবং তাঁর রসুল আর ঈমানদার লোকেরা- যারা সালাত কায়েম করে, যাকাত দিয়ে দেয়, এবং আল্লাহর প্রতি অনুগত বাধ্যগত থাকে।
وَمَن يَتَوَلَّ اللّهَ وَرَسُولَهُ وَالَّذِينَ آمَنُواْ فَإِنَّ حِزْبَ اللّهِ هُمُ الْغَالِبُونَ
আর যারা ওলি (বন্ধু) মানে আল্লাহকে এবং আল্লাহর রসুলকে আর ঈমানদার লোকদেরকে, তারাই আল্লাহর দল এবং আল্লাহর দলই থাকবে বিজয়ী '' ( সূরা আল মায়িদা,আয়াত-৫৫-৫৬)
★ ওলি আরবী শব্দ। আরবী ভাষায় “আউলিয়া” শব্দটি “ওলি'র বহুবচন।
ওলি' অর্থ বন্ধু,মিত্র বা অনুসারি, মুরব্বী, অভিভাবক ।
কখনো শব্দটির অর্থ হয় শাসক, অভিভাবক বা কর্তা।
(তথ্যসূত্রঃ আরবী-বাংলা অভিধান,প্রকাশনায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ)।
★ প্রসিদ্ধ আরবী-ইংরেজী অভিধান “আল-মাওয়ারিদ” অনুসারে ওলি শব্দের অর্থঃ guardian, patron, friend,companion ইত্যাদী।
★ পবিত্র কোরআনে “ওলি” এবং “আউলিয়া” এ উভয় শব্দটির ব্যবহার হয়েছে অসংখ্য বার।
★★★ ওলীগনের অবস্থা সম্পর্কে বোঝার জন্য কিছু মুল্যবান বানী দেখে নেই :
★ "সুফি তিনিই যার নিকট জাহের ও বাতেন (গায়েব) পরিষ্কার"
- বড় পীর আব্দুল কাদির জিলানী (রা)।।
★ "দরবেশের শান সেটাই যার ঘর থেকে কেউ খালি হাতে ফেরে না"
- সুলতানুল হিন্দ খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রা)।।
★ "মানুষ ফকীরী ও দরবেশীর যোগ্য তখনই হয় যখন তার এই অস্থায়ী
জগতের কোন কিছু অবশিষ্ট না থাকে।"
- সুলতানুল হীন্দ খাজা গরিবে নেওয়াজ (রহঃ)
★ একদিন হযরত খাজা গারিবে নেওয়াজ মইনুদ্দিন চিশতী (র) কাবার হেরেম শরীফে ধ্যানমগ্ন অবস্থায় এলহাম হইলো যে, “হে মইনুদ্দিন! আমি তোমার উপর সন্তোষ্ট আছি এবং আমি তোমাকে ক্ষমা করিলাম। যাহা ইচ্ছা হয় চাও; আমি তোমাকে প্রদান করিব।” খাজা বাবা আরজ করিলেন, “হে এলাহি! মইনুদ্দিনের সাজরা ভুক্ত মুরিদদের ক্ষমা করুন।” আল্লাহ্ তায়ালার হুকুম হইলো, “ হে মইনুদ্দিন, তুমি আমার; তোমার মুরিদের মুরিদ কেয়ামত পর্যন্ত, যাহারা তোমার সাজরা ভুক্ত হইবে, আমি ক্ষমা করিব।” অতঃপর হযরত খাজা গারিবে নেওয়াজ মইনুদ্দিন চিশতী (র) অধিকাংশ সময়ই বলতেন, “আমার মুরিদ ও আমার মুরিদগণের মুরিদগণ, যাহারা কেয়ামত পর্যন্ত আমার সাজারা ভুক্ত হইবে, উহাদিগকে বেহেশতে না লইয়া মইনুদ্দিন কখনো বেহেশতে কদম রাখিবে না।”
★★★ ওলী কারা?
★ হাদীছ শরীফে ইরশাদ করেনঃ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রা) ও ইবনে আব্বাস সহ অনেক সাহাবায় কেরাম বলেছেন-
```আউলিয়া আল্লাহিল্লাযিনা ইজা রুয়ুযা জুকেরাল্লাহ।```
অর্থঃ " তারাই অলী আল্লাহ যাদের কে দেখলে খোদার কথা স্মরণ হয়।"
★ ভারতের জমীনে সুলতালুন হিন্দ খাজা মাইনুদ্দীন চিশতী (রাঃ) এসে দ্বীন প্রচার করেন তিনি ৯২ লক্ষ্য মানুষকে মুসলমান করেেছে। এখনও খাজা বাবার (রা:) পবিত্র রওজা মোবারকে অনেক বিধর্মী মুসলমান হচ্ছে। কই নামধারী আহলে হাদিস ড জাকির নায়েক কি ১০০০ মুসলমান করতে পেরেছে? এত প্রচার আর এত tv show আর lecture দিয়ে? যেখানে ওলীদের চেহারা দেখেই কত বিধর্মী মুসলমান হয়ে গেছে তার হিসেব নেই।
আউলিয়া কেরাম (মুমিন বান্দাগন) সম্পর্কে আল-কোরান থেকে দেখুন :
★ হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ্ পাককে ভয় কর এবং তাঁর নৈকট্য লাভের উপায় বা ওসিলা তালাশ কর।[সুরা ৫ মায়েদা: ৩৫]।
(বহু সহিহ হাদিসে আসছে যে সাহাবীগন রাসুলুল্লাহ (সা) এর উসিলা দিতেন বা ওনারা একে অন্যের উসিলা দিতেন এখন আমরা নবী-রাসুল, সাহাবী, ইমাম, ওলী-আউলিয়ার উসিলা দেই)
★ এ আয়াতে কারীমায় সুষ্পষ্টভাবে আল্লাহর হেদায়াতপ্রাপ্ত বুযুর্গদের সাহচর্যে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে:-
اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ
অনুবাদ- আমাদের সরল সঠিক পথ [সীরাতে মুস্তাকিম] দেখাও। তোমার নিয়ামতপ্রাপ্ত বান্দাদের পথ।{সূরা ফাতিহা-৬,৭}
★ আর তার নিয়ামত প্রাপ্ত বান্দা হলেন –
الَّذِينَ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ مِنَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِينَ
অনুবাদ-যাদের উপর আল্লাহ তাআলা নিয়ামত দিয়েছেন, তারা হল নবীগণ, সিদ্দীকগণ, শহীদগণ, ও নেককার বান্দাগণ।{সূরা নিসা-৬৯}
★ নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাকের রহমত (মুহসিনিন) আউলিয়া কিরামগনের নিকটবর্তী । [সুরা ৭ আরাফ: ৫৬]
★ হে মুমিনগণ! তোমরা অনুস্মরণ কর, আল্লাহ্ পাক এর, তাঁর রাসুল পাক (সাঃ) এর এবং তোমাদের মধ্যে যারা উলিল আমর (ন্যায় বিচারক) রয়েছে তাদের। [সুরা ৪ নিসা: ৫৯]
★ আল্লাহ পাক বলেন, “তোমরা সব আল্লাহওয়ালা হয়ে যাও”। (সূরা ইমরান-৭৯)
★ পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা’য়ালা আরো বলেন,
إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ اللّهُ وَرَسُولُهُ وَالَّذِينَ آمَنُواْ الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلاَةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُمْ رَاكِعُونَ
'' নিশ্চয়ই তোমাদের ওলি (বন্ধু) হলেন আল্লাহ এবং তাঁর রসুল আর ঈমানদার লোকেরা- যারা সালাত কায়েম করে, যাকাত দিয়ে দেয়, এবং আল্লাহর প্রতি অনুগত বাধ্যগত থাকে।
وَمَن يَتَوَلَّ اللّهَ وَرَسُولَهُ وَالَّذِينَ آمَنُواْ فَإِنَّ حِزْبَ اللّهِ هُمُ الْغَالِبُونَ
আর যারা ওলি (বন্ধু) মানে আল্লাহকে এবং আল্লাহর রসুলকে আর ঈমানদার লোকদেরকে, তারাই আল্লাহর দল এবং আল্লাহর দলই থাকবে বিজয়ী '' ( সূরা আল মায়িদা,আয়াত-৫৫-৫৬)
★ আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,
أَلا إِنَّ أَوْلِيَاء اللّهِ لاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ
মনে রেখো যারা আল্লাহর (ওলি) বন্ধু, তাদের না কোন ভয় ভীতি আছে, না তারা চিন্তান্বিত হবে।
الَّذِينَ آمَنُواْ وَكَانُواْ يَتَّقُونَ
যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে এবং ভয় করতে রয়েছে।
لَهُمُ الْبُشْرَى فِي الْحَياةِ الدُّنْيَا وَفِي الآخِرَةِ لاَ تَبْدِيلَ لِكَلِمَاتِ اللّهِ ذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
তাদের জন্য সুসংবাদ পার্থিব জীবনে ও পরকালীন জীবনে। আল্লাহর কথার কখনো হের-ফের হয় না। এটাই হল মহা সফলতা।
(সুরা ইউনুছ আয়াত :৬২-৬৪)
(সুরা ইউনুছ আয়াত :৬২-৬৪)
★ নিশ্চয় আল্লাহ্ মুহসিনদের ভালবাসেন।’’ (সূরা আল-বাকারা:১৯৫)
★ আল্লাহ বলেন,
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ
‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাওবাকারী ও পবিত্রতা অবলম্বনকারীদেরকে ভালবাসেন ।’’
(সূরা আল-বাকারা:২২২)
★ তাকওয়া সকল কল্যাণের মূল। তাই আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে খুবই ভালবাসেন। তিনি বলেন,
فَإِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَّقِين
‘‘আর নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে ভালবাসেন।’’
(সূরা আল ইমরান:৭৬)
★ আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে আরো বলেন,
وَاللَّهُ وَلِيُّ الْمُتَّقِينَ
"ওয়াল্লাহু ওয়ালীউল মুত্তাকীন "
অর্থ - আর আল্লাহ্ মুত্তাকীদের (পরহেজগারদের) বন্ধু।
(সূরা জাসিয়া ৪৫:১৯)
★ আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন , " তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সেই ব্যক্তিই অধিক মর্যাদা সম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক মুত্তাকী।'' ( সূরা হুজুরাত ৪৯: ১৩ )
★ যারা (প্রকৃত ভাবে) ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক। (সূরা বাকারা ২৫৭)
★ আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন-
وَاللّهُ وَلِيُّ الْمُؤْمِنِينَ
"ওয়াল্লাহু ওয়ালীউল মু'মিনীন"
অর্থ - আর আল্লাহ মুমিনদের বন্ধু (অভিভাবক)।
( সূরা আলে ইমরান ৩ : ৬৮ )
★ '' সকল মুমিনই দয়াময় আল্লাহ অলি।'' ( ইমাম তাহাবী ''আল আকীদা'' গ্রন্থ)
★ আল্লাহ কোরআনে পরমান,শয়তান আল্লাহকে বলতেছে,""সকল মানুষকে আমি পথভ্রষ্ঠ করিব,কিন্তু আপনার সে বান্দাদের ব্যতীত যারা তার মধ্যে বিশিষ্ট।
(সূরা হিজর -40)
★ আল্লাহ পাক এবার নিজেই বলছেন, "বাস্তবিক আমার সে বান্দাদের উপর তোমার কতৃর্ত চলবে না।
(সূরা হিজর-43)
★★★ ওলীগন কি সত্যি বিদ্যমান আছেন?
★ হযরত মালিক বিন আনাস (রঃ) বর্ণনা করেন যে,“
হযরত রসূলে করিম (সঃ) ফরমায়েছেন যে, আমাদের জন্য ৪০ জন ওলী আছেন। এঁদের মধ্যে ১২ জন সিরিয়ায় এবং ১৮ জন ইরাকে রয়েছেন”।
★ ইবনে আসাকির (রহ) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে মারফু হাদীসটি বর্ণনা করেন। হাদীসের মর্ম মতে, “
** নিশ্চয়ই আল্লাহতালার ৩০০ জন ওলি আল্লাহ রয়েছেন যাদের ক্বলব হযরত আদম (আঃ)-এর ক্বলবের ন্যায়,
** ৪০ জন মুসা (আঃ)-এর কলবের ন্যায়,
** ৭ জন ওলী ঈসা (আঃ)-এর কলবের ন্যায়,
** ৫ জন ওলী জিব্রাইল (আঃ)-এর কলবের ন্যায়,
** ৩ জন ওলী মিকাইল (আঃ)-এর কলবের ন্যায় এবং
** ১ জন ওলী ইস্রাফীল (আঃ)-এর কলবের ন্যায় সৃষ্টি করেছেন।
যখন তাদের মধ্যে একজন পরলোক গমন করেন, তখন তাদের তিনজনের দলের একজনতাঁর স্থানে,
পাঁচজনের দলেন একজন তিনজনের দলে,
সাতজনের দলের একজন পাঁচজনের দলে,
চল্লিশ জনের দলের একজন সাতজনের দলে এবং
তিনশত জনের দলের একজন চল্লিশজনের দলে এবং
কোন একজন সৎকর্ম পরায়ন মুসলমানকে সেই তিনশত দলের মনোনয়ন দান করে তাঁদের সংখ্যা পরিপূর্ণ রাখা হয়”।
তাঁদের ওছিলায় রাসূল করিম (সঃ)-এর উম্মতদেরকে আল্লাহতালা বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করেন।
★ ইমাম হাকিম তিরমিজি বর্ণনা করেছেন যে,
হযরত রাসূলে করিম (সঃ) মানুষের মধ্যে ৪০ জন সিদ্দিক রেখে যান যাঁরা এ পৃথিবীকে বাঁচিয়ে রাখেন।
এদের একজনের মৃত্যু হলে আর একজন তাঁর জায়গায় আসেন। এঁদের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে আল্লাহতালা মোহর দিয়ে একজন ওলীকে পাঠিয়ে দেন। কিতাবে খতম-আল আউলিয়া
Reference :
(হাকিম তিরমিজি, ৮৯৮ খৃঃ)
(কাসফ আল মাহজুব : আল-হুজবেরী, ১০৬৩ খৃঃ)।
★ “ইহুদী ও খৃষ্টানদের ধর্মগ্রন্থেও ওলীদের প্রশাসনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এদের ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী ধার্মিক লোক হচ্ছে এ পৃথিবীর ভিত্তি। ধার্মিক লোক না থাকলে পৃথিবীর কল্যাণ লোপ পাবে। পৃথিবীতে কমপক্ষে ত্রিশজন ধার্মিক লোক আছেন, তাঁরা না থাকলে এ পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। এ সকল ধর্মগ্রন্থের কোন সংস্করণে দেখায় যায় যে, পৃথিবীতে ৪৫ জন ধার্মিক লোক আছেন যাঁরা এ পৃথিবীকে টিকে থাকতে সাহায্য করেন। এঁদের মধ্যে বেবিলোনে রয়েছেন ত্রিশজন, প্যালেষ্টাইনে ১৫ জন। পরবর্তীতে এ সকল ধর্মের বিশেষজ্ঞগণ এসকল ধার্মিক ব্যক্তির সংখ্যা ৩৬ জন বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন। এ সকল ধর্মীয় পন্ডিতগণ মনে করেন যে, এ সকল ধার্মিক লোক না থাকলে পৃথিবী থাকবে না এবং এঁদের কেউ মৃত্যু বরণ করলে তাঁর জায়গায় অন্যজন চলে আসবেন।
(আদি পুস্তক:৯; Old Testament (Midas Version)।
★ জুন্নুন মিশরী (রঃ)-এর মতে, পৃথিবীতে ৩০০ জন ওলী আছেন। এঁদের মধ্যে একজন হচ্ছেন গাউছ বা মূল খুঁটি। তাঁকে একটি বৃত্তের কেন্দ্র বিন্দুর সঙ্গে তুলনা করা যায়। তিনিই আকর্ষণ ও বিকর্ষণের কেন্দ্র।
★ হযরত মুহীউদ্দিন ইবনুল আরবী (রঃ) বলেন,“
হযরত রাসূলে করিম (সঃ)-এর প্রতিনিধি ছাড়া এ পৃথিবীর অস্তিত্ব থাকতে পারে না। প্রতিনিধিদের মধ্যে একজন থাকেন যাঁকে কুতুব বা খুঁটি বলা যায়। কোন এক যুগে এবং কোন এক নির্দিষ্ট স্থানে তাঁর জন্ম হয়। তাঁর মধ্যে আধ্যাত্মিক গুণাবলীর পরিপূর্ণতা থাকে এবং তাঁকে সাধারণত ছাহেবে জমান বলা হয়।”
★ হযরত মুহীউদ্দিন আরবী (রঃ)-এর মতে, “গাউছ হলেন বিশ্বব্রহ্মান্ডের প্রাণকেন্দ্র। তাঁর নিকট থেকে চতুর্দিকে আলো বিচ্ছুরিত হয়ে সমস্ত জীবের প্রাণে প্রবেশ করে। গাউছকে দু’জন ইমাম প্রতিনিয়ত সাহায্য করেন। গাউছের পরে হলেন চারজন আউতাদ বা স্তম্ভ। আউতাদের অধীনে আছেন সাতজন আবদাল। এঁদের কাজ হলো আবহাওয়া নিয়ন্ত্রন করা। এঁদের পরে রয়েছেন বারজন নুকাবা বা মনোনত পরহেজগার ব্যক্তি। এসকল নুকাবাগণ মানুষের অন্তর্নিহিত চিন্তসমূহ সম্পর্কে উপলব্ধি করতে পারেন। এদের পরে আরও আটজন নুকাপ আছেন যাঁদের মধ্যে মহান আল্লাহতালা আট রকমের গুণ দিয়েছেন। সবার শেষে আছেন হুয়ারী বা শিষ্যগণ এবং তাঁদের পশ্চাতে রয়েছেন আরও ৪০ জন লোক”। হযরত মুহীউদ্দিন ইবনুল আরবী (রঃ)-এর মতে,“পয়গম্বারদের মধ্যে যেমন শেষ পয়গাম্বর আছেন, ওলীদের মধ্যেও তেমনি শেষ ওলী রয়েছেন যার কাছে সীলমোহর রয়েছে”।তাঁর মতে “দুটি সীল মোহর রয়েছে- একটি হযরত ঈসা (আঃ)-এর সঙ্গে এবং অপরটি সর্বশ্রেষ্ঠ ওলীর সঙ্গে”।
★ প্রখ্যাত সুফী আশ শাধিলী বলেন, “প্রত্যেক পীর হলে নিজ নিজ ত্বরিকার কুতুব, খুঁটি বা গাউছ হলেন একজন”। (Alnafakhir al-Aliya Fi-Alma-Atnir-Osh-Shadhiliya by Ahmad-Ibu-Ayas)।
★ পল বি, ফেন্টনের মতে, “বহু সুফী সাধক তাঁদের পীরকে গাউছুল আযম বা মূল খুঁটি বলে দাবী করেছেন। যেহেতু অনেক সময় গাউছুল আযম দৃশ্যমান নহেন। এ অবস্থায় একটি সময়গত মূল খুঁটি (কুতুবুজজ্বমান) ধারণার সৃষ্টি হয়েছে”। (Journal of the Muhiddin-Ibu-Arabi Society, Vol.X,1991, Oxford University Press Ltd.)
★★★ ওলীদের কাছে আছে ইলমে লাদ্দুনী বা আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞান :
★ আল্লাহ পাক বলেন, “যদি তোমরা না জানো, তবে জ্ঞানীদেরকে (আহলে যিকির বা আল্লাহওয়ালাগণকে) জিজ্ঞেস করে জেনে নাও”। (সূরা নহল ৪৩ ও সূরা আম্বিয়া-৭)
★ কিয়ামতের আগে মানুষ মুর্খতা বশত জ্ঞানহীন মানুষ এর কাছ থেকে ফতোয়া জিজ্ঞেস করবে যারা নিজেরাও পথভ্রষ্ট অন্যকেও পথভ্রষ্ট করবে।(আল-হাদিস)
★ “তোমরা কার নিকট থেকে দ্বীন শিক্ষা করছো, তাকে দেখে নাও”। (মুসলিম শরীফ)
★ “নিশ্চয়ই আলিমগণ নবী আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালামগণের ওয়ারিছ এবং নিশ্চয়ই নবী আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালামগণের কোন দিনার-দিরহাম রেখে যাননি বরং তাঁরা ইল্মে দ্বীন রেখে গিয়েছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি তা গ্রহণ করলো, সে পূর্ণ অংশ (বিরাট সফলতা) লাভ করলো।”
(আহ্মদ, তিরমিযী)
★ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন,
“ইল্ম দু’প্রকার, একটি হচ্ছে- ক্বালবী ইল্ম (ইল্মে তাছাউফ), যা উপকারী ইল্ম। অপরটি হচ্ছে- জবানি ইল্ম (ইল্মে ফিক্বাহ), যা আল্লাহ পাক-এর তরফ থেকে বান্দার প্রতি দলীল স্বরূপ।”
(দারেমী, মিশকাত, মিরকাত, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত)
“আলিমগণ আম্বিয়া আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালামগণের ওয়ারিছ বা উত্তরাধিকারী।”
(তিরমিযী, আবূ দাউদ, ইবনে মাযাহ্, দারিমী, আহমদ, মিশকাত, মা’য়ারিফুস্ সুনান, মিরকাত, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, মুজাহিরে হক্ব, উরফুশ্ শাজী, বজলুল মাজহুদ ইত্যাদি)
Note: কাদের নিকট সেই সত্যিকারের ইলমে লাদ্দুনী রয়েছে? যারা আল্লাহর ওলী তারাই তো প্রকৃত আলিম। তাই নয় কি?
★★★ ওলীগনের কারামত :
★ আল-কোরআনে আসহাবে কাহাফ এর ওলীগনের কথা বলা হয়েছে তারা শত শত ঘুমন্ত ছিল তাও উল্লেখ করা হয়েছে। (সুরা আসহাবে কাহাফ)
★ হযরত মরিয়ম আঃ নবী ছিলেন না। কিন্তু কারামত স্বরূপ আল্লাহ তাআলা তাকে অমৌসুমি ফল দান করেছিলেন। কুরআনে এসেছে :
فَتَقَبَّلَهَا رَبُّهَا بِقَبُولٍ حَسَنٍ وَأَنبَتَهَا نَبَاتًا حَسَنًا وَكَفَّلَهَا زَكَرِيَّا ۖ كُلَّمَا دَخَلَ عَلَيْهَا زَكَرِيَّا الْمِحْرَابَ وَجَدَ عِندَهَا رِزْقًا ۖ قَالَ يَا مَرْيَمُ أَنَّىٰ لَكِ هَٰذَا ۖ قَالَتْ هُوَ مِنْ عِندِ اللَّهِ ۖ إِنَّ اللَّهَ يَرْزُقُ مَن يَشَاءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ [٣:٣٧]
অতঃপর তাঁর পালনকর্তা তাঁকে উত্তম ভাবে গ্রহণ করে নিলেন এবং তাঁকে প্রবৃদ্ধি দান করলেন-অত্যন্ত সুন্দর প্রবৃদ্ধি। আর তাঁকে যাকারিয়ার তত্ত্বাবধানে সমর্পন করলেন। যখনই যাকারিয়া মেহরাবের মধ্যে তার কছে আসতেন তখনই কিছু খাবার দেখতে পেতেন। জিজ্ঞেস করতেন “মারইয়াম! কোথা থেকে এসব তোমার কাছে এলো?” তিনি বলতেন, “এসব আল্লাহর নিকট থেকে আসে। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বেহিসাব রিযিক দান করেন।” {সূরা আলে ইমরান-৩৭}
★ এমনিভাবে সুলাইমান আঃ এর জমানায় মুহুর্তের মাঝে ইয়ামান থেকে আসিফ বিন বারখিয়া নামক ব্যক্তির রানী বিলকিসের সিংহাসন নিয়ে আসাও ওলীদের কারামত সত্য হবার প্রমাণ। কারণ আসিফ বিন বারখিয়া কোন নবী ছিল না।
قَالَ الَّذِي عِندَهُ عِلْمٌ مِّنَ الْكِتَابِ أَنَا آتِيكَ بِهِ قَبْلَ أَن يَرْتَدَّ إِلَيْكَ طَرْفُكَ ۚ فَلَمَّا رَآهُ مُسْتَقِرًّا عِندَهُ قَالَ هَٰذَا مِن فَضْلِ رَبِّي لِيَبْلُوَنِي أَأَشْكُرُ أَمْ أَكْفُرُ ۖ وَمَن شَكَرَ فَإِنَّمَا يَشْكُرُ لِنَفْسِهِ ۖ وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ رَبِّي غَنِيٌّ كَرِيمٌ [٢٧:٤٠]
কিতাবের জ্ঞান যার ছিল, সে বলল, আপনার দিকে আপনার চোখের পলক ফেলার পূর্বেই আমি তা আপনাকে এনে দেব। অতঃপর সুলায়মান যখন তা সামনে রক্ষিত দেখলেন, তখন বললেন এটা আমার পালনকর্তার অনুগ্রহ, যাতে তিনি আমাকে পরীক্ষা করেন যে, আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, না অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, সে নিজের উপকারের জন্যেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং যে অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সে জানুক যে, আমার পালনকর্তা অভাবমুক্ত কৃপাশীল। {সুরা নামল-৩৭}
★★★ ওলীরা কি ওফাত বরন করার পর জীবিত নাকি মৃত ? সে সম্পর্কে আল্লাহ বলেন :
★ আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন:-
وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا ۚبَلْ أَحْيَاءٌ عِندَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ
যারা আল্লাহ্ পাকের রাস্তায় শহীদ হয়েছেন তাদের কে তুমি মৃত মনে করো
না বরং তারা তাঁদের নিজেদের রব এর নিকট জীবিত ও রিজিক প্রাপ্ত।"(সুরা আলইমরান ১৬৯)
★ আরো ইরশাদ করেন :
وَلاَ تَقُولُواْ لِمَنْ يُقْتَلُ فِي سَبيلِ اللَّهِ أَمْوَاتٌ بَلْ أَحْيَاء وَلَكِن لاَّ تَشْعُرُونَ (سورة البقرة-154
"আল্লাহর পথে যারা শহীদ হয় তাদের তোমরা মৃত বল না। বরং তারা জীবিত। তবেতা তোমরা উপলব্ধি করতে পারো না।"
(সূরা বাকারা-১৫৪)
★ 2:154,3:169 আয়াত থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় যে,
শহীদগণ কবরে জীবিত। আর এটা বিশ্লেষণ করে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, নবীগণও কবরে জীবিত। কেননা নবীগণের মর্যাদা শহীদদের তুলনায় অনেক উর্দ্ধে। সুতরাং শহীদগণ যদি কবরে জীবিত থাকেন,নবীগণ ও কবরে জীবিত । এটা ইমাম তিরমিযী(র) ও ইমাম বাইহাকী(র) সহীহ হাদিস দারা প্রমাণ করেছেন।
(Nayl al-Awtar, Volume 003, Page No. 82)(Fath al-Bari>sarhe bukhari, Volume 006: Page No. 379)
Note : ওলীগন আল্লাহর রাস্তায় সারা জীবন কাটায় তাই তাদেরও শহিদ বলা যায় । অপরদিকে তারা কোন কোন ক্ষেত্রে শহিদের চেয়েও মর্যাদাবান। যেখানে দ্বীনের একজন প্রকৃত আলিমকেও শহিদের মর্যাদার সাথে তুলনা হয়েছে।
★ আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে তারাই তাদের পালনকর্তার কাছে সিদ্দীক ও শহীদ বলে বিবেচিত। তাদের জন্যে রয়েছে পুরস্কার ও জ্যোতি।
(সূরা আল হাদীদ: ১৯)
★ “এবং যারা আল্লাহর পথে গমন করেছে এবং পরে নিহত হয়েছে অথবা (স্বাভাবিক) মৃত্যুবরণ করেছে তাদেরকে আল্লাহতালা অবশ্যই উৎকৃষ্ট জীবিকা দান করবে এবং তিনিইতো (আল্লাহতালা) সর্বোৎকৃষ্ট জীবিকা দাতা। তিনি তাদেরকে (পরকালে) অবশ্যই এমন জায়গায় স্থান দেবেন যা তাঁরা পছন্দ করবে এবং আল্লাহতো সম্যক প্রজ্ঞাময়, পরম সহনশীল”। (সুরা হাজ্জ্ব, আয়াত: ৫৮-৫৯)
★ ওলী-আল্লাহগণের বিরোধিতাকারীদের হুশিয়ারী দিয়ে হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ সাবধান করে দিয়েছেন।
- ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﻗَﺎﻝَ ، ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻗَﺎﻝَ ﻣَﻦْ ﻋَﺎﺩَﻯ ﻟِﻲ ﻭَﻟِﻴًّﺎ ﻓَﻘَﺪْ
ﺁﺫَﻧْﺘُﻪُ ﺑِﺎﻟْﺤَﺮْﺏِ ﻭَﻣَﺎ ﺗَﻘَﺮَّﺏَ ﺇِﻟَﻲَّ ﻋَﺒْﺪِﻱ ﺑِﺸَﻲْﺀٍ ﺃَﺣَﺐَّ ﺇِﻟَﻲَّ ﻣِﻤَّﺎ
ﺍﻓْﺘَﺮَﺿْﺖُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﻣَﺎ ﻳَﺰَﺍﻝُ ﻋَﺒْﺪِﻱ ﻳَﺘَﻘَﺮَّﺏُ ﺇِﻟَﻲَّ ﺑِﺎﻟﻨَّﻮَﺍﻓِﻞِ ﺣَﺘَّﻰ
ﺃُﺣِﺒَّﻪُ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺃَﺣْﺒَﺒْﺘُﻪُ ﻛُﻨْﺖُ ﺳَﻤْﻌَﻪُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳَﺴْﻤَﻊُ ﺑِﻪِ ﻭَﺑَﺼَﺮَﻩُ ﺍﻟَّﺬِﻱ
ﻳُﺒْﺼِﺮُ ﺑِﻪِ ﻭَﻳَﺪَﻩُ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻳَﺒْﻄِﺶُ ﺑِﻬَﺎ ﻭَﺭِﺟْﻠَﻪُ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻳَﻤْﺸِﻲ ﺑِﻬَﺎ ﻭَﺇِﻥْ
ﺳَﺄَﻟَﻨِﻲ ﻟَﺄُﻋْﻄِﻴَﻨَّﻪُ ﻭَﻟَﺌِﻦْ ﺍﺳْﺘَﻌَﺎﺫَﻧِﻲ ﻟَﺄُﻋِﻴﺬَﻧَّﻪُ ﻭَﻣَﺎ ﺗَﺮَﺩَّﺩْﺕُ ﻋَﻦْ
ﺷَﻲْﺀٍ ﺃَﻧَﺎ ﻓَﺎﻋِﻠُﻪُ ﺗَﺮَﺩُّﺩِﻱ ﻋَﻦْ ﻧَﻔْﺲِ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻦِ ﻳَﻜْﺮَﻩُ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕَ ﻭَﺃَﻧَﺎ
ﺃَﻛْﺮَﻩُ ﻣَﺴَﺎﺀَﺗَﻪُ .
আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
``` রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেনঃ যে ব্যক্তি আমার
অলীর সাথে শত্রুতা করে, আমি তার বিরোদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি ।
যেসব অধিক প্রিয় কাজ সমুহের দ্বারা বান্দা আমার অধিক নৈকট্য লাভ করে সেগুলো হল ফরজ কাজসমুহ।
অত:পর আমার বান্দা নফল কাজের মাধ্যমে আমার আরো এত নিকটবর্তী হতে থাকে যতক্ষন না আমি তাকে ভালবাসি ,
তখন আমি তার শ্রবন ইন্দ্রীয় হয়ে যাই
যা দ্বারা সে শোনে !
তার দর্শন ইন্দ্রীয় হয়ে যাই,
যা দ্বারা সে দেখে !
তার হাত হয়ে যাই,
যা দ্বারা সে ধরে এবং
তার পা হয়ে যাই,
যা দিয়ে সে চলাফেরা করে !
যদি সে আমার কাছে কিছু প্রর্থনা করে,
আমি তাকে তাই দেই।
যদি সে আমার নিকট আশ্রয় কামনা করে,
তাহলে আমি তাকে আশ্রয় দেই।
আমি কোনকিছু করার ব্যপারে দিধ্যাবোধ করি না,
যতটা না মুমিনের রুহ কবজের (নেয়ার) ব্যপারে করি এজন্য যে
সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তাকে অসন্তুষ্ট করতে অপছন্দ করি।
Reference :
★ বুখারী শরিফঃ ৬৫০২
★ মেশকাত শরীফ-১৯৭ পৃষ্ঠা
★ হযরত ইবনে আব্বাস থেকে বর্নিত,
তিনি বলেন,
আল্লাহ তায়ালা যখন হযরত মূছা আঃ ও হযরত
হারুন আঃ কে ফেরাউনের নিকট পাঠায় , তখন
আল্লাহ তায়ালা তাদেরঁকে বলেন,
ফেরাউনের দুনিয়ার সম্মান ও শান শওকত যেন তোমাদেরকে
অবাগ না করে, খেয়াল রাখ এইসব জিনিষের প্রতি তোমাদের দৃষ্টি যাতে না যায়, এইসব কিছু দুনিয়াতে সুখ ও আরাম আয়েশের অলংকার মাত্র, আমি (আল্লাহ) যদি তোমাদেরকে দুনিয়ার আরাম আয়েশ, সুখ- শান্তি , ও প্রাচুয্যের বালা খানায় রাখতে
ইচ্ছা পোষন করতাম তবে ফেরাউন তোমাদের বালা খানার
সৌন্দয্য দেখে নিবাক হয়ে যেত, কিন্তু আমি তোমারা দুজনকে
ইহা থেকে বাচিয়েঁ রেখেছি। কেননা আমি আমার বন্ধুদের সাথে
এই রকমই করি, আগেও আমার ওলিদের বা বন্ধুদের জন্য
আমি এই রকম ( তোমরা যে অবস্থায়) অবস্থা পছন্দ করেছি,
আমি (আল্লাহ) তাদেরকে (ওলিদের) দুনিয়ার আরাম আয়েশ,
সুখ- শান্তি , ও প্রাচুয্যের বালা খানা থেকে এমনভাবে দূরে
রেখেছি রাখাল তার ছাগল গুলোকে বিপদজনক শস্য মাঠ
থেকে দূরে রাখে, দয়াময় রাখাল তার উঠ গুলোকে নিরাপদে
রাখে, আমার ওলীদের সাথে আমার এই বিনিময় এই কারনে
যে আমার কাছে তাদের কোন গুরুত্ব নেই তা নয়, বরংচ পরকালে
তারা যেন আমার কাছ থেকে পরিপূন সম্মান ও অসীম
নেয়ামত অর্জন করে নেয়, দুনিয়ার এই অবস্থা, মর্যাদা ও
প্রাচুর্য পরকালের তুলনায় কিছু না। দুনিয়াতে মোরাকাবা ও
মোশাহেদা বা আমাকে (আল্লাহকে) পাওয়ার ধ্যান ই হল আমার ওলিদের জন্য প্রাচুর্য্য , তাদের পোশাক বা চেনার চিহ্ন হচ্ছে
তারা শান্তিকামি ও মাহবুবের ধ্যানে মগ্ন। তাদের চেহেরার উপর
আল্লাহর ইবাদতে মশগুলের কারনে সিজদার চিহ্ন পরিলক্ষিত হয়, নিঃসন্দেহে তারাই হচ্ছে আমার সত্যিকারের বন্ধু।
(হে মুমিন গন) যখন তোমরা তাদের সাক্ষাত পাবে , তাদের
প্রতি সর্বোচ্চ তাজিমের (সম্মানের) সাথে সাক্ষাত কর,
তোমার জিব্বাহ ও অন্তরকে তাদের ক্ষেত্রে সাবধান রাখ।
এবং জেনে রাখ ( হে মানব সম্প্রদায়) যে কেও আমার ওলিকে ঘৃনা করল অথবা আমার ওলির সম্মানকে হালকা মনে করল
সে যেন আমার সাথে যুদ্ধ ঘোষনা করল !!
** সে যুদ্ধের জন্য আমার সামনে এগিয়ে আসল,
আমি (আল্লাহ) আমার বন্ধুদের সাহায্যের ক্ষেত্রে
খুব দ্রুতগামি !
** যে ব্যক্তি আমাকে যুদ্ধের জন্য আহবান করল, সে কি মনে করে
সে আমার সামনে যুদ্ধের জন্যে দাডাঁতে পারবে ?
** যে ব্যক্তি আমাকে যুদ্ধের জন্য আহবান করল সে কি মনে করে সে আমাকে দুশমনির খাতিরে অক্ষম করে দেবে ?
** যে ব্যক্তি আমাকে যুদ্ধের জন্য আহবান করল সেকি মনে করে
সে আমার কাছ থেকে পালিয়ে যাবে ?
** যে ব্যক্তি আমাকে যুদ্ধের জন্য আহবান করল সেকি মনে করে
সে আমাকে পরাজিত করবে? কক্ষনো নয়।
আমি আমার বন্ধুদেরকে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জগতে পরিপুর্ন সফলতা দান কারি, তাদেরকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে আমি নিজেই সাহায্যকারী।
Reference :
From : হাফেজ আবু নাঈম আহমদ ইবনে আবদুল্লাহ আল-ইসফাহানী:
Book : “হিলয়াতুল আউলিয়া ওয়া তাবকাতুল আছফিয়াহ”
Volume : ১খন্ড, পৃষ্টা নং- ১১-১২
★★★ ওলীগনের শাফায়াত সম্পর্কে :
★ “যে দয়াময় আ̂ল্লাহর কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছ, সে ব্যাতীত আর কেউ সুপারিশ করার অধিকারী হবে না”। [সুরা ১৯ মারঈয়াম: ৮৭]
(I) আল্লাহর একজন বিশিষ্ট ওলী ছিলেন ওয়াইছ করনী (রহ)। তিনি ছিলেন একজন তাবেয়ী। তার সম্পর্কে কিছু হাদিস :
♦হযরত ওমর (রা.) বলিয়াছেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺকে বলিতে শুনিয়াছি, নিশ্চয়ই , অনুগতদিগের (খায়রুত্তাবেয়ীন) মধ্যে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি যাহার নাম উয়ায়ছ। তাহার মা আছে এবং তাহার শরীরে একটি শ্বেত চিহ্ন আছে। তোমরা (তাহার সংগে দেখা করিয়া) অনুরোধ করিবে যেন সে তোমাদের ক্ষমার জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে।
(মুসলিম শরীফ ৬২৬০/ মিশকাত ৬০০৬)
♦হযরত উমর বিন খাত্তাব হইতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূলﷺ বলিয়াছেন, “নিশ্চয়ই ইয়েমেন হইতে তোমাদের নিকট এক লোক আসিবে যে উয়ায়ছ নামে অবিহীত। সে তাহার মাতার জন্য ইয়েমেন ত্যাগ করিতে পারে না। তাহার শরীরে শ্বেত রোগ ছিল। সে আল্লাকে ডাকিল, তাহার শ্বেত রোগ এক দিরহাম পর্যন্ত ব্যতীত দূর হইয়া গেল। তোমাদের মধ্যে যে কেহ তাহার সাক্ষাত পাও তাহাকে অনুরোধ করিবে যেন সে তোমাদের মাগফিরাতের জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে ।
(মুসলিম শরীফ ৬২৫৯/ মিশকাত শরীফ ৬০০৬)
♦রাসূলল্লাহ হযরত ওমরকে বলিলেন, উয়ায়ছ ইবনে আমর মুজাহিদগণের সাহায্যার্থে আগমনকারী ইয়েমেনবাসীদের সহিত তোমাদের নিকট আসিবে। সে মুজার গোত্রের কারণ শাখার অন্তর্ভুক্ত। তাহার ধবল রোগ ছিল। (আল্লাহর নিকট দোয়া করিবার কারণে) এক দিরহাম পরিমান স্থান ব্যতীত সে উহা হইতে আরোগ্য লাভ করে। তাহার মাতা আছে। সে তাহার মাতার সহিত সদ্ব্যবহার করে। সে আল্লাহর নিকট শপথ করিলে, আল্লাহ তাহা পূরণ করে। তাহার দ্বারা তোমাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা করাইতে সক্ষম হইলে তাহা করাইবে।
(মিশকাত শরীফ)
♦ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের
এক বিশেষ ওলী আল্লাহর সুপারিশ
করা সম্পর্কে ইরশাদ করেন,
"হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবুল
জাদয়া রদ্বিয়াল্লাহু আনহু
হতে বর্নিত, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে বলতে শুনেছি, আমার উম্মতের
এক ব্যক্তির সুপারিশে বনী তামীম
গোত্রের লোক সংখ্যা হতেও অধিক
লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
[তথ্যসূত্রঃ- সুনানে তিরমিযী শরীফ,
সুনানে ইবনে মাজাহ, মিশকাত শরীফ
৫৩৬১, সুনানে দারেমী]
নোট : এই হাদিসটি অনেক উলামায়ে কেরাম ""আশিকে রাসুল (সা) বিখ্যাত তাবেযী ওয়াইস করনী (রহ) এর কথা বলে উল্লেখ করেছেন। নিচে বর্নিত হয়েছেন।
♦রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন," হযরত উয়ায়ছ করণীর শাফায়াতে রাবী ও মুজার গোত্রের মেষের পশম সমপরিমান লোক বেহেশতে যাইবে।
(মিশকাত শরীফ)
♦হযরত আবি মাসউদ-উল-আনসারী হতে বর্নিতঃ রাসূল ﷺ বলেছেন,
“আমার উম্মতের ভিতর এক ব্যক্তি, যাহাকে লোকে উয়ায়েছ ইবনে আবদুল্লাহ্ করণী বলে, তাহার প্রার্থনায় অবশ্যই রাবিয়া ও মুজার এই দুই গোত্রের বকরীর পশমের সংখ্যক গুনাহ্গার উম্মতের গুনাহ্ মাফ হইবে।”
(শওয়াহেদুন-নবুওয়াত/মছনবী রহীম)
(II) ♦ হযরত আনাস (রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) থেকে বর্ণিত, হযরত মুহাম্মাদ মুস্তাফা (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) ফরমায়েছেন,
ﻳﺸﻔﻊ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﺛﻼﺛﺔ ﺍﻻﻧﺒﻴﺎﺀ ﺛﻢ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ
ﺛﻢ ﺍﻟﺸﻬﺪﺍﺀ
অর্থ: কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণীর
লোক সুপারিশ করবে।
(১) নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম ।
(২) উলামায়ে কিরাম (বা আউলিয়া কেরাম)
রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
(৩) শহীদ গন।"
[সুনানে ইবনে মাজাহ
শরীফ, মিশকাত শরীফ ৫৩৭০]
নোট: পুর্ববর্তী হক্কানী উলামায়ে কেরাম (রহ) গন সব আল্লাহর ওলী ছিলেন।
আর ওলীগনের মর্যাদা আর ক্ষমতা উলামায়ে কেরাম থেকে অনেক বেশি।
♦এই হাদিসটার সনদ দিতে গিয়ে মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি (রহ) বলেন," হাশরের মাঠে পিয়ারা নবীর নির্দেশে নবীগণ তাদের উম্মতদের, আউলিয়াগণ তাদের মুরিদদের এবং শহীদগণ তাদের মা-বাবার জন্য সুপারিশ করবে।
(মসনদে গোয়ারভী শরীফ, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৩৬২)
♦অপর হাদিসে আছে :-
ﻭ ﺍﺫﺍ ﺭﺃﻭﺍ ﺍﻧﻬﻢ ﻗﺪ ﻧﺠﻮﺍ ﻓﻲ ﺍﺧﻮﺍﻧﻬﻢ ﻳﻘﻮﻟﻮﻥ ﺭﺑﻨﺎ ﺍﺧﻮﺍﻧﻨﺎ ﻛﺎﻧﻮﺍ ﻳﺼﻠﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻭﻳﺼﻠﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻭ ﻳﺼﻮﻣﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻭ ﻳﻌﻤﻠﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻓﻴﻘﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻲ ﺍﺫﻫﺒﻮﺍ ﻓﻤﻦ ﻭﺟﺪﺗﻢ ﻓﻲ ﻗﻠﺒﻪ ﻣﺜﻘﺎﻝ ﺩﻳﻨﺎﺭ ﻣﻦ ﺍﻳﻤﺎﻥ ﻓﺎﺣﺮﺣﻮﻩ ﻭ ﻳﺤﺮﻡ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻮﺭﻫﻢ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﻓﻴﺎﺗﻮﻧﻬﻢ ﻭﺑﻌﻀﻬﻢ ﻗﺪ ﻏﺎﺏ ﻓﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﺍﻟﻲ ﻗﺪﻣﻪ ﻭ ﺍﻟﻲ ﺍﻧﺼﺎﻑ ﺳﺎﻗﻪ ﻓﻴﺨﺮﺟﻮﻥ ﻣﻦ ﻋﺮﻓﻮﺍ
যখন আল্লাহর অলীগণ দেখবে যে তারা মুক্তি পেয়ে গেল , তখন তাদের মুমীন ভাইদের জন্য তারা আল্লাহর কাছে আবেদন করবে "হে আমার প্রতিপালক এরা আমাদের ভাই, যাদেরকে তুমি জাহান্নামে নিক্ষেপ করেছ তারা আমাদের সাথে নামাজ পড়ত , আমাদের সাথে রোজা রাখত এবং আমাদের সাথে সত্কাজ করত "। তখন আল্লাহ বলবেন "যাদের অন্তরে শুধুমাত্র এক দিনার ওজন পরিমাণ ঈমান পাবে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে আস । তাদের মুখমন্ডল তথা আকৃতিকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দেওয়া হয়েছে " । অতঃপর তারা (অলীগণ) সেখানে জাহান্নামীদের নিকট যাবেন । এসে দেখবেন কেউ কেউ পা পর্যন্ত কেউ পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত আগুনে ডুবে আছে । এর মধ্যে যাদের তারা চিনবে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে আসবে ।
(সহীহ বুখারী , খন্ড ২ পৃষ্ঠা ১১০৭ । হাদীস নং ৭০০১)
♦ সহিহ হাদিসে বর্নিত :-
ﻓﻮﺍﻟﺬﻱ ﻧﻔﺴﻲ ﺑﻴﺪﻩ ﻣﺎ ﻣﻮﻛﻢ ﻣﻦ ﺍﺣﺪ ﺑﺎﺷﺪ ﻣﻨﺎﺷﺪﺓ ﻟﻠﻪ ﻓﻲ ﺍﺳﺘﻘﺼﺎﺀ ﺍﻟﺤﻖ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﻮﻣﻨﻴﻦ ﻟﻠﻪ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﻻﺧﻮﺍﻧﻬﻢ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻓﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﻳﻘﻮﻟﻮﻥ ﺭﺑﻨﺎ ﻛﺎﻧﻮﺍ ﻳﺼﻮﻣﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻭ ﻳﺼﻠﻮﻥ ﻭ ﻳﺤﺠﻮﻥ ﻓﻴﻘﺎﻝ ﻟﻬﻢ ﺍﺣﺮﺟﻮﺍ ﻣﻦ ﻋﺮﻓﺘﻢ
আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণ (ওলীগন) তাদের ঐ সমস্ত মুমীন ভাইদের জন্য শুপারিস করবে যারা জাহান্নামে পড়ে থাকবে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে ছাড়িয়ে আনার জন্য আল্লাহর দরবারে এমনভাবে আবদারের পর আবদার করতে থাকবে, যে রকম আবদার কোন ব্যক্তি তার নিজ হক আদায়ের জন্যও সাধারণত করে না । এবং তারা আল্লাহর দরবারে আবেদন করবেন হে আমাদের রব এ সমস্ত লোক আমাদের সাথে রোজা রাখত, নামাজ পড়ত, হজ্ব করত ।
(সহীহ মুসলিম । খন্ড ১
পৃষ্ঠা ১০৩ হাদিস ১৮৩)
♦আরো বর্নিত আছে :-
ﻋﻦ ﺍﻧﺲ ﺍﺑﻲ ﺳﻌﻴﺪ ﺭﺽ ﺍﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻌﻢ ﻗﺎﻻﻥ ﻣﻦ ﺍﻣﺘﻲ ﻣﻦ ﻳﺸﻔﻊ ﻟﻠﻔﺌﺎﻡ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻭ ﻣﻨﻬﻢ ﻣﻦ ﻳﺸﻔﻊ ﻟﻠﻘﺒﻴﻠﺔ ﻭ ﻣﻨﻬﻢ ﻣﻦ ﻳﺸﻔﻊ ﻟﻠﻌﺼﺒﺔ ﻭ ﻣﻨﻬﻢ ﻣﻦ ﻳﺸﻔﻊ ﻟﻠﺮﺟﻞ ﺣﺘﻲ ﻳﺪﺧﻠﻮﺍ ﺍﻟﺠﻨﺔ
হযরত আবূ সাঈদ রঃ হতে বর্ণিত , রাসুল দঃ এরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু লোক আছেন যারা একটি বিরাট দল এর (বা তাদের সকল সমর্থক ও অনুসারীদের) জন্য সুপারিশ করবে । আর কিছু লোক আছেন যারা একটি দলের (বা আত্তীয় স্বজনদের) জন্য সুপারিশ করবে । আর কিছু লোক আছে যারা এক এক জনের জন্য সুপারিশ করবে । এভাবে তারা সকলেই জান্নাতে প্রবেশ করবে ।
[আল হাদিস, তিরমীযি খন্ড ২ পৃঃ ৬৭ , হাদিস ২৪৪০,
মিশকাত শরীফ ৫৩২৬]
- ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﻗَﺎﻝَ ، ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻗَﺎﻝَ ﻣَﻦْ ﻋَﺎﺩَﻯ ﻟِﻲ ﻭَﻟِﻴًّﺎ ﻓَﻘَﺪْ
ﺁﺫَﻧْﺘُﻪُ ﺑِﺎﻟْﺤَﺮْﺏِ ﻭَﻣَﺎ ﺗَﻘَﺮَّﺏَ ﺇِﻟَﻲَّ ﻋَﺒْﺪِﻱ ﺑِﺸَﻲْﺀٍ ﺃَﺣَﺐَّ ﺇِﻟَﻲَّ ﻣِﻤَّﺎ
ﺍﻓْﺘَﺮَﺿْﺖُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﻣَﺎ ﻳَﺰَﺍﻝُ ﻋَﺒْﺪِﻱ ﻳَﺘَﻘَﺮَّﺏُ ﺇِﻟَﻲَّ ﺑِﺎﻟﻨَّﻮَﺍﻓِﻞِ ﺣَﺘَّﻰ
ﺃُﺣِﺒَّﻪُ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺃَﺣْﺒَﺒْﺘُﻪُ ﻛُﻨْﺖُ ﺳَﻤْﻌَﻪُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳَﺴْﻤَﻊُ ﺑِﻪِ ﻭَﺑَﺼَﺮَﻩُ ﺍﻟَّﺬِﻱ
ﻳُﺒْﺼِﺮُ ﺑِﻪِ ﻭَﻳَﺪَﻩُ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻳَﺒْﻄِﺶُ ﺑِﻬَﺎ ﻭَﺭِﺟْﻠَﻪُ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻳَﻤْﺸِﻲ ﺑِﻬَﺎ ﻭَﺇِﻥْ
ﺳَﺄَﻟَﻨِﻲ ﻟَﺄُﻋْﻄِﻴَﻨَّﻪُ ﻭَﻟَﺌِﻦْ ﺍﺳْﺘَﻌَﺎﺫَﻧِﻲ ﻟَﺄُﻋِﻴﺬَﻧَّﻪُ ﻭَﻣَﺎ ﺗَﺮَﺩَّﺩْﺕُ ﻋَﻦْ
ﺷَﻲْﺀٍ ﺃَﻧَﺎ ﻓَﺎﻋِﻠُﻪُ ﺗَﺮَﺩُّﺩِﻱ ﻋَﻦْ ﻧَﻔْﺲِ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻦِ ﻳَﻜْﺮَﻩُ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕَ ﻭَﺃَﻧَﺎ
ﺃَﻛْﺮَﻩُ ﻣَﺴَﺎﺀَﺗَﻪُ .
আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
``` রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেনঃ যে ব্যক্তি আমার
অলীর সাথে শত্রুতা করে, আমি তার বিরোদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি ।
যেসব অধিক প্রিয় কাজ সমুহের দ্বারা বান্দা আমার অধিক নৈকট্য লাভ করে সেগুলো হল ফরজ কাজসমুহ।
অত:পর আমার বান্দা নফল কাজের মাধ্যমে আমার আরো এত নিকটবর্তী হতে থাকে যতক্ষন না আমি তাকে ভালবাসি ,
তখন আমি তার শ্রবন ইন্দ্রীয় হয়ে যাই
যা দ্বারা সে শোনে !
তার দর্শন ইন্দ্রীয় হয়ে যাই,
যা দ্বারা সে দেখে !
তার হাত হয়ে যাই,
যা দ্বারা সে ধরে এবং
তার পা হয়ে যাই,
যা দিয়ে সে চলাফেরা করে !
যদি সে আমার কাছে কিছু প্রর্থনা করে,
আমি তাকে তাই দেই।
যদি সে আমার নিকট আশ্রয় কামনা করে,
তাহলে আমি তাকে আশ্রয় দেই।
আমি কোনকিছু করার ব্যপারে দিধ্যাবোধ করি না,
যতটা না মুমিনের রুহ কবজের (নেয়ার) ব্যপারে করি এজন্য যে
সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তাকে অসন্তুষ্ট করতে অপছন্দ করি।
Reference :
★ বুখারী শরিফঃ ৬৫০২
★ মেশকাত শরীফ-১৯৭ পৃষ্ঠা
★ হযরত ইবনে আব্বাস থেকে বর্নিত,
তিনি বলেন,
আল্লাহ তায়ালা যখন হযরত মূছা আঃ ও হযরত
হারুন আঃ কে ফেরাউনের নিকট পাঠায় , তখন
আল্লাহ তায়ালা তাদেরঁকে বলেন,
ফেরাউনের দুনিয়ার সম্মান ও শান শওকত যেন তোমাদেরকে
অবাগ না করে, খেয়াল রাখ এইসব জিনিষের প্রতি তোমাদের দৃষ্টি যাতে না যায়, এইসব কিছু দুনিয়াতে সুখ ও আরাম আয়েশের অলংকার মাত্র, আমি (আল্লাহ) যদি তোমাদেরকে দুনিয়ার আরাম আয়েশ, সুখ- শান্তি , ও প্রাচুয্যের বালা খানায় রাখতে
ইচ্ছা পোষন করতাম তবে ফেরাউন তোমাদের বালা খানার
সৌন্দয্য দেখে নিবাক হয়ে যেত, কিন্তু আমি তোমারা দুজনকে
ইহা থেকে বাচিয়েঁ রেখেছি। কেননা আমি আমার বন্ধুদের সাথে
এই রকমই করি, আগেও আমার ওলিদের বা বন্ধুদের জন্য
আমি এই রকম ( তোমরা যে অবস্থায়) অবস্থা পছন্দ করেছি,
আমি (আল্লাহ) তাদেরকে (ওলিদের) দুনিয়ার আরাম আয়েশ,
সুখ- শান্তি , ও প্রাচুয্যের বালা খানা থেকে এমনভাবে দূরে
রেখেছি রাখাল তার ছাগল গুলোকে বিপদজনক শস্য মাঠ
থেকে দূরে রাখে, দয়াময় রাখাল তার উঠ গুলোকে নিরাপদে
রাখে, আমার ওলীদের সাথে আমার এই বিনিময় এই কারনে
যে আমার কাছে তাদের কোন গুরুত্ব নেই তা নয়, বরংচ পরকালে
তারা যেন আমার কাছ থেকে পরিপূন সম্মান ও অসীম
নেয়ামত অর্জন করে নেয়, দুনিয়ার এই অবস্থা, মর্যাদা ও
প্রাচুর্য পরকালের তুলনায় কিছু না। দুনিয়াতে মোরাকাবা ও
মোশাহেদা বা আমাকে (আল্লাহকে) পাওয়ার ধ্যান ই হল আমার ওলিদের জন্য প্রাচুর্য্য , তাদের পোশাক বা চেনার চিহ্ন হচ্ছে
তারা শান্তিকামি ও মাহবুবের ধ্যানে মগ্ন। তাদের চেহেরার উপর
আল্লাহর ইবাদতে মশগুলের কারনে সিজদার চিহ্ন পরিলক্ষিত হয়, নিঃসন্দেহে তারাই হচ্ছে আমার সত্যিকারের বন্ধু।
(হে মুমিন গন) যখন তোমরা তাদের সাক্ষাত পাবে , তাদের
প্রতি সর্বোচ্চ তাজিমের (সম্মানের) সাথে সাক্ষাত কর,
তোমার জিব্বাহ ও অন্তরকে তাদের ক্ষেত্রে সাবধান রাখ।
এবং জেনে রাখ ( হে মানব সম্প্রদায়) যে কেও আমার ওলিকে ঘৃনা করল অথবা আমার ওলির সম্মানকে হালকা মনে করল
সে যেন আমার সাথে যুদ্ধ ঘোষনা করল !!
** সে যুদ্ধের জন্য আমার সামনে এগিয়ে আসল,
আমি (আল্লাহ) আমার বন্ধুদের সাহায্যের ক্ষেত্রে
খুব দ্রুতগামি !
** যে ব্যক্তি আমাকে যুদ্ধের জন্য আহবান করল, সে কি মনে করে
সে আমার সামনে যুদ্ধের জন্যে দাডাঁতে পারবে ?
** যে ব্যক্তি আমাকে যুদ্ধের জন্য আহবান করল সে কি মনে করে সে আমাকে দুশমনির খাতিরে অক্ষম করে দেবে ?
** যে ব্যক্তি আমাকে যুদ্ধের জন্য আহবান করল সেকি মনে করে
সে আমার কাছ থেকে পালিয়ে যাবে ?
** যে ব্যক্তি আমাকে যুদ্ধের জন্য আহবান করল সেকি মনে করে
সে আমাকে পরাজিত করবে? কক্ষনো নয়।
আমি আমার বন্ধুদেরকে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জগতে পরিপুর্ন সফলতা দান কারি, তাদেরকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে আমি নিজেই সাহায্যকারী।
Reference :
From : হাফেজ আবু নাঈম আহমদ ইবনে আবদুল্লাহ আল-ইসফাহানী:
Book : “হিলয়াতুল আউলিয়া ওয়া তাবকাতুল আছফিয়াহ”
Volume : ১খন্ড, পৃষ্টা নং- ১১-১২
★★★ ওলীগনের শাফায়াত সম্পর্কে :
★ “যে দয়াময় আ̂ল্লাহর কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছ, সে ব্যাতীত আর কেউ সুপারিশ করার অধিকারী হবে না”। [সুরা ১৯ মারঈয়াম: ৮৭]
(I) আল্লাহর একজন বিশিষ্ট ওলী ছিলেন ওয়াইছ করনী (রহ)। তিনি ছিলেন একজন তাবেয়ী। তার সম্পর্কে কিছু হাদিস :
♦হযরত ওমর (রা.) বলিয়াছেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺকে বলিতে শুনিয়াছি, নিশ্চয়ই , অনুগতদিগের (খায়রুত্তাবেয়ীন) মধ্যে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি যাহার নাম উয়ায়ছ। তাহার মা আছে এবং তাহার শরীরে একটি শ্বেত চিহ্ন আছে। তোমরা (তাহার সংগে দেখা করিয়া) অনুরোধ করিবে যেন সে তোমাদের ক্ষমার জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে।
(মুসলিম শরীফ ৬২৬০/ মিশকাত ৬০০৬)
♦হযরত উমর বিন খাত্তাব হইতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূলﷺ বলিয়াছেন, “নিশ্চয়ই ইয়েমেন হইতে তোমাদের নিকট এক লোক আসিবে যে উয়ায়ছ নামে অবিহীত। সে তাহার মাতার জন্য ইয়েমেন ত্যাগ করিতে পারে না। তাহার শরীরে শ্বেত রোগ ছিল। সে আল্লাকে ডাকিল, তাহার শ্বেত রোগ এক দিরহাম পর্যন্ত ব্যতীত দূর হইয়া গেল। তোমাদের মধ্যে যে কেহ তাহার সাক্ষাত পাও তাহাকে অনুরোধ করিবে যেন সে তোমাদের মাগফিরাতের জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে ।
(মুসলিম শরীফ ৬২৫৯/ মিশকাত শরীফ ৬০০৬)
♦রাসূলল্লাহ হযরত ওমরকে বলিলেন, উয়ায়ছ ইবনে আমর মুজাহিদগণের সাহায্যার্থে আগমনকারী ইয়েমেনবাসীদের সহিত তোমাদের নিকট আসিবে। সে মুজার গোত্রের কারণ শাখার অন্তর্ভুক্ত। তাহার ধবল রোগ ছিল। (আল্লাহর নিকট দোয়া করিবার কারণে) এক দিরহাম পরিমান স্থান ব্যতীত সে উহা হইতে আরোগ্য লাভ করে। তাহার মাতা আছে। সে তাহার মাতার সহিত সদ্ব্যবহার করে। সে আল্লাহর নিকট শপথ করিলে, আল্লাহ তাহা পূরণ করে। তাহার দ্বারা তোমাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা করাইতে সক্ষম হইলে তাহা করাইবে।
(মিশকাত শরীফ)
♦ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের
এক বিশেষ ওলী আল্লাহর সুপারিশ
করা সম্পর্কে ইরশাদ করেন,
"হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবুল
জাদয়া রদ্বিয়াল্লাহু আনহু
হতে বর্নিত, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে বলতে শুনেছি, আমার উম্মতের
এক ব্যক্তির সুপারিশে বনী তামীম
গোত্রের লোক সংখ্যা হতেও অধিক
লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
[তথ্যসূত্রঃ- সুনানে তিরমিযী শরীফ,
সুনানে ইবনে মাজাহ, মিশকাত শরীফ
৫৩৬১, সুনানে দারেমী]
নোট : এই হাদিসটি অনেক উলামায়ে কেরাম ""আশিকে রাসুল (সা) বিখ্যাত তাবেযী ওয়াইস করনী (রহ) এর কথা বলে উল্লেখ করেছেন। নিচে বর্নিত হয়েছেন।
♦রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন," হযরত উয়ায়ছ করণীর শাফায়াতে রাবী ও মুজার গোত্রের মেষের পশম সমপরিমান লোক বেহেশতে যাইবে।
(মিশকাত শরীফ)
♦হযরত আবি মাসউদ-উল-আনসারী হতে বর্নিতঃ রাসূল ﷺ বলেছেন,
“আমার উম্মতের ভিতর এক ব্যক্তি, যাহাকে লোকে উয়ায়েছ ইবনে আবদুল্লাহ্ করণী বলে, তাহার প্রার্থনায় অবশ্যই রাবিয়া ও মুজার এই দুই গোত্রের বকরীর পশমের সংখ্যক গুনাহ্গার উম্মতের গুনাহ্ মাফ হইবে।”
(শওয়াহেদুন-নবুওয়াত/মছনবী রহীম)
(II) ♦ হযরত আনাস (রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) থেকে বর্ণিত, হযরত মুহাম্মাদ মুস্তাফা (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) ফরমায়েছেন,
ﻳﺸﻔﻊ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﺛﻼﺛﺔ ﺍﻻﻧﺒﻴﺎﺀ ﺛﻢ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ
ﺛﻢ ﺍﻟﺸﻬﺪﺍﺀ
অর্থ: কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণীর
লোক সুপারিশ করবে।
(১) নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম ।
(২) উলামায়ে কিরাম (বা আউলিয়া কেরাম)
রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
(৩) শহীদ গন।"
[সুনানে ইবনে মাজাহ
শরীফ, মিশকাত শরীফ ৫৩৭০]
নোট: পুর্ববর্তী হক্কানী উলামায়ে কেরাম (রহ) গন সব আল্লাহর ওলী ছিলেন।
আর ওলীগনের মর্যাদা আর ক্ষমতা উলামায়ে কেরাম থেকে অনেক বেশি।
♦এই হাদিসটার সনদ দিতে গিয়ে মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি (রহ) বলেন," হাশরের মাঠে পিয়ারা নবীর নির্দেশে নবীগণ তাদের উম্মতদের, আউলিয়াগণ তাদের মুরিদদের এবং শহীদগণ তাদের মা-বাবার জন্য সুপারিশ করবে।
(মসনদে গোয়ারভী শরীফ, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৩৬২)
♦অপর হাদিসে আছে :-
ﻭ ﺍﺫﺍ ﺭﺃﻭﺍ ﺍﻧﻬﻢ ﻗﺪ ﻧﺠﻮﺍ ﻓﻲ ﺍﺧﻮﺍﻧﻬﻢ ﻳﻘﻮﻟﻮﻥ ﺭﺑﻨﺎ ﺍﺧﻮﺍﻧﻨﺎ ﻛﺎﻧﻮﺍ ﻳﺼﻠﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻭﻳﺼﻠﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻭ ﻳﺼﻮﻣﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻭ ﻳﻌﻤﻠﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻓﻴﻘﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻲ ﺍﺫﻫﺒﻮﺍ ﻓﻤﻦ ﻭﺟﺪﺗﻢ ﻓﻲ ﻗﻠﺒﻪ ﻣﺜﻘﺎﻝ ﺩﻳﻨﺎﺭ ﻣﻦ ﺍﻳﻤﺎﻥ ﻓﺎﺣﺮﺣﻮﻩ ﻭ ﻳﺤﺮﻡ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻮﺭﻫﻢ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﻓﻴﺎﺗﻮﻧﻬﻢ ﻭﺑﻌﻀﻬﻢ ﻗﺪ ﻏﺎﺏ ﻓﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﺍﻟﻲ ﻗﺪﻣﻪ ﻭ ﺍﻟﻲ ﺍﻧﺼﺎﻑ ﺳﺎﻗﻪ ﻓﻴﺨﺮﺟﻮﻥ ﻣﻦ ﻋﺮﻓﻮﺍ
যখন আল্লাহর অলীগণ দেখবে যে তারা মুক্তি পেয়ে গেল , তখন তাদের মুমীন ভাইদের জন্য তারা আল্লাহর কাছে আবেদন করবে "হে আমার প্রতিপালক এরা আমাদের ভাই, যাদেরকে তুমি জাহান্নামে নিক্ষেপ করেছ তারা আমাদের সাথে নামাজ পড়ত , আমাদের সাথে রোজা রাখত এবং আমাদের সাথে সত্কাজ করত "। তখন আল্লাহ বলবেন "যাদের অন্তরে শুধুমাত্র এক দিনার ওজন পরিমাণ ঈমান পাবে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে আস । তাদের মুখমন্ডল তথা আকৃতিকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দেওয়া হয়েছে " । অতঃপর তারা (অলীগণ) সেখানে জাহান্নামীদের নিকট যাবেন । এসে দেখবেন কেউ কেউ পা পর্যন্ত কেউ পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত আগুনে ডুবে আছে । এর মধ্যে যাদের তারা চিনবে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে আসবে ।
(সহীহ বুখারী , খন্ড ২ পৃষ্ঠা ১১০৭ । হাদীস নং ৭০০১)
♦ সহিহ হাদিসে বর্নিত :-
ﻓﻮﺍﻟﺬﻱ ﻧﻔﺴﻲ ﺑﻴﺪﻩ ﻣﺎ ﻣﻮﻛﻢ ﻣﻦ ﺍﺣﺪ ﺑﺎﺷﺪ ﻣﻨﺎﺷﺪﺓ ﻟﻠﻪ ﻓﻲ ﺍﺳﺘﻘﺼﺎﺀ ﺍﻟﺤﻖ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﻮﻣﻨﻴﻦ ﻟﻠﻪ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﻻﺧﻮﺍﻧﻬﻢ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻓﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﻳﻘﻮﻟﻮﻥ ﺭﺑﻨﺎ ﻛﺎﻧﻮﺍ ﻳﺼﻮﻣﻮﻥ ﻣﻌﻨﺎ ﻭ ﻳﺼﻠﻮﻥ ﻭ ﻳﺤﺠﻮﻥ ﻓﻴﻘﺎﻝ ﻟﻬﻢ ﺍﺣﺮﺟﻮﺍ ﻣﻦ ﻋﺮﻓﺘﻢ
আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণ (ওলীগন) তাদের ঐ সমস্ত মুমীন ভাইদের জন্য শুপারিস করবে যারা জাহান্নামে পড়ে থাকবে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে ছাড়িয়ে আনার জন্য আল্লাহর দরবারে এমনভাবে আবদারের পর আবদার করতে থাকবে, যে রকম আবদার কোন ব্যক্তি তার নিজ হক আদায়ের জন্যও সাধারণত করে না । এবং তারা আল্লাহর দরবারে আবেদন করবেন হে আমাদের রব এ সমস্ত লোক আমাদের সাথে রোজা রাখত, নামাজ পড়ত, হজ্ব করত ।
(সহীহ মুসলিম । খন্ড ১
পৃষ্ঠা ১০৩ হাদিস ১৮৩)
♦আরো বর্নিত আছে :-
ﻋﻦ ﺍﻧﺲ ﺍﺑﻲ ﺳﻌﻴﺪ ﺭﺽ ﺍﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻌﻢ ﻗﺎﻻﻥ ﻣﻦ ﺍﻣﺘﻲ ﻣﻦ ﻳﺸﻔﻊ ﻟﻠﻔﺌﺎﻡ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻭ ﻣﻨﻬﻢ ﻣﻦ ﻳﺸﻔﻊ ﻟﻠﻘﺒﻴﻠﺔ ﻭ ﻣﻨﻬﻢ ﻣﻦ ﻳﺸﻔﻊ ﻟﻠﻌﺼﺒﺔ ﻭ ﻣﻨﻬﻢ ﻣﻦ ﻳﺸﻔﻊ ﻟﻠﺮﺟﻞ ﺣﺘﻲ ﻳﺪﺧﻠﻮﺍ ﺍﻟﺠﻨﺔ
হযরত আবূ সাঈদ রঃ হতে বর্ণিত , রাসুল দঃ এরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু লোক আছেন যারা একটি বিরাট দল এর (বা তাদের সকল সমর্থক ও অনুসারীদের) জন্য সুপারিশ করবে । আর কিছু লোক আছেন যারা একটি দলের (বা আত্তীয় স্বজনদের) জন্য সুপারিশ করবে । আর কিছু লোক আছে যারা এক এক জনের জন্য সুপারিশ করবে । এভাবে তারা সকলেই জান্নাতে প্রবেশ করবে ।
[আল হাদিস, তিরমীযি খন্ড ২ পৃঃ ৬৭ , হাদিস ২৪৪০,
মিশকাত শরীফ ৫৩২৬]
★★★ ওলীর দরবারে গেলে জান্নাতী হওয়া যায়★★★
হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমান, " বনী ঈস্রাঈলে এক ব্যক্তি ছিলো, যে নিরানব্বই লোককে হত্যা করেছিল।তারপর মাসআলার সমাধান জিজ্ঞেস করার জন্য বের হলো।অতঃপর এক পাদ্রীর নিকট গিয়ে পৌঁছলো।সে জিজ্ঞেস করলো - এর তওবা হতে পারে কিনা। সে বললো, "না"।সে তাকেও মেনে ফেললো।আর মাসআলা জানার জন্য বেরিয়ে পড়লো।তাকে কেউ বললো, "অমুক বস্তিতে যাও"(ওই খানে একজন আল্লাহর অলী আছেন তোমার কি করা উচিত তিনি হয়ত সঠিক কোন সমাধান দিতে পারবেন)। এমতাবস্থায় তাকে মৃত্যু পেয়ে বসলো।তখন সে আপন বুক ওই বস্তির দিকে ফিরিয়ে নিলো।তার সম্পর্কে রহমত ও আযাবের ফিরিশতারা বদানুবাদ করলো।মহান রব ওই বস্তির দিকে নির্দেশ পাঠালেন- 'তুমি তার নিকটস্থ হয়ে যাও। আর ওই বস্তির দিকে নির্দেশ পাঠালেন- তুমি তার থেকে দূরবর্তী হয়ে যাও! তারপর এরশাদ করলেন, "ওই দুই বস্তির মধ্যে মাপো"।তখন তাকে এ বস্তি থেকে এক বিঘত পরিমাণ নিকটে পাওয়া গেল।সুতারাং তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হল।
★মুসলিম শরীফঃ৮ম খন্ড,২৭৪পৃঃ
★বোখারী শরীফ
★মিশকাত শরীফঃহাদিস নংঃ২২১৮
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন