সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৫

হাদিসের ভুল ব্যাখ্যায় মাযার ভাংগার ভ্রান্ত ফতোয়ার বিশ্লেষণ :


প্রায়ই এ সম্পর্কিত হাদিসগুলো ভুল জায়গায় ভুল ব্যাখ্যা সহ মানুষের কাছে প্রচার করা হয় এর সমাধান নিন :

ক) হযরত আলী (আঃ) থেকে রেওয়ায়েত করেছেন :

کانَ رَسُولُ اللهِ في جِنازَةٍ فَقالَ : أيُّکم يَنطَلق إلَي المَدينَةِ فَلا يَدَعُ بِها وَ ثَناً. إلاّ کَسَرَه. وَ لا قَبراً إلاّ سَوّاه. وَ لا صُورَة إلاّ لَطًخَها ؟ فَقالَ رَجُلُ : أنَا يا رَسُولَ اللهِ : فَانطَلَقَ فَهابَ أهابَ أهلَ المَدينَةِ . فَرَجَعَ فَقلَ عَليُّ: أنَا اَنطَلِقُ يا رَسُولَ الله؟ قالَ: فَانطَلِق. فَانطَلِق . فَانطَلَقَ ثُمَّ رَجَعَ فَقالَ: يا رَسُولَ اللهِ ! لَم اَدَع بِهَا وَ ثَنَاً إلا کَسَر تُهُوَ لا قَبراً ألاّ سَوَّ يتُه . وَ لا صُورَةً إلاّ لَطَختُها.

হযরত আলী (কাঃ) বলেছেন ঃ রাসূল (সাঃ) একটি জানাযার দাফন অনুষ্ঠানে ছিলেন যে বলেন ! তোমাদের মধ্যে কে মদীনায় যাবে এবং সেখানে তাদের সমস্ত মূর্তিগুলোকে ধবংশ করবে এবং তাদের কবরগুলো পরিষ্কার এবং সমস্ত চেহারাগুলো (মূর্তিগুলো) ধবংশ করবে ?” এক ব্যক্তি বললেন ঃ আমি, “হে আল্লাহর রাসূল!” সে গেল এবং মদিনার মানুষকে ভয় পেয়ে ফিরে আসচলা। হযরত আলী (আঃ) বললেন ; হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) আমি যাব কি ? বললেনঃ ‘যাও।” তিনি গেলেন ফিরে এসে বললেন! “হে আল্লাহর রাসূল! সমস্ত মূর্তি ভেঙ্গেছি, সমস্ত কবর পরিস্কার করেছি এবং সমস্ত ছবি উল্টে দিয়েছি এবং সমস্ত ছবি উল্টে দিয়েছি।”
এ রেওয়ায়েতটির হাদীসের কিতাবসমূহে পুনরাবুত্তি ঘটেছে এবংং আমরা এর পরিপূর্ণ বর্ণনাটি তুলে ধরেছি।

[মুসনাদে আহমাদ খঃ১, পৃঃ৮৭, ৮৯,৯৬, ১১০ ১১১, ১২৮, ১৩৮, ১৩৯,১৪৫, ১৫০; এবং মুসনাদে তায়ালুসী হাদীস ৯৬ ও ১৫৫]

খ) মহানবী (সাঃ) থেকে বির্ণত হয়েছে যে বলেন ঃ

أللّهُمَّ لا تَجعَل قَبري وَ ثناً .لَعَنَ اللهُ قومًا اتَّخَذُوا قُبُورَ أنبيائهِم مَسا جد.

প্রভু হে ! আমার কবরকে মূর্তিতে পরিণত করোনা। মহান আল্লাহ লা’নত করুন সে দলকে যারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদ (সিজদার স্থানে) পরিণত করে। [মুসনাদে আহমাদ খঃ২ পৃঃ২৪৬]

গ) অপর এক রেওয়ায়েতে মহানবী (সাঃ) তাদের পরিচয় দিয়েছেন যারা নিজেদের নবীদের কবরকে মসজিদে পরিণত করেছে এবং বলেন ঃ

قاتَلَ اللهُ اليَهُودَ اِتَّخَذُوا قُبُور اَنِبيا ئهم مَساجِد

মহান আল্লাহ ইহুদীদেরকে হত্যা করুন; তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদে পরিণত করেছে। [মুসনাদে আহমাদ খঃ২ , পৃঃ২৮৫]

Explain :

★ মসজিদ বলতে এই মসজিদই যদি হত স্বয়ং রাসুলুল্লাহ (সা) এর রওজাকে ঘিরে মসজিদে নববী কি করে গড়ে উঠল? কাবা ঘরে ৩০০ জন নবীর কবর কিভাবে থাকে?এগুলো অন্য জায়গায় সরিয়ে ফেলা হয় নি কেন?
ওহাবীরা এই সাধারন জিনিসটা বুঝে না।

★ ইহুদিরা নবীদের মাযার কিবলা বানিয়ে ইবাদত করত, ইবাদতের উদ্দেশ্যে সিজদা করত (তাযিমি সিজদা না ইবাদতী সিজদাহ করত)

ঘ) অতঃপর মসজিদের
ভাষণে তিনি বলেন, َّ

ﺪَﺘْﺷﺍ
ﻗُﺒُﻮْﺭَ ﺍْﻭُﺬَﺨَّﺗﺍ ٍﻡْﻮَﻗ ﻰَﻠَﻋ ِﻪﻠﻟﺍ ُﺐَﻀَﻏ
ﻣَﺴَﺎﺟِﺪَ ْﻢِﻬِﺋﺎَﻴِﺒْﻧَﺃ ‘

ঐ (ইহুদী-নাসারা) কওমের উপরে আল্লাহর প্রচন্ড ক্রোধ
রয়েছে, যারা নবীগণের কবর
সমূহকে সিজদাহর
স্থানে পরিণত করেছে। (আল-হাদিস)

Note: তারা নবীদের পুজা করত এই ভেবে যে নবীগন খুশি হয়ে আল্লাহর কাছে তাদের জন্য সুপারিশ করবে। কিন্তু তার সাথে আমাদের সম্পর্ক কি? আমরা তো মাযার জিয়ারত করি প্রভু মনে করে কেউ মাযার পুজা করি না।

উক্ত হাদিস গুলাতে স্পষ্ট যে সেগুলো ইহুদি নাসারাদের কবর ছিল যা ভেংগে ফেলা হয়েছিল তাই বলে কি কোন মুসলমানের এত বড় স্পর্ধা হতে পারে যে সে ""আল্লাহর অলীর মাযার ভাংগার কথা বলতে পারে?""

★ এগুলো কাফিরদের- মুশরিকদের কবর ছিল।

বুখারী শরীফের শ্রেষ্ঠ ব্যাখ্যাকার হাফিজুল হাদিস (১ লক্ষ হাদিসের হাফিজ) ইমাম হাজর আসকালানী (রহ) বলেন,”‘

নবীগনও তাদের অনুসারীগনের কবর বাদ দিয়ে মুশরিকদের কবরগুলোকে ধ্বংশ করা হয়েছিল। কেননা এগুলো উপরে ফেলার কারন ছিল। ইহুদী নাসারাগন নবীজী (সা) এর মানহানী করত।

Reference :
শরহে বুখারী ফতহুল বারী ২ খন্ড ২৬ পৃষ্টা।

তাই এই হাদিস ইমানদার সাধারন মুসলমানের জন্যও ব্যবহার করা যাবে না ওলীগনের ক্ষেত্রে তো Impossible!!!

কারন-

★ হযরত ইবনে ঊমর(রা) বলেন,” খারিজি সম্প্রদায় এর এমন স্বভাব ছিল যে তারা কাফির মুশরিকদের উপর অবতীর্ন আয়াত ইমানদার দের উপর প্রয়োগ করত। তাই তাদেরকে তিনি আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে নিকৃষ্টতম জাতি বলে মনে করতেন।

Reference :-
বুখারী শরীফ

পরিশেষে :

``` রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেনঃ যে ব্যক্তি আমার
অলীর সাথে শত্রুতা করে, আমি তার বিরোদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি ।

Reference :

★ বুখারী শরিফঃ ৬৫০২
★ মেশকাত শরীফ-১৯৭ পৃষ্ঠা

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন