শুক্রবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৬

নাসীরুদ্দিন আলবানীর ভ্রান্ত আকিদা ও মুখোশ উন্মোচনঃ (পর্ব ২)


তাবেয়ী ইবনে সিরিন (রহঃ) বলেছেন,

إنَّ هذا العلم دين ؛ فانظروا عمَّن تأخذون دينكم

“নিশ্চয় এই ইলম দ্বীনের অন্তর্ভূক্ত। সুতরাং লক্ষ্য রেখো! কার নিকট থেকে তুমি তোমার দ্বীন গ্রহণ করছো”



আলবানী সাহেবের তাহকীকের প্রকৃত অবস্থা:

আলবানীর মত পরিবর্তনঃ  
একবার এক হাদিসকে সহিহ বলে পরে দুর্বল বলে আবার দুর্বলকে সহিহ বলে , আবার অনির্ভরযোগ্য রাবীকে নির্ভরযোগ্য বলে, নির্ভরযোগ্যকে অনির্ভরযোগ্য বলে।




১. উদা বিন হাসান উদা ৫০০ হাদীসের একটি সঙ্কলন বের করেছেন। এই কিতাবে যে ৫০০ হাদীস উল্লেখ করা হয়েছে, এগুলো মুলত: আলবানী সাহেবের তারাজু বা পূর্বের মতামত থেকে ফিরে আসার ব্যাপারে আালোচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ আলবানী সাহেব পূর্বে একটা হাদীসকে সহীহ বলেছেন, পরে মত পরিবর্তন করে সেটাকে যয়ীফ বলেছেন। এধরনের রুজু দু’একটি হাদীসে ঘটেনি। এখানে মোট পাচ শ হাদীস উল্লেখ করা হয়েছে। এই কিতাবটি আলবানী সাহেব এর নিজস্ব ওযেস সাইট আলবানী ডট নেটে পাওয়া যাবে।

২. আবুল হাসান মুহাম্মাদ হাসান আশ-শাযখ্র আলবানী সাহেব এর রুজু বা পূর্বের মতামত থেকে প্রত্যাবর্তনের উপর একটি সঙ্কলন বের করেছন। এখানেও ৩০০ এর বেশি হাদীসের উপর আলোচনা করা হয়েছে। পাবেনঃ
http://www.alalbany.net

৩. আলবানী সাহেবের তারাজু নিয়ে লেখা আরেকটি কিতাব হলো, আত-তাম্বিহাতুল মালিহা আলা মা তারাজায়া আনহুল আল্লামা আল-আলবানী। এটি নিচের লিংক থেকে ডাউন লোড করুন। এ কিতাবেও আলবানী সাহেব এর সহীহ ও যয়ীফ বলার ক্ষেত্রে পূর্বের মত থেকে প্রত্যাবতর্ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং আলবানী সাহেবের রুজু করা হাদীস সঙ্কলন করা হযেছে। 
http://www.alalbany.net

৪. আলবানী সাহেব পূর্বের অবস্থান থেকে ফেরার পাশাপাশি প্রচুর স্ববিরোধীতায় লিপ্ত হযেছেন। একই রাবীকে কোথাও যয়ীফ, কোথাও সহীহ বলা, একই হাদীসকে কোথাও সহীহ এবং কোথাও সহীহ বলাকে তানাকুয বা স্ববিরোধীতা বলে। আলবানী সাহেব এতো বেশি পরিমাণ স্ববিরোধীতা করেছেন যে, এ বিষয়ে তিনি অনেক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। একজন সুস্থ ধারার মুহাদ্দিস দু’একটি হাদীসের ক্ষেত্রে এমন করতে পারেন, কিন্তু তিনি শত শত হাদীসের ক্ষেত্রে এধরণের স্ববিরোধতিা করেছেন। শায়খ হাসান বিন আলী আস-সাক্কাফ আলবানী সাহেবের এ ধরণের স্ববিরোধীতার উপর কিতাব লিখেছেন। কিতাবের নাম, তানাকুযাতুল আলবানিল ওয়াজিহাত। এটি তিন খন্ডে প্রকাশিত হয়েছে। তিন খন্ডে আলবানী সাহেবের মোট ১৩০০ স্ববিারোধী বক্তব্য উল্লেখ করা হযেছে। লেখক দাবী করেছেন, আমি আলবানী সাহেবের মোট সাত হাজার স্ববিরোধী বক্তব্য পেযেছি। এই তিন খন্ডে আমি ১৩০০ বক্তব্য প্রকাশ করেছি। বাকীগুলো তিনি আস্তে আস্তে প্রকাশ করবেন।

৫. শায়খ সাইদ আল মামদুহ আলবানী সাহেব এর সহীহ ও যয়ীফ এর উপর তুলনামূলক আলোচনা করে ইলমুল হাদীসের আঙ্গিকে আট শ হাদীসের ব্যাপারে আলবানী সাহেবের ভুল ধরেছেন। অথাৎ একটা হাদীস আলবানী সাহেব এর নিকট যয়ীফ, কিন্তু সেটি বাস্তবে সহীহ আবার একটি হাদীসকে তিনি সহীহ বলেছেন, বাস্তবে সেটি যয়ীফ, এজাতীয় আট শ হাদীসের উপর আলোচনা করেছেন। তিনি এর উপর, আত-তা’রীফ বিআওহামি মান কাস সামাস সুনান ইলা সহীহ ও যয়ীফ নামে ছয় খন্ডের কিতাব লিখেছেন। প্রত্যেক খণ্ডই প্রায় ৫০০ পৃ. এর উপরে।

৬. শায়খ হাম্মাদ বিন হাসান আল-মিসরী ৩০০ শ এর বেশি রাবীর জীবনী আলোচনা করেছেন, যাদের ব্যাপারে আলবানী সাহেব বলেছেন, তাদের কোন জীবনী কোন কিতাবে পাইনি অথবা তারা অপরিচিত, অথচ তাদের জীবনী তিনি যে কিতাব দেখেছেন তাতে বিদ্যমান রয়েছে এবং তারা পরিচিত রাবী। তিনি নাম্বার সহ প্রত্যেক রাবীর নাম ও তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করেছেন। নিচের সাইটে তার আলোচনা গুলো পাওয়া যাবে।



এখানে সেরূপ কয়েকজন বর্ণনাকারীর নাম উল্লেখ করছি যাদেরকে পূর্বের মুহাদ্দিসগণ অনির্ভরযোগ্য বলেছেন কিন্তু আলবানী সাহেব সেসবকে নির্ভরযোগ্য বলেছেনঃ


১। আহমদ ইবনে ফরজ আবু উতবা হামসীকে আলবানী সাহেব সেকা বা নির্ভরযোগ্য রূপে রূপান্তরিত করে তার বর্ণনাকৃত হাদীসকে সহীহ বলেছেন। আলবানীর কিতাব  সিলসিলায়ে আহাদীসে সহীহা খন্ড ২, পৃষ্ঠা ২৩৬।

২। ইসমাঈল ইবনে মুসলিম মক্কী। (প্রগুক্ত ১/৬১৩, ৬/৫০৫)

৩। বকর ইবনে খুনাইস। (প্রাগুক্ত ২/৬০৯)

৪। হাকাম ইবনে সেনান।  (প্রগুক্ত ৪৭)

৫। হানযালা ইবনে আব্দুল্লাহ সুদুসী (প্রাগুক্ত ১/২৪৯)

৬। সালেহ ইবনে বশীর। (প্রগুক্ত ২/২৩৯)

৭। মুসলিম ইবনে ওয়ারদান। (প্রাগুক্ত ২/৫০৩)

৮। আব্দুল্লাহ ইবনে কায়সান মরূযী (প্রাগুক্ত ১/১৩)

৯। আব্দুল মুনঈম ইবনে বশীর। (প্রগুক্ত ১/৫৮২)

১০। ইয়াহয়া ইবনে কাছীর আবু নছর। (প্রাগুক্ত ১/২৬৪)

১১। আলফজল ইবনে মুখতার। (প্রাগুক্ত ২/৫৮২)

১২। খালেদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে ইয়াযীদ কমরী দামেশকী। (প্রাগুক্ত ১/১১৩)

এরা হলেন ঐসকল রাবী যাদেরকেও আলবানী সাহেব নির্ভরযোগ্য রাবী বলে হাদীসকে সহীহ বলেছেন। অথচ এসকল বর্ণনাকারী মুহাদ্দিসদের মতে এত জয়ীফ যে হাদীসে এরা থাকবে সে হাদীস জয়ীফ বলে বিবেচিত হবে।

এখন দেখা যাবে আলবানী সাহেবের এসকল নির্ভর যোগ্য সহীহ হাদীসের রাবীগণ অন্যান্য মুহাদিসের মতামতে কোন পর্যায়ের রাবী বা বর্ণনাকারী। এদের হাদীস জয়ীফ না কি সহীহ।

১। আহমদ ইবনে ফরজ আবু উতবা হিমস।

আবু মুহাম্মদ হাকেম বলেন, আবু উতবা যখন ইরাক পৌছে তখন ইরাকীগণ তার কাছ থেকে হাদীস নিয়েছেন এবং এর সম্পর্কে ভাল মত দিতেন। কিন্তু মুহাম্মদ ইবনে আউফ তার ব্যাপারে সমালোচনা করতেন। এবং আমি ইবনে হাওসাকে এই রাবী সম্পর্কে অনির্ভরযোগ্য বলতে শুনেছি। মুহাম্মদ ইবনে আউফতো তাকে কাযযাব বা মিথ্যাবাদী এবং খারাপ চরিত্রের বলে দাবী করেন। আবু হাশেম আব্দুল গাফফার ইবনে সালাম বলেন, আমি আমার বন্ধুদেরকে তার ব্যাপারে মিথ্যাবাদী হিসেবে মন্তব্য করতে দেখার পর আমি তার কাছ থেকে হাদীস গ্রহণ করিনি। (তাহযীবুততাহযীব ১/৬৮)

খতীবে বোগদাদী তো বলেন আবু উতবা সম্পর্কে মদ পানকারী মদ্যপ ছিল।  (তারিখে বোগদাদী ৪/৩৪১)

পর্যালোচনা: যে বর্ণনাকারীকে মিথ্যাবাদী, খারাপ চরিত্র, মিথ্যুক, মদ্যপ বলে মুহাদ্দিসগণ তার কাছ তেকে হাদীস গ্রহণ করেননি। তাযে একেবারী জয়ীফ রাবী তাতে কোন সন্দেহ থাকার অবকাশ নেই। কিন্তু এরূপ বর্ণনাকারী থেকে হাদীসকে দলীল হিসেবে পেশ করা, সেরূপ হাদীসকে সহীহ হাদীস বলে কিতাবে উল্লেখ করা এবং নিজের মতকে সেহাহ সিত্তা থেকেও উর্দ্ধে মনে করা তা কোন ধরনের প্রতারণা তা পাঠক মাত্রই বুঝবেন।

২। ইসলামাঈল ইবনে মুসলিম মক্কী

ইমাম আহমদ ইবনে হাম্ব (রহ.) তাকে মুনকারুল হাদীস বলেছেন, ইমাম আলী ইবনে মাদানী বলেছেন তিনি সবসময় ভুল করে থাকে, তিনি আরো বলেন উক্ত ব্যক্তি আমার কাছ থেকে একটি তিন প্রকারে বর্ণনা করেছেন।আরো বলেছেন তার কাছ থেকে হাদীস গ্রহণ করা যাবে না। তিনি عن حسن، عن سمرہ বলে মুনকার হাদীস বর্ণনা করে থাকেন। ইয়াহইয়া ইবনে ‍মুঈন বলেছেন তিনি কোন বস্তুই না।  জাওযজানী বলেছেন ইসমাঈল ইবনে মুসলিম কল্পনা প্রসূত হাদীস বলে, ইমাম নাসায়ী বলেছেন তিনি অস্বীকৃত, ইয়াহইয়া ইবনে মাহদী এবং ইবনে মোবারক একে ছেড়ে দিয়েছেন। (তাহযীবুল কামাল ৩/১০২)

পর্যালোচনা:


যে বর্ণনাকারীকে মুনকারুল হাদীস, ওয়াহীউল হাদীস, ভুল বর্ণনা কারী, একই বর্ণনাকে তিন বার উল্টাপাল্টা করে বলেছেন, হাদীসের ইমাম গণ যাকে পরিত্যাগ করেছেন, যার বর্ণনা লেখতে পছন্দ করতেন না এরূপ একজন বর্ণনাকারীর বর্ণনা গ্রহণ করা, তাথেকে মাসআলা ইসতিম্বাত করা এটি কোন ধরনের বড় গবেষকের কাজ হতে পারে। যে কোন চিন্তাশীল ব্যক্তি তা বিচার করবেন।

৩। বকর ইবনে খুনাইস

ইবনে সালেহ মিশরী, ইবনে খেরাশ এবং দারে কুতনী (রহ.) এই বর্ণনাকারী সম্পর্কে বলেছেন তিনি মতরূক তথা পরিত্যায্য, উমর ইবনে আলী, ইয়াকুব ইবনে শায়বা নাসায়ী উকাইলী (রহ.) বলেছেন এই বর্ণনাকারী জয়ীফ বা দূর্বল। নসায়ী বলেছেন দূর্বল। ইবনে হাতেম নিজ পিতা থেকে এই বর্ণনাকারী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন তিনি কি পরিত্যায্য। উত্তরে তিনি বললেন সে পর্যন্ত পৌছে গেছে। ইমাম আবু দাউদ বলেছেন তিনি কোন বস্তুই না। ইয়াকুবে এই বর্ণনাকারীদেরকে ওই সূচীর অন্তর্ভুক্ত করেছেন যাদের কাছ থেকে হাদীস ও বর্ণনা গ্রহণ করা হতো না। জাওযানী বলেছেন তিনি অগ্রহণযোগ্য হাদীস বর্ণনা করেন। ইবনে আদী বলেছেন ভাল লোকদের কাছে তার বর্ণনা ন্দেহযুক্ত। অনেক সময় তিনি অনুমান ভিত্তিক হাদীস বলে থাকেন। তাঁর হাদীস সমূহ জয়ীফ হাদীসের অন্তর্ভুক্ত। তিনি ওই লোকদের মধ্যে নন যাদের হাদীস দলীল হিসেবে বর্ণনা করা যায়।

ইবনে মদীনী বলেছেন আমি আমার পিতার কাছে জিজ্ঞেস করলে তিনি উক্ত রাবী সম্পর্কে বলেন তিনি জয়ীফ। বাযযার বলেছেন তিনি দূর্বল। ইবনে হিব্বান বলেন তিনি বহু মওযু বা বানানো হাদীস বর্ণনা করেছেন।

এই রূপ বর্ণনাকারীর হাদীস আলবানী সাহেব তাঁর সহীহ হাদীস সমূহে বর্ণনা করেছেন।

৪। হাকাম ইবনে সেনান

ইবনে মুঈন ও নাসায়ী বলেছেন তিনি জয়ীফ। ইমাম বুখারী বলেছেন তার কাছে অনুমান প্রসূত হাদীস বহু আছে এবং তিনি কাছীরুল ইসনাদ নন। ইবনে সাআদ বলেন হাদীসে তিনি জয়ীফ। ইমাম আবু দাউদ বলেছেন তিনি জয়ীফ। ইমাম বুখারী (রহ.) বলেন, তাঁর হাদীস লেখার যোগ্য নয়। সাজী বলেছেন তাকে মিথ্যুক মনে করি।

সুতরাং এরূপ হাদীসের বর্ণনাকারীর হাদীসকি সহীহ হাদীসের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা যায়। অথচ আলবানী সাহেব তার সহীহ হাদীস সমূহে এরূপ লোকের হাদীসও বর্ণনা করেছেন।


৫। হানযালা ইবনে আব্দুল্লাহ সুদুসী

ইবনে মদীনী বলেন ইয়াহয়া ইবনে সাঈদ বলেছেন আমি এই বর্ণনাকারীকে দেখেছি। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে ত্যাগ করেছি। মায়মুন বলেন ইমাম আহমদ (রহ.) তাকে জয়ীফ বলেছেন। আছরাম বলেছেন ইমাম আহমদ (রহ.) তাকে মুনকারুল হাদীস বলেছেন। অভাবিত ও আশ্চর্য জনক হাদীস বর্ণনা করেন। সালেহ ইবনে আহমদ বালেছেন আমার পিতা বলেছেন তিনি জয়ীফ। ইবনে মুঈন ও নাসায়ীও তাকে জয়ীফ বলেছেন। আবু হাতেম বলেছেন লাইসা বিক্ববিয়্যিন। ইবনে হিব্বান বলেছেন হানযালা ইবনে আব্দুল্লাহ তার কুনিয়ত ছিল আবু আব্দুর রহমান। শেষ বয়সে তার গড়বড় হয়েগেছে। এমনকি জানতেন না যে রেওয়ায়াত তিনি করতেন সেখানে পুরাতন কথাগুলো গড়বড় করে একের সাথে আরেকটি মিলিয়ে বলে দিতেন। ইয়াহইয়া ইবনে কাত্তান তাকে পরিত্যাগ করেছেন। (আত্তারীফ বি আওহামী  ৬/৩৪)

পর্যালোচনা : তিনি পরিত্যাক্ত এবং জয়ীফ। নিজেই জানতেননা তিনি কি বর্ণনা করছেন। প্রথমে তিনি তা কিরূপে বর্ণনা করেছিলেন। এরূফ জয়ীফ রাবীর হাদীছও আলবানী সাহেব তার সহীহ হাদীছে বর্ণনা করেছেন।

৬। সালেহ ইবনে বশীর

মুফাজ্জল গালাবী প্রমূখ বলেন ইবনে মুঈন তাকে জয়ীফ বলেছেন। মুহাম্মদ ইবনে ইসহাক ‍সাফফানী প্রমূখ বলেছেন ইবনে মুঈন বলেছেন তিনি কিছুই না। জা’ফর তায়ালাসী বলেছেন ইয়াহইয়া ইবনে মুঈন বলেছেন তিনি কিসসা কাহীনী বলতেন এবং তাঁর সকল বর্ণনা যেগুলো সাবেত থেকে বর্ণনা করেছেন সবই বাতিল। (তাহযীব ৪/৩৮৩)

হাসান ইবনে আলী আফফনকে বলেন হাম্মাদ ইবনে আন সালেহ থেকে কিছু হাদীস বর্ণিত আছে। তিনি বলেন তা মিথ্যা।  (তারীখে বাগদাদ ৯/৩০৮)

আব্দুল্লাহ ইবনে আলী মদীনী বলেন আমার পিতা তাকে বড় জয়ীফ বলেছেন। মুহাম্মদ ইবনে উসমান ইবনে আবী শায়বা বলেন আলী বলেছেন তিনি কিছুই না। জয়ীফ। উমর ইবনে আলী বলেন তিনি জয়ীফুল হাদীস।  ইমাম বুখারী (রহ.) বলেছেন তিনি মুনকারুল হাদীস। আজেরী বলেন আমি ইমাম আবু দাউদ থেকে জিজ্ঞেস করলাম তার হাদীস লেখা যাবে কি না? তিনি বলেন না।নাসায়ী বলেন তিনি জয়ীফ। তার হাদীস পরিত্যায্য। (তাহযীবুত্তহাযীব ৪/৩৮৩)

এরূপ জয়ীফ রাবীর বর্ণনাও আলবানী সাহেব সহীহ হাদীসের মধ্যে গণ্য করেছেন।


বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৬

নাসীরুদ্দিন আলবানীর ভ্রান্ত আকিদা ও মুখোশ উন্মোচনঃ (পর্ব ১)


তাবেয়ী ইবনে সিরিন (রহঃ) বলেছেন,

إنَّ هذا العلم دين ؛ فانظروا عمَّن تأخذون دينكم

“নিশ্চয় এই ইলম দ্বীনের অন্তর্ভূক্ত। সুতরাং লক্ষ্য রেখো! কার নিকট থেকে তুমি তোমার দ্বীন গ্রহণ করছো”


  • আধুনিক আহলে হাদীস দলের অন্যতম বক্তা ডঃ জাকির নায়েক ও মতিউর রহমান মাদানী তাদের অন্যতম গুরু, নেতা ও শাইখ হল এই নাসিরুদ্দিন আলবানী। জাকির নায়েকের আকিদা ও রিসার্চ মুলত আলবানীর আকিদা ও বই পুস্তক অনুসারে। যেমনঃ আলবানী যে হাদিস দুর্বল কিংবা জাল বলেছে তাকে অন্যান্য মুহাদ্দিসগন সহিহ বললেও জাকির নায়েক আলবানীকেই সমর্থন দিয়ে থাকে। এ আহলে হাদীসকে সালাফী নামে পরিচয়দানকারী হলো নাসির উদ্দিন আলবানী। ডাক নাম আবু আবদুর রহমান। ইউরোপ মুসলিম অধ্যুষিত দেশ আলবেনীয়ায় জন্ম হওয়ায় তাকে আলবানী বলা হয়। তিনি ১৩৩৩ হিজরী মোতাবেক ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে আলবেনীয়ার রাজধানী স্কোডার ( Shkoder বর্তমান নাম তিরানা) এ জন্ম গ্রহন করেন। 
  • →→ তার পরিবার ছিল দরিদ্র। তার পিতা ছিল হানাফী মাযহাব অনুসরণকারী। আলবেনিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ জাগু নারীদের পর্দা নিষিদ্ধ করলে শিশু আলবানীকে নিয়ে তার পিতা সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে চলে আসেন।
  • →→  আলবানী লিখিত 'সিফাতুস সালাত' কিতাবের ভূমিকাতে উল্লেখ্য করেন, নাসির উদ্দিন আলবানী ব্যক্তিগত জীবনে প্রথম অবস্থায় কাঠ মিস্ত্রির কাজ করতেন, পরবর্তীতে পিতার ঘড়ি মেরাতের কাজে নিয়জিত ছিলেন। অথচ বর্তমানে আহলে হাদীসগন তাকে শাইখ উপাধীতে ভুষিত করেছেন।
  • →→ আলাবনী প্রথম জীবনে হানাফী মাযহাবের অনুসারী ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে মাযহাব হতে ছিটকে পড়েন হানাফী ফিকাহর কিতাব পাঠ করলেও তিনি হানাফী মাযহাব সহ সমস্ত মাযহাবকে অস্বীকার করেন, ঠিক ইবনে ওহাব নজদীর ন্যায় এবং কোরআন হাদীস ও সলফে সালেহীনদের বিরুদ্ধাচরণ করেতে থাকেন। 
  • ১৯৬০ সালের প্রথম দিকে তিনি সকলের নজরে পড়েন এবং দু'বার গ্রেপ্তার হয়েছেন। প্রথম বার ১৯৬৮ সালের আগে দামেস্কের কেল্লা কারাগারে বন্দী ছিলেন এক মাসের জন্য। এটা সে কারাগার যেখানে ইবনে তাইমিয়া বন্দী ছিল। ১৯৬৮ যুদ্ধের সময় সিরিয়া সরকার সকল রাজবন্দীকে মুক্ত করে দিলে তিনিও মুক্ত হন। কিন্তু আবার ও তার মত প্রচার করতে থাকেন। ফলে তাকে পুনরায় দামেস্কের পূর্ব-উত্তরাঞ্চলের আল হাসাকা কারাগারে বন্দি করা হয় তিনি ওখানে আট মাস অতিবাহিত করেন। কারগার হতে মুক্তি পেয়ে তিনি পরবর্তীতে সিরিয়া ত্যাগ করে জর্ডানে আশ্রয় নেন এবং জর্ডানের রাজধানী আম্মানে স্থায়ীভাবে বসবাস করে,সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন।

তার ওহাবি কার্যাবলীর কারণে সৌদি রাজতন্ত্র তাকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করে। তাদের আর্থিক সহায়তায় ওহাবী মতবাদ প্রচার করার সুবর্ণ সুযোগ লাভ করেন। বর্তমান বিশ্বে আহল হাদীস তথা সালাফী ওহাবীদের কেন্দ্র হল সৌদিআরব। ভারতের ঐতিহ্যবাহী আহলে হাদীস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া বেনারসে হাদীসের শিক্ষক হিসেবে আলবানীকে নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব পাঠানো হয়। কিন্তু তৎকালীন সময় ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ চলছিল। তাই তিনি সেখনে যেতে অপারগতা পেশ করেন। 

  • সাউদী সরকার ওহাবী মতবাদ শক্ত করার জন্য আলবেনীকে ১৩৯৫ হিজরী থেকে ১৩৯৮ হিজরী পর্যন্ত মদীনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট সদস্য হিসাবে মনোনীত করেন। আলবেনী ১৪২০ হিজরী, ২ জুমাদাল আখেরা, শনিবার মোতাবেক ২ অক্টোবর, ১৯৯৯ ক্রিস্টাব্দে মারা যান।

নাসির উদ্দিন আলবানী ছিল কট্টর ওহাবী-সালাফী ২ দলেরই নেতাঃ



  • সুন্নী চার মাযহাবকে তিনি ভীষণভাবে কটাক্ষ করেছেন। তিনি লিখেছেন " মুসলিম ইমামগণের (মাযহাবের ইমামগন) ওমুক ইমাম কোন মাসয়ালার ইজতিহাদে বা তার রায়ে ভুল করেছেন তা আমরা কেন বলতে পিছপা হব??

হানাফী মাযহাবকে খ্রিস্টধর্মের সাথে তুলনাঃ


শায়খ নাসীরুদ্দিন আলবানী (রহঃ) হানাফী মাযহাবকে খ্রিস্টধর্মের সাথে তুলনা করে লিখেছেন,

هذا صريح في أن عيسى عليه السلام يحكم بشرعنا ويقضي بالكتاب والسنة لا بغيرهما من الانجيل أو الفقه الحنفي و نحوه

“এ থেকে স্পষ্ট যে, হযরত ঈসা (আঃ) আমাদের শরীয়ত অনুযায়ী ফয়সালা দিবেন এবং কিতাব ও সুন্নাহের মাধ্যমে বিচার করবেন। তিনি ইঞ্জিল, হানাফী ফিকহ কিংবা এজাতীয় অন্য কিছু দ্বারা বিচার করবেন না।”
[আল্লামা মুনযীরি (রহঃ) কৃত “মুখতাসারু সহিহীল মুসলিম” এর উপর শায়েখ নাসীরুদ্দিন আলবানী (রহঃ) এর টিকা সংযোজন, তৃতীয় সংস্করণ, ১৯৭৭, আল-মাকতাবুল ইসলামি, পৃষ্ঠা-৫৪৮]

অথচ তার পিতা নুহ নাতাজীও হানাফী ছিলেন। 
এছাড়া তিনি তার জীবনে দীর্ঘ একটি সময় নিজেও হানাফী ছিলেন। তাঁর জীবনীতে লেখা হয়েছে,



الحنفي (قديماً) ، ثم الإمام المجتهد بعد

“প্রথম জীবনে হানাফী, পরবর্তী জীবনে নিজেই মুজতাহিদ ইমাম”
[সাবাতু মুয়াল্লাফাতিল আলবানী, আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ আশ্-শামরানী, পৃষ্ঠা-২, ১৬]

বর্তমান বিশ্বে ৯২.৫ ভাগ মুসলমান চার মাযহাবের কোন একটি অনুসরণ করে থাকে এবং অবশিষ্ট ৭.৫ ভাগ লোক শিয়া মতাবলম্বী। দীর্ঘ তের শ’ বছর যাবৎ মুসলিম উম্মাহ মাযহাবের অনুসরণ করে আসছে, তবে কি তিনি সব মুসলমানকে খ্রিস্টানদের মত পথভ্রষ্ট মনে করেন?


উল্লেখ্য যে,  হানাফী ফিকাহ সমুহ হল ইসলামের অন্যান্য ফিকাহ থেকে শ্রেষ্ঠশ্রেষ্ঠ ফিকাহ তাই একে খ্রিষ্টান দের বিকৃত ইঞ্জিল তথা বাইবেলের সাথে তুলনা করা উচিত হয় নি। কারন আলবানী যে ইঞ্জিল দেখেছিল  বা পেয়েছিক তা বিকৃত ইঞ্জিল আর এতে শিরিকের মত জঘন্য বাক্যও রয়েছে যা আল্লাহর বানী নয় কিন্তু ইসলামি ফিকাহ কখনো ইসলামী শরীয়তের আইন নীতি থেকে পৃথক নয়।

    •  ইমাম আবু হানিফার শানে বিয়াদ্দবিঃ


      ★ আলবানী তার 'সিলসিলাতুল আহাদীসিয যয়ীফা" কিতাবে একটি হাদীস এনে ইমামা আবু হানিফা (রঃ) সম্পর্কে মন্তব্য করেন ' একমাত্র হানিফা ছাড়া হদিসের অন্যান্য বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযোগ্য। " 
      ( সূত্র আলবানী কৃত যঈফ ও জাল হাদীস সিরিজ)। 




    আলবানীর ধৃষ্টতা কল্পনাহীন। ইমাম আবু হানাফী (রহ.) একজন বিখ্যাত তাবেঈ। 

    ইমাম নববী (রহ.), হাফেজ ইবনে হাজার ( রহ.), ইমাম কাসতালানী (রহ.), ইমাম দারুতুতনী (রহ.), ইমাম সূযুতী (রহ.) প্রমুখগণ ইমাম আবু হানাফী (রহ.) কে ইমাম হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন। 



    • ইমাম আবু হানাফী কয়েকজন সাহাবী থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন তা ইমাম কুরাশীর ' আল জাওয়াহীরুল মুযিয়্যা ফী তবাকাতিল হানাফিয়্যা' কিতাবে বর্ণনা করেছেন। 

    • ইমাম বুখারী (রহ.) এর উস্তাদ মক্কী ইবনে ইব্রাহীম (রহ.) ' তাহযীবুত তাহযীব' কিতাবে উল্লেখ করেন, ' ইমাম আবু হানাফী (রহ.) তাঁর জামানায় সবচেয়ে বড় আলেম ছিলেন।" 
    অথচ এমন একজন তাবেঈ কে আলবানী কটাক্ষ করেছে। কথায় বলে দু পয়সার বৈরাগী ভাত বলে অন্ন। কেননা এক জন ঘড়ির মিস্ত্রির পক্ষে ইমাম আবু হানাফা ( রহ.) কে পরিমাপ করা সম্ভব নয়। পিঁপড়া গাধার প্রস্রাবে সাতাঁর কাটে আর বলে আমি প্রশান্ত মহাসাগরে সাতাঁর কাটছি। পিঁপড়ার যেমন মহা সাগর সম্পর্কে জ্ঞান নেই, তেমনি নাসিরুদ্দিন আলবানী তথা আহলে হাদীসদের ইমাম আবু হানাফী (রহ.) সম্পর্কে জ্ঞান নেই।

    ইমাম বুখারী ( রহ.) এর শানে বিয়াদ্দবিঃ


    • ★ নাসীরুদ্দিন আলবানী (রহঃ) ইমাম বোখারী (রহঃ) কে অমুসলিম আখ্যায়িত করেছেন। ইমাম বোখারী (রহঃ) বোখারী শরীফের “কিতাবুত তাফসীর” এ সূরা কাসাস এর ৮৮ নং আয়াতের যে ব্যাখ্যা করেছেন, সে সম্পর্কে নাসীরুদ্দিন আলবানী (রহঃ) লিখেছেন,

    ان هذا التأويل لا يقول به مؤمن مسلم وقال إن هذه التأويل هو عين التعطيل.
    “এ ধরণের ব্যাখ্যা কোন মুমিন-মুসলমান দিতে পারে না। তিনি বলেন, এ ধরণের ব্যাখ্যা মূলতঃ কুফরী মতবাদ “তা’তীলের” অন্তর্ভূক্ত"
     ইমাম বোখারী (রহঃ) সূরা কাসাসের ৮৮ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন,

    كُلُّ شَىْءٍ هَالِكٌ إِلاَّ وَجْهَهُ إلا ملكه, ويقال: إلا ما أُريد به وجه الله
    “আল্লাহর সত্তা ব্যতীত সব কিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে”
    এখানে তিনি “ওয়াজ্হুন” শব্দের ব্যাখ্যা করেছেন “মুলকুন” তথা আল্লাহর রাজত্ব। তখন অর্থ হবে, সবকিছু ধ্বংস হবে, তাঁর রাজত্ব ব্যতীত। অথবা “ওয়াজহুন” দ্বারা যা উদ্দেশ্য হবে, তা ব্যতীত সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে।
    [ফাতাওয়াশ শায়েখ আলবানী, পৃষ্ঠা-৫২৩, মাকতাবাতুত তুরাছিল ইসলামী, প্রথম প্রকাশ ১৯৯৪ইং]

    ইমাম বুখারী বেশি জানে নাকি নাসিরুদ্দিন আলবানী বেশি জানে? আপনারাই চিন্তা করুন।

    • এ ছাড়া নাসির উদ্দিন আলবনী ইমাম বুখরী (রহ.) এর লিখিত কিতাব ' আল আবদুল মুফরাদ' এর ৮৩ অধ্যায় থেকে ৩২৯টি হাদিস শরীফকে বাদ দেয় বিভিন্ন মিথ্যে বাহানায়। 
    • সে এমন দুঃসাহস করেছে ইমামা বুখারী (রহ.) ও ইমাম আযম আবু হানিফা ( রহ.) কেও মুশরিক ঘোষনা করে ( আসতাগফিরুল্লাহ) ( সূত্রঃ introduction to al- San ani s Raf al- Astarm page -24-25)

    নাসীরুদ্দিন আলবানী ওহাবী ও সালাফীদের ইমাম ইবনে তাইমিয়াকেও ছাড়ে নিঃ


    ★ নাসীরুদ্দিন আলবানী আল্লামা ইবনে তাইমিয়া সম্পর্কে লিখেছেন,

    إنني رأيت شيخ الإسلام ابن تيمية ، قد ضعف الشطر الأول من الحديث ، وأما الشطر الآخر ، فزعم أنه كذب !وهذا من مبالغاته الناتجة في تقديري من تسرعه في تضعيف الأحاديث قبل أن يجمع طرقها ويدقق النظر فيها.والله المستعان
    “আমি শায়খ ইবনে তাইমিয়াকে দেখেছি, তিনি হাদীসের প্রথম অংশকে দুর্বল বলেছেন এবং হাদীসের শেষ অংশকে তিনি মিথ্যা মনে করেছেন। আমার ধারণামতে “হাদীসকে যয়ীফ বলার ক্ষেত্রে এটি ইবনে তাইমিয়া এর বাড়াবাড়ি, যা তাঁকে হাদীসটি যয়ীফ বলতে উদ্বুদ্ধ করেছে; অথচ তিনি হাদীস বর্ণনার বিভিন্ন পরম্পরা খতিয়ে দেখেননি। এবং এ ব্যাপারে গভীর দৃষ্টিপাত করেননি।”
    [সিলসিলাতুস সহীহা, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-৩৪৩-৩৪৪, হাদীস নং ১৭৫০]


    ★ ইবনে তাইমিয়া “কালিমুত তাইয়্যিব” নামক বিখ্যাত একটি কিতাব রচনা করেছেন। 
    নাসীরুদ্দিন আলবানী সে কিতাবের হাদীসগুলো বিশ্লেষণ করে একটি কিতাব লিখেছেন, 
    সহীহুল কালিমিত তাইয়্যিব। এ কিতাবে নাসীরুদ্দিন আলবানী লিখেছে-

    أنصح لكل من وقف علي هذا الكتاب ( الكلم الطيب لإبن تيمية) و غيره: أن لا يبادر إلي العمل بما فيه من الأحاديث، إلا بعد التأكيد من ثبوتها، و قد سهلنا له السبيل إلي ذلك بما علقنا عليه ، فما كان ثابتا منها عمل به …وإلا تركه، ( صحيح الكلم الطيب-ص-৪)

    “যারা আল্লামা ইবনে তাইমিয়া এর এ কিতাবটি সম্পর্কে অবগত রয়েছে, তাদেরকে নসীহত করব, এ কিতাবে যে সমস্ত হাদীস রয়েছে, সেগুলোর প্রতি তারা যেন আমল করতে অগ্রসর না হয়, যতক্ষণ না হাদীসগুলো শক্তিশালীভাবে প্রমাণিত হয়। আমি এর উপর যে টিকা সংযোজন করেছি, এর মাধ্যমে প্রত্যেকের জন্য বিষয়টি সহজ করে দিয়েছি। সুতরাং যে সমস্ত হাদীস প্রমাণিত হবে, সেগুলোর উপর আমল করা হবে, নতুবা সেটি পরিত্যাগ করা হবে”
    [সহীহুল কালিমিত তাইয়্যিব, পৃষ্ঠা-৪]


    ওহাবীদের 
    নেতা শায়েখ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাফ সম্পর্কে আলবানীর বক্তব্যঃ


    শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ (রহঃ) এর প্রতি অভিশাপঃ
    শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ সম্পর্কে শায়খ নাসীরুদ্দিন আলবানী (রহঃ) লিখেছেন,

    أشل الله يدك وقطع لسانك -يدعو على العلامة الشيخ عبد الفتاح أبي غدة-.
    ويقول عنه: إنه غدة كغدة البعير
    ثم يقول مستهزئا ضاحكا: أتعرفون غدة

    “আল্লাহ তায়ালা তোমার হাত অবশ করে দিক এবং তোমার জিহ্ক্ষাকে কর্তন করুক । [কাশফুন নিকাব, পৃষ্ঠা-৫২]
    তিনি আরও বলেন , সে হল উটের প্লেগ রোগের মত একটা মহামারী (গুদ্দাতুল বায়ীর)। অতঃপর তিনি হাসতে হাসতে উপহাস করে বললেন, তোমরা কি জানো, উটের প্লেগ কী?

    নাসীরুদ্দিন আলবানীর এ কথা উল্লেখ করে আল্লামা হাবীবুর রহমান আজমী লিখেছেন,

    و ليس يعني الألباني بذلك إلا أنه يجب علي الناس أن يتخذوه إماما و يقلدوه تقليدا أعمي، ولا يعتمدوا علي إبن تيمية و لا علي غيره من الثقات الأثبات من المحدثين، في ثبوت الأحاديث حتي يسألوا الألباني و يرجعوا إلي تحقيقاته!

    “অর্থাৎ নাসীরুদ্দিন আলবানীর একথা বলার দ্বারা মূল উদ্দেশ্য হল, মানুষ যেন আবশ্যকভাবে তাঁকে ইমাম বানায় এবং তাঁর অন্ধ অনুকরণ করে। এবং যতক্ষণ পর্যন্ত আলবানীকে জিজ্ঞেস না করবে এবং তার বিশ্লেষণকে গ্রহণ না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লামা ইবনে তাইমিয়াসহ অন্য কোন বিশ্বস্ত ও গভীর পাণ্ডিত্যের অধিকারী মুহাদ্দিসের হাদীসের উপরও নির্ভর করবে না।”


    ইমাম জালাল উদ্দিন সূয়ুতী (রহ.) এর শানে বিয়াদ্দবিঃ


    জালালুদ্দিন সূয়ূতী (রহঃ) সম্পর্কে শায়খ নাসীরুদ্দিন আলবানী লিখেছেন,

    فيا عجباً للسيوطي كيف لم يخجل من تسويد كتابهِ الجامع الصغير بهذا الحديث

    “কী আণ্ডর্য! জালালুদ্দিন সূয়ূতী তাঁর জামে সগীরে কিভাবে এ হাদীস উল্লেখ করতে একটু লজ্জাবোধ করলেন না!

    তিনি জালালুদ্দিন সূয়ূতী (রহঃ) সম্পর্কে আরও লিখেছেন-

    وجعجع حولهُ السيوطي

    অর্থাৎ জালালু্িদ্দন সূয়ূতী (রহঃ) হাঁক-ডাক ছেড়ে থাকেন।
    [সিল-সিলাতুজ জয়িফা, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-১৮৯]
    • ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ুতী (রহ) - ১ লক্ষ হাদিসের হাফিজ, 
    • জগত বিখ্যাত মুহাদ্দিস, মুফাসসির।
    • তফসিরে জালালাইন ও তফসীরে দুররে মনসুর এর প্রনেতা। যার কিতাব এমন কোন মাদ্রাসা নেই পড়ানো হয় না। 
    • যিনি রাসুল (সা) কে জাগ্রত অবস্তায় ৭০ বার দেখেছেন।
    • স্বপ্নে ২০০ বার দেখেছেন।
    • নবম হিজরির মুজাদ্দিদও ছিলেন তিনি।

    ইমাম হাকেম, ইমাম যাহাবী এবং আল্লামা মুনযিরি (রহঃ) সম্পর্কে শায়েখের উক্তিঃ

    শায়খ নাসীরুদ্দিন আলবানীর দৃষ্টিতে একটা হাদিস সহীহ নয়, অথচ অন্যান্য মুহাদ্দিস তাকে সহীহ বলায় তিনি হাদীসের বিখ্যাত তিন মুহাদ্দিস ইমাম হাকেম, ইমাম যাহাবী, ইমাম মুনযিরি (রহঃ) সম্পর্কে বলেছেন,
    وقال الحاكم : ” صحيح الاسناد ” ! ووافقه الذهبي ! وأقره المنذري في ” الترغيب ” ( ৩ / ১৬৬ ) ! وكل ذلك من إهمال التحقيق ، والاستسلام للتقليد ، وإلا فكيف يمكن للمحقق أن يصحح مثل هذا ا لاسناد
    “হাকেম বলেছেন, হাদীসটির সনদ সহীহ। ইমাম যাহাবী তাঁর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। ইমাম মুনযিরি (রহঃ) “তারগীব ও তারহীব” নামক কিতাবে তার স্বীকৃতি দিয়েছেন। 

    আর এটি হয়েছে, তত্ত্ব-বিশ্লেষণের প্রতি উদাসীনতা, তাকলীদের প্রতি আত্মসমর্পণ
    (অন্ধানুকরণ), নতুবা একজন বিশ্লেষণধর্মী আলেম কিভাবে একে সহীহ বলতে পারেন”





    হাফেয তাজুদ্দিন সুবকী (রহঃ) সম্পর্কে শায়েখ নাসীরুদ্দিন আলবানী মন্তব্য করেছেন-


    ولكنه دافع عنه بوازع من التعصب المذهبي ، لا فائدة كبرى من نقل كلامه وبيان ما فيه من التعصب. .
    মাযহাব অনুসরণের গোঁড়ামি তাঁকে প্ররোচিত করেছে। তাঁর কথা উল্লেখ করে এবং তাঁর গোঁড়ামির কথা আলোচনা করে তেমন উল্লেখযোগ্য কোন উপকারিতা নেই।
    [সিল-সিলাতুজ যয়িফা, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২৮৫]



    • শায়খ হাবীবুর রহমান আজমী (রহঃ) তাঁর সম্পর্কে লিখেছেন,

    الشيخ ناصر الدين الالباني شديد الولوع بتخطئة الحذاق من كبار علماء الاسلام ولا يحابى في ذلك أحدا كائنا من كان ، فتراه يوهم البخاري ومسلما ، ومن دونهما ، ويغلط ابن عبد البر وابن حزم والذهبي وابن حجر والصنعانى ، ويكثر من ذلك حتى يظن الجهلة والسذج من العلماء ان الالباني نبغ في هذا العصرنبوغا يندر مثله

    “শায়েখ নাসীরুদ্দিন আলবানী পৃথিবী বিখ্যাত গভীর পাণ্ডিত্যের অধিকারী আলেমদের ভুল ধরার ব্যাপারে চরম বেপরোয়া। এ পথে তিনি কাউকেই মুক্তি দেননি। আপনি দেখবেন! 
    সে ইমাম বোখারী (রহঃ), ইমাম মুসলিমসহ অপরাপর ইমামদের ব্যাপারে বিরূপ মন্তব্য করে। তিনি যুগশ্রেষ্ঠ আলেম ইবনে আব্দুল বার (রহঃ), ইবনে হাযাম (রহঃ), ইমাম যাহাবী (রহঃ) ইবনে হাজার আসকালানী (রহঃ), ইমাম সানআনী (রহঃ) সহ আরও অনেককে ভুল সাব্যস্ত করার চেষ্টা করেছেন। 
    অথচ অনেক অজ্ঞ এবং সাধারণ আলেম তাঁকে বর্তমান যুগের বিরল ব্যক্তিত্ব মনে করে থাকেন।”



    নাসিরুদ্দিন আলবানীর অন্যান্য বিয়াদ্দবি ও বাতিল মতবাদঃ



    ★ নাসির উদ্দিন আলবানী নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রওজা মুবারক হতে সবুজ গম্ভুজ ভেংগে ফেল এবং নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রওজা শরীফকে মসজিদে নববী হতে বের করার আবেদন করেছিলেন ( সূত্রঃ তাহযিরুজ সাজিদ মিন ইত্তিখাযিল কুবুরি মাসাজিদ, শায়েক আলবানী, পৃ-৯৮।


    নাসির উদ্দিন আলবানীর কিছু কুফরীমূলক আকিদাঃ ( নাউযুবিল্লাহ পাঠ করবেন)


    ★ সালাফী মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা হলেন আল্লাহ তায়াল ( সূত্রঃ ফাতাওয়াল আলবানী ফিল মদীনাতি ওয়াল ইমারত, পৃ-১৮)

    ★ আশ্চর্য হওয়া আল্লাহর একটি সিফত। (কিতাবুশ শায়েখ আলবানী)

    ★ এটা ঈমান রাখো যে আল্লাহ তায়ালা (শুধু) আসমানে রয়েছে। (আল হাবী মিন ফাতাওয়াশ শায়েখ আলবানী,১ম খন্ড ৪৩ পৃ)

    ★ নবীগন যে নিষ্পাপ এটা সাধারণ বা ব্যাপক নয়। (ফাতাওয়াল আলবানী ফিল মাদীনাতি ওয়াল ইমারত,পৃ ১৮)

    ★ নবী-রাসূলগণ বিভিন্ন ধরনের সগীরা গুনাহ ও আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত হয়ে থাকেন। (আল ফাতাওয়াল কুয়্যেতিয়্যা লিল আলবানী,পৃ ২৯)

    ★ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লায়াহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষঅকে যে সমস্ত আয়াত শিখিয়েছেন তা তিনি ভুলে যেতে পারেন। (আল ফাতাওয়াল কুয়্যেতিয়্যা লিল আলবানী,পৃ ৩০)

    ★ নবী করীম সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ওসিলা করে দোয়া করা হারাম ( আহকামুল যানায়েজ ওয়া বিদাউহা, পৃ -২৬৪)

    ★ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম সৃষ্টিকুলের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ নন।( আত তাওয়াসসুল আনওয়াউহু ওয়া আহকামুহু, পৃ-১৪৯)

    ★ নবী করীর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রওজা জিয়ারতের উদ্দশ্যে সফর করা হারাম ( ফাতাওয়াল আলবানী ফিল মদীনাতি ওয়াল ইমারত, পৃ-১২)

    ★ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লম ও অন্য কোন মৃত্যুদের উদ্দশ্যে কোন আমলের সোয়াব প্ররণ করা জায়েজ নয় ( আহাকমুল জানায়েয ওয়া বিদাউহা, শায়েখ আলবানী, পৃ-২৬০-২৬১)

    ★ জুমার দিনে 'ইন্নাল্লাহা ওয়ামালাইকাতাহু' এই আয়াত শরীফ পাঠ করা জায়েজ নয় এবং এটি একটি বেদাত ( আল আজউইবাতুন নাফেয়া, শায়েক আলবানী,পৃ-৬৭)


    সোমবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৬

    সাহাবীদের যামানায় নামাজের পর সম্মিলিত মুনাজাতঃ










    (শেয়ার / কপি করার বিনীত অনুরোধ)
    ________________________________________
    ইমাম আবু আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইসহাক আল ফাকিহী রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
    ফজরের সালাতের পর (মক্কা শরীফে) মসজিদে হারামে ওয়ায়েজ (যিনি কোর’আন, হাদীস থেকে বিভিন্ন কিসসা বর্ণনা করতেন) দাঁড়িয়ে যেতেন এবং আল্লাহর যিকির করতেন এবং দোয়া করতেন এবং (উপস্থিত) মানুষ আমিন আমিন বলতেন। আর এটা হত মাকামে ইবরাহীমের পেছনে , ইমামের সালাম ফেরানোর পর।
    আর এটা সর্বপ্রথম শুরু করেছিলেন উবাইদ বিন উমাইর বিন কাতাদাহ আল লাইছি রাদিয়াল্লাহু আনহু।এরপর থেকে এ আমল চলছিল।
    রেফারেন্সঃ
    আখবারু মাক্কাহ লিল ফাকিহী-২/৩৮৮
    উবাইদ বিন উমাইর বিন কাতাদাহ আল লাইছির পরিচিতিঃ
    যিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময় জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন বিশিষ্ট ওয়ায়েজ এবং মুফাসসির। তিনি ছিলেন নির্ভরযোগ্য তাবেয়ীগণের একজন। সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর মজলিসে বসতেন।
    রেফারেন্সঃ
    সিয়ারু আ’লামিন নুবালা-৪/১৫৬
    আবু আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইসহাক আল ফাকিহীর পরিচিতিঃ
    ইমাম যাহাবী রাহিমাহুল্লাহ তাঁর সম্পর্কে বলেন, তিনি একজন ইমাম ছিলেন। তিনি ছিলেন ইমাম বাইহাকীর দাদা উসতাদ।
    (দেখুন, সিয়ার-আত তাবাকাতুল ইশরূন)
    __________________________
    পর্যালোচনাঃ
    • নামাজের পর সম্মিলিত দোয়া শুরু হয়েছিল সাহাবায়ে কেরামের সময় থেকে।
    • এটা শুরু করেছিলেন একজন বিশিষ্ট তাবেয়ী যার নির্ভরযোগ্যতার উপর সকলেই একমত।
    • যিনি এই আমল শুরু করেছিলেন, তাঁর এমন মজলিসে সাহাবায়ে কেরাম উপস্থিত থাকতেন।
    • এ সুন্দর আমলটি চালু হয়েছিল স্বয়ং মক্কা শরীফে, মাকামে ইবরাহীমের পিছনে।
    • সালাতের পর এমন সম্মিলিত দোয়াতে তাদের সম্মতি ছিল বিধায় কোন সাহাবায়ে কেরাম এর কোন বিরোধিতা করেন নাই। সাহাবী আব্দুল্লাহ বিন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু স্বয়ং তাঁর মজলিসে বসতেন, তিনিও এমন সম্মিলিত দোয়ার বিরোধিতা করেন নাই।
    • নামাজের পর সম্মিলিত দোয়া সাহাবীদের এবং তাবেয়গণের আমল হিসেবে প্রমাণিত। বেদ’আত বলার কোন সুযোগ নেই।
    • যারা নামাজের পর সম্মিলিত দোয়াকে বেদ’আত বলে, এটা তাদের অজ্ঞতার পরিচয়।
    • আলহামদু লিল্লাহ, আমরা সাহাবায়ে কেরাম এবং তাবেয়ীগণকে অনুসরণ করছি।

    সাহাবায়ে কেরামের যুগে নামাজের পর সম্মিলিত দোয়াঃ





    (কপি / শেয়ার করবেন)
    ____________________________
    সাহাবীর পরিচয়ঃ
    ____________ 
    আল আলা বিন আল হাদরামী রাদিয়াল্লাহু আনহু ।
    উনি এমন এক সাহাবী ছিলেন যাকে মুসতাজাবুদ দা’ওয়াহ বলা হত কারণ তিনি দোয়া করলে আল্লাহ তা কবুল করতেন।
    আলোচনাঃ
    _______________________ 
    ঘটনা সংক্ষেপ করে মূল কথাটি বলার চেস্টা করছি।
    হযরত আবু বকর ছিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু এর খেলাফত আমলে মুরতাদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য হযরত আলা হাযরামী রাদিয়াল্লাহু আনহু কে মুজাহিদদের কমান্ডার বানিয়ে বাহরাইন পাঠালেন। একটি শুষ্ক ময়দান অতিক্রম করার সময় সকলে প্রচন্ড পিপাসার্ত হয়ে পরলেন। সবার পাত্র খালি। পানি নেই।
    দাহনা নামক স্থানে সকলে রাত্রি যাপন করলেন। এক পর্যায়ে আলা বিন আল হাযরামী রাদিয়াল্লাহু আনহু সকলকে ডাকলেন। হযরত আবু হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু ও তাদের সাথে ছিলেন। সবাই তখন চিন্তায় কাতর ছিলেন। আলা রাদিয়াল্লাহু আনহু সবাইকে শান্তনা দিলেন, বললেন, তোমরা মুসলমান। আল্লাহর পথে বের হয়েছো। আল্লাহর কসম, তোমরা কখনো লাঞ্ছিত হবেনা।
    ফজরের সময় হলো। 
    সকল সাহাবায়ে কেরাম তায়াম্মুম করে ( তায়াম্মুমের কথাটি ইমতাউল আসমা কিতাবে রয়েছে) সালাত আদায় করলেন। সালাত আদায়ের পর হযরত আলা বিন আল হাদরামী রাদিয়াল্লাহু আনহু হাত তোলে পানির জন্য দোয়া করলেন। (হাত তোলার বর্ণনা তারীখে তাবারীতে রয়েছে) এবং সকল সাহাবায়ে কেরাম তাঁর সাথে দোয়া করলেন। (আল্লাহ তাদের দোয়া কবুল করলেন) দোয়া শেষে তারা পানি দেখতে পেলেন। সকলেই সেদিকে ছুটলেন এবং পানি পান ও গোসল সারলেন।
    রেফারেন্সঃ
    _________________ 
    • এ ঐতিহাসিক ঘটনাটি নামধারী আহলে হাদীসদের শায়েখ (তাদের দাবী অনুসারে) ইবনু কাসীর তাঁর আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ গ্রন্থে (৬/৩৭০) উল্লেখ করেছেন। 
    • একই ঘটনা বিশ্ববিখ্যাত ইমাম, মুফাসসির, ঐতিহাসিক, ইবনু জারীর তাঁর তারীখে তাবারীতে ২য় খন্ডের ৫২২ পৃষ্টায় উল্লেখ করেছেন।
    • একই ঘটনা ইমাম মিকরিযী তাঁর ইমতাউল আসমা নামক বিখ্যাত কিতাবে (৫/২৯১) উল্লেখ করেছেন।
    • একই ঘটনা ঐতিহাসিক মুহাম্মাদ রিদা তাঁর আবু বকর সিদ্দীক আউয়ালু খুলাফাইর রাশিদীন নামক কিতাবে ( পেইজঃ১০০) উল্লেখ করেছেন। 
    • একই ঘটনা সালাফীদের হাতে গড়া ডক্টর সায়্যিদ বিন আল হুসাইন আল আফফানী তাঁর বিখ্যাত কিতাব ফুরসানুন নাহার মিনাস সাহাবাতিল আখইয়ার (৫/১২২) এ উল্লেখ করেছেন।
    চাপাবাজিঃ
    ______________________ 
    নামধারী আহলে হাদীসরা এ ঘটনাকে সরাসরি অস্বীকার করতে না পেরে বলে, এ ঘটনাটি সনদ বিহীনভাবে বর্ণিত হয়েছে, সুতরাং এটি দিয়ে দলীল দেয়া যাবেনা।
    জবাবঃ
    _____________________ 
    • নামধারী চাপাবাজ আহলে হাদীস নামক ভন্ডরা এখানে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। মিথ্যা ধোঁকা দিয়ে সত্যকে ঢাকার বৃথা চেস্টা করেছে। অবশ্যই এ ঘটনার সনদ এর উল্লেখ রয়েছে। তারীখে তাবারী খুলুন, দেখবেন পরিস্কারভাবে এর সনদ সেখানে রয়েছে। 
    • সালাফীরা নিজেদেরকে নিয়ে গর্ব করে, তারা নাকি জাল হাদীস কখনো বলেনা। তো তারাই তো দাবী করে, ইমাম ইবনু কাসীর সালাফী আকীদার লোক ছিলেন। তাহলে তাদের (তাদের দাবী অনুসারে) শায়েখ ইবনু কাসীর কীভাবে এই জাল কথাটিকে সাহাবীদের নামে তাঁর কিতাবে চালিয়ে দিলেন?
    মূলতঃ বিষয়টি এমন নয়। তাঁর পূর্বে এঘটনার সনদ সহ বর্ণিত হয়েছে। তিনি যদিও তাঁর কিতাবে সনদের উল্লেখ করেন নাই, কিন্তু এ ঘটনা নিয়ে তিনি কোন সমালোচনা করেননাই। তাঁর মানে তিনি এটিকে সমর্থন করেছেন। যদি এটা জাল হত, তবে তিনি সেটা তাঁর কিতাবে উল্লেখ করতেন না, কিংবা উল্লেখের পর এর সমালোচনা করতেন। মোট কথা, ইবনু কাসীরের নিকট এটি গ্রহণযোগ্য ঘটনা ছিল। 
    • এ ঘটনাটি যদি সনদ বিহীন বর্ণনা হয়ে থাকে, তবে তো এটির কোন ভিত্তি থাকার কথা নয়। তাহলে সালাফী, লা-মাযহাবীদের শায়েখরা তাদের কিতাবে এটিকে কোন সমালোচনা ছাড়াই উল্লেখ করেছেন? ডক্টর আফফানী তো তাদেরই হাতে গড়া লোক। আলবানীর আকীদার লোক। সালাফী শায়েখদের নিকট থেকে তা’লীম নিয়েছেন। তো তিনি কেন তাঁর কিতাবে এ ঘটনাটি কোনরূপ সমালোচনা ছাড়াই উল্লেখ করলেন? অবশ্যই এটি তাঁর নিকট গ্রহনযোগ্য ছিল বিধায় তিনি উল্লেখ করেছেন।
    • সুতরাং নামধারী আহলে হাদীসরা একটি গ্রহনযোগ্য ঘটনাকে বিজের ঘৃণ্য স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য সনদ বিহীন বলে উড়িয়ে দিতে চাইছে। এটি তাদের নির্লজ্জ মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়। আসলে এটি তাদের চরিত্র। এটি নতুন কিছু নয়। এমন অনেক মিথ্যাচার তারা আরো করেছে। প্রমাণের কোন অভাব নেই। নিজেদের স্বার্থ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনে তাদের নিজেদের শায়েখেদের লাথি মারতে দ্বিধা বোধ করেনা। 
    অদ্ভূত চরিত্র এই কথিত, নামধারী, ফেতনাবাজ আহলে হাদীসরা!

    ফরজ নামাযের পর সম্মিলিত মুনাজাত কি বিদআত?






    প্রশ্নঃ


    ১)ফজরের নামাজের পর সুরা হাশরের যে আয়াত গুলো পাঠ করা হয় তার একটি প্রচলিত পদ্ধতি হলো ইমাম পিছন ফিরে বসে দোয়া দরুদের পর উচ্চস্বরে আয়াত গুলো একটু একটু করে পাঠ করে আর মুসল্লীরা শুনে শুনে পরমুহুর্তে পাঠ করেl
    এটা কি শরীয়ত সম্মত পদ্ধতি ?

    ২)
    (ক) জামাতের সাথে ফরজ নামাজের পর যে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা হয় তা কি শরীয়ত সম্মত?

    (খ) রাসুল স: বা সাহাবাগণ কি এমনটা করতেন?

    [বি:দ্র: আমি কোন ইমামকে কখনোই মুনাজাত ছাড়তে দেখিনিl
    এটা সম্ভবত অনেকেই আবশ্যক মনে করে]

    উত্তর

    وعليكم السلام ورحنة الله وبركاته

    بسم الله الرحمن الرحيم

    ১ম প্রশ্নের জবাব

    এতে খারাপের কিছুই নেই। এটি ইমাম সাহেবগণ করে থাকেন মুসল্লিদের শিক্ষাদানের জন্য। কারণ অনেক মুসল্লিই সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পড়তে জানে না। তাই ইমাম সাহেব এভাবে বলে বলে পড়িয়ে দেন। সুতরাং এটি নাজায়েজ হবার কোন শরয়ী কারণই বিদ্যমান নেই।

    ২য় প্রশ্নের জবাব

    ফরজ নামাযের পর মুনাজাতের বিষয় বুঝতে হলে তিনটি পয়েন্ট ভাল করে বুঝতে হবে। যথা-



    ফরজ নামাযের পর মুনাজাত প্রমাণিত কি না?



    সম্মিলিত মুনাজাত প্রমাণিত কি না?



    ফরজ নামাযের পর সম্মিলিত মুনাজাতের হুকুম কী?

    ১ম বিষয়

    ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করা একাধিক সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। যেমন-

    ক)

    وَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ، إِذَا صَلَّيْتَ فَقُلْ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الخَيْرَاتِ، وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ، وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ،

    হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, হে মুহাম্মদ! যখন তুমি নামায পড়ে ফেলবে, তখন এ দুআ করবে- হে আল্লাহ!আপনার নিকট ভাল কাজের তৌফিক চাই এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে সাহায্য চাচ্ছি এবং আপনার দরবারের মিসকীন তথা আল্লাহ ওয়ালাদের মুহাব্বত কামনা করছি। {সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৩২৩৩}

    খ)

    ইমাম বুখারী রহঃ স্বীয় কিতাব আততারীখুল কাবীরে এনেছেন-

    عَنْ كاتب المغيرة رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدْعُو في دبر صلاته

    হযরত মুগিরা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ নামায শেষে দুআ করতেন। {আততারীখুল কাবীর, হাদীস নং-১৭৭২, ৬/৮০}

    গ)

    عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: كَانَ مَقَامِي بَيْنَ كَتِفَيْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَكَانَ إِذَا سَلَّمَ قَالَ: «اللَّهُمَّ اجْعَلْ خَيْرَ عُمُرِي آخِرَهُ، اللَّهُمَّ اجْعَلْ خَوَاتِيمَ عَمَلِي رِضْوَانَكَ، اللَّهُمَّ اجْعَلْ خَيْرَ أَيَّامِى يَوْمَ أَلْقَاكَ»

    হযরত আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ছিলাম রাসূল সাঃ এর কাঁধের পাশে। তখন রাসূল সাঃ সালাম ফিরিয়ে বললেন, হে আল্লাহ! তুমি আমার শেষ জীবনকে সবচে’ সুন্দর কর। হে আল্লাহ! তুমি আমার শেষ আমলকে তোমার সন্তুষ্টি অনুপাতে কর। হে আল্লাহ! তুমি তোমার সাথে আমার সাক্ষাতের দিনকে সর্বোত্তম দিন কর। {আলমুজামুল আওসাত লিততাবারানী, হাদীস নং-৯৪১১}

    ঘ)

    হযরত সাদ রাঃ বলেন,

    وَيَقُولُ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَتَعَوَّذُ بِهِنَّ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلَاةٍ «اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبُخْلِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْجُبْنِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ أَنْ أُرَدَّ إِلَى أَرْذَلِ الْعُمُرِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الدُّنْيَا، وَعَذَابِ الْقَبْرِ»

    রাসূল সাঃ প্রতি নামাযের পর এই শব্দে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইতেন, “হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে কৃপণতা থেকে পানাহ চাই। এবং অভাব থেকে পানাহ চাই এবং অশীতিপর বৃদ্ধাবস্থা থেকে পানাহ চাই এবং দুনিয়ার ফিতনা ও কবরের আজাব থেকে পানাহ চাই। {সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৫৪৭৯}

    ঙ)

    مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي يَحْيَى، قَالَ: رَأَيْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ الزُّبَيْرِ وَرَأَى رَجُلًا رَافِعًا يَدَيْهِ بِدَعَوَاتٍ قَبْلَ أَنْ يَفْرُغَ مِنْ صَلَاتِهِ، فَلَمَّا فَرَغَ مِنْهَا، قَالَ: «إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَكُنْ يَرْفَعْ يَدَيْهِ حَتَّى يَفْرُغَ مِنْ صَلَاتِهِ

    হযরত মুহাম্মদ বিন আবী ইয়াহইয়া বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ বিন জুবায়ের রাঃ কে দেখলাম। তিনি এক ব্যক্তিকে নামাযের ভিতরে হাত তুলে দুআ করছেন। যখন লোকটি নামায শেষ করল। তখন তিনি তাকে বললেন, নিশ্চয় রাসূল সাঃ নামায শেষ করার আগে হাত তুলে দুআ করতেন না। {আলমুজামুল কাবীর লিততাবরানী, হাদীস নং-৩২৪}

    এছাড়া আরো অসংখ্য হাদীস রয়েছে যা প্রমাণ করে রাসূল সাঃ ফরজ নামাযের পর হাত তুলে দুআ করতেন।

    ২য় বিষয়

    পূর্বের আলোচনা দ্বারা পরিস্কার হয়ে গেল যে, রাসূল সাঃ ফরজ নামায শেষে হাত তুলে দুআ করতেন। এখন প্রশ্ন হল, রাসূল সাঃ ও সাহাবায়ে কেরাম রাঃ থেকে সম্মিলিতভাবে দুআ করা প্রমাণিত কি না?

    নিচে কয়েকটি হাদীস দেয়া হল। যা পরিস্কারভাবে সম্মিলিত দুআ করা ও সম্মিলিত দুআর প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে।



    أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، قَالَ: أَتَى رَجُلٌ أَعْرَابِيٌّ مِنْ أَهْلِ البَدْوِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَلَكَتِ المَاشِيَةُ، هَلَكَ العِيَالُ هَلَكَ النَّاسُ، «فَرَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَيْهِ، يَدْعُو، وَرَفَعَ النَّاسُ أَيْدِيَهُمْ مَعَهُ يَدْعُونَ»

    হযরত আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা একজন গ্রাম্য সাহাবী রাসূল সাঃ এর কাছে আসলেন জুমআর দিন। এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! জিনিস পত্র, পরিবার, মানুষ সবই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। একথা শুনে রাসূল সাঃ তার উভয় হাত উত্তলোন করলেন দুআর উদ্দেশ্যে। উপস্থিত সবাই রাসূল সাঃ এর সাথে দুআর জন্য হাত উত্তোলন করলেন। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১০২৯}

    এ হাদীসে পরিস্কারভাবে রাসূল সাঃ থেকে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত প্রমানিত। লক্ষ্য করুন। রাসূল সাঃ দুআ করেছেন, আর উপস্থিত সাহাবীগণ আমীন আমীন বলে সম্মিলিত মুনাজাতে অংশ নিয়েছেন।



    عَنْ حَبِيبِ بْنِ مَسْلَمَةَ الْفِهْرِيِّ – وَكَانَ مُسْتَجَابًا -: أَنَّهُ أُمِّرَ عَلَى جَيْشٍ فَدَرِبَ الدُّرُوبِ، فَلَمَّا لَقِيَ الْعَدُوَّ قَالَ لِلنَّاسِ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – يَقُولُ: ” «لَا يَجْتَمِعُ مَلَأٌ فَيَدْعُو بَعْضُهُمْ وَيُؤَمِّنُ سَائِرُهُمْ، إِلَّا أَجَابَهُمُ اللَّهُ» “.

    ثُمَّ إِنَّهُ حَمِدَ اللَّهَ، وَأَثْنَى عَلَيْهِ، وَقَالَ: اللَّهُمَّ احْقِنْ دِمَاءَنَا، وَاجْعَلْ أُجُورَنَا أُجُورَ الشُّهَدَاءِ،

    رَوَاهُ الطَّبَرَانِيُّ وَقَالَ: الْهَنْبَاطُ بِالرُّومِيَّةِ: صَاحِبُ الْجَيْشِ. وَرِجَالُهُ رِجَالُ الصَّحِيحِ غَيْرَ ابْنِ لَهِيعَةَ، وَهُوَ حَسَنُ الْحَدِيثِ.

    হযরত হাবীব বিন মাসলামা আলফিহরী রাঃ। যিনি মুস্তাজাবুদ দাওয়া ছিলেন। তাকে একবার একটি বাহিনী প্রধান নিযুক্ত করা হয়। যুদ্ধের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের পর তিনি যখন শত্রুর সম্মুখিন হলেন। তখন লোকদের বললেন, আমি রাসূল সাঃ কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন “যখনি কোন দল একত্র হয়, তারপর তাদের কথক দুআ করে, আর অপরদল আমীন বলে তখন আল্লাহ তাআলা তা কবুল করে নেন”।

    এ হাদীস বলার তিনি [হাবীব বিন মাসলামা রাঃ] হামদ ও সানা পড়লেন। তারপর বললেন, হে আল্লাহ! তুমি আমাদের প্রাণ রক্ষা কর। আর আমাদের শহীদের সওয়াব দান কর।

    {মাযমাউজ যাওয়ায়েদ, হাদীস নং-১৭৩৪৭, মুস্তাতাদরাক আলাস সহীহাইন, হাদীস নং-৫৪৭৮, আলমুজামুল কাবীর, হাদীস নং-৩৫৩৬}

    আল্লামা হায়ছামী রহঃ বলেন, উক্ত হাদীসের সূত্রের প্রতিটি রাবী সহীহের রাবী। ইবনে লাহিয়াহ ছাড়া। কিন্তু সেও হাসান পর্যায়ের রাবী। {মাযমাউয যাওয়ায়েদ-১৭৩৪৭}



    আরো একটি হাদীস উদ্ধৃত করছি। যা আলবিদায়া ওয়াননিহায়া গ্রন্থে আল্লামা ইবনে কাসীর রহঃ সনদসহ বর্ণনা করেছেন।

    যার সারমর্ম হল,আলা বিন হাযরামী রাঃ। মুস্তাজাবুদ দাওয়া সাহাবী ছিলেন। একদা বাহরাইনের জিহাদ থেকে ফেরার পথে এক স্থানে যাত্রাবিরতি করলে খাবার দাবার ও তাবুর রসদসহ উটগুলো পালিয়ে যায়। তখন গভীর রাত। সবাই পেরেশান। ফজরের সময় হয়ে গেলে আজান হল। সবাই নামায আদায় করলেন। নামায শেষে আলা বিন হাযরামী রাঃ সহ সবাই হাত তুলে সূর্য উদিত হওয়ার সূর্যের কিরণ গায়ে লাগা পর্যন্ত দীর্ঘ সময় দুআ করতে থাকেন। {আলবিদায়া ওয়াননিহায়া-৬/৩২৮-৩২৯}

    উক্ত ঘটনাটির পূর্ণ বিবরণের আরবী পাঠ

    وَقَدْ كَانَ الْعَلَاءُ مِنْ سَادَاتِ الصَّحابة الْعُلَمَاءِ العبَّاد مُجَابِي الدَّعوة، اتَّفق لَهُ فِي هَذِهِ الْغَزْوَةِ أنَّه نَزَلَ مَنْزِلًا فَلَمْ يَسْتَقِرَّ النَّاس عَلَى الْأَرْضِ حَتَّى نَفَرَتِ الْإِبِلُ بِمَا عَلَيْهَا مِنْ زَادِ الْجَيْشِ وَخِيَامِهِمْ وشرابهم، وبقوا على الأرض ليس معهم شئ سِوَى ثِيَابِهِمْ – وَذَلِكَ لَيْلًا – وَلَمْ يَقْدِرُوا مِنْهَا عَلَى بَعِيرٍ وَاحِدٍ، فَرَكِبَ النَّاس مِنَ الهمِّ والغمِّ مالا يُحَدُّ وَلَا يُوَصَفُ، وَجَعَلَ بَعْضُهُمْ يُوصِي إِلَى بَعْضٍ، فَنَادَى مُنَادِي الْعَلَاءِ فَاجْتَمَعَ النَّاس إِلَيْهِ، فَقَالَ: أيُّها النَّاس أَلَسْتُمُ الْمُسْلِمِينَ؟ أَلَسْتُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ؟

    أَلَسْتُمْ أَنْصَارَ اللَّهِ؟ قَالُوا: بَلَى، قَالَ: فَأَبْشِرُوا فَوَاللَّهِ لَا يَخْذِلُ اللَّهُ مَنْ كَانَ فِي مِثْلِ حَالِكُمْ، وَنُودِيَ بِصَلَاةِ الصُّبح حِينَ طَلَعَ الْفَجْرُ فصلَّى بالنَّاس، فلمَّا قَضَى الصَّلاة جَثَا عَلَى رُكْبَتَيْهِ وَجَثَا النَّاس، وَنَصِبَ فِي الدُّعاء وَرَفَعَ يَدَيْهِ وَفَعَلَ النَّاس مِثْلَهُ حَتَّى طَلَعَتِ الشَّمْسُ، وَجَعَلَ النَّاسُ يَنْظُرُونَ إِلَى سَرَابِ الشَّمْسِ يَلْمَعُ مَرَّةً بَعْدَ أُخْرَى وَهُوَ يَجْتَهِدُ فِي الدُّعَاءِ



    عَنْ سَلْمَانَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا رَفَعَ قَوْمٌ أَكُفَّهُمْ إِلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ يَسْأَلُونَهُ شَيْئًا، إِلَّا كَانَ حَقًّا عَلَى اللهِ أَنْ يَضَعَ فِي أَيْدِيهِمُ الَّذِي سَأَلُوا

    হযরত সালমান রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যখন কোন জামাআত তাদের প্রয়োজন পূর্ণ করার আশায় আল্লাহর দরবারে হাত উঠায়, তখন আল্লাহর উপর হক হল প্রার্থিত বিষয় উক্ত জামাতকে প্রদান করা। {আলমুজামুল কাবীর লিততাবরানী, হাদীস নং-৬১৪২, আততারগীব ওয়াত তারহীব, হাদীস নং-১৪৪, মাযমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস নং-১৭৩৪১, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-৩১৪৫}

    আল্লামা হায়ছামী রহঃ বলেন, এ হাদীসের সনদের সকল রাবীগণ সহীহের রাবী।{ মাযমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস নং-১৭৩৪১}


    এরকম আরো অসংখ্য বর্ণনা প্রমাণ করে সম্মলিত মুনাজাত এটি দুআ কবুলের আলামত। সেই সাথে উত্তম আমল। যা কিছুতেই বিদআত হতে পারে না। যে সম্মলিত মুনাজাত রাসূল সাঃ নিজে করেছেন সাহাবীদের নিয়ে, সাহাবায়ে কেরাম সাথিবর্গকে নিয়ে যে সম্মলিত মুনাজাত করেছেন, তা কী করে বিদআত হতে পারে?

    সুতরাং বুঝা গেল যে, সম্মিলিত মুনাজাত করাও রাসূল সাঃ এবং সাহাবায়ে কেরাম রাঃ থেকে প্রমাণিত। সেই সাথে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করতে রাসূল সাঃ পরিস্কার ভাষায় উৎসাহ প্রদান করেছেন।


    ৩য় বিষয়

    আসলে পূর্বের দু’টি বিষয় পরিস্কার হবার পর আপনি নিজেই এর সমাধান বের করে নিতে পারেন। নামাযের পর দুআ রাসূল সাঃ নিজে করেছেন। আর সম্মিলিত দুআ কবুল হয় মর্মে রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন। তিনি নিজেও সম্মিলিতভাবে দুআ করেছেন।

    সুতরাং ফরজ নামাযের পর দুআ করলে সেটি বিদআত হবে কিভাবে?





    সম্মিলিত ভাবে দোয়া করা কি শরীয়তস্মত নাকি বিদাত?






    তারাবীহ এর সালাতে খতমে কোর'আনের পর এর পর নামাজের ভেতর দোয়া করাঃ 



    তারাবীহ এর সালাতে খতমে কোর'আনের পর এর পর নামাজের ভেতর দোয়া করাঃ 
    (শেয়ার / কপি করার অনুরোধ থাকলো)
    __________________________ 
    আপনারা সকলে জানেন, বিশেষ করে মক্কা মুকাররামায় মসজিদে হারামে এবং মদীনা মুনাওওয়ারায় মসজিদে নববীতে রামাদান মাসে খতমে তারাবীহ/ খতমে কোর’আনের পর ইমাম সাহেব নামাজের ভেতর দীর্ঘ দোয়া করে থাকেন। 
    প্রশ্ন হচ্ছে, সালাতে খতমে কোর’আনের পর এভাবে দোয়া করার দলীল কী? এরকম দোয়া কি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করেছেন?
    উত্তরঃ জী না। করেন নাই।
    প্রশ্ন হচ্ছে, এ রকম দোয়া কি সাহাবায়ে কেরাম করেছেন? 
    উত্তর জী না। কোন প্রমাণ নেই।
    মূলতঃ এই উত্তরগুলো কিন্তু লা-মাযহাবীদের শয়েখদের নিকট থেকে সংগ্রহ করে বলছি। তার মানে এটা লা-মাযহাবী, নামধারী আহলে হাদীসদের নিকট পরিস্কার বেদ’আত। 

    সউদী গ্র্যান্ড মুফতী বিন বাযের ফতোয়াঃ 
    সঊদী আরবের ফতোয়া বিভাগের সাবেক প্রধান মুফতী, লা-মাযহাবীদের এই দাবী মেনে নিয়েই তারপর ফতোয়া দিয়েছেন, যদিও এর প্রমাণ সরাসরি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরাম থেকে নেই, তবুও এটি মুসতাহাব। 


    বিন বায তাঁর ফতোয়ায় বলেছেন, 
    فالحاصل أن هذا لا بأس به إن شاء الله ولا حرج فيه بل هو مستحب لما فيه من تحري إجابة الدعاء بعد تلاوة كتاب الله عز وجل،
    মোট কথা হচ্ছে, সালাতে খতমে কোর’আনের পর দোয়া করাতে কোন অসুবিধা নেই। ইনশা আল্লাহ। এতে কোন বাধাও নেই বরং এটা মুসতাহাব। কারণ, কোর’আন তেলাওয়াতের পর দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়। 

    এরপর তিনি বলেছেন,
    وإنما الكلام إذا كان في داخل الصلاة، أما في خارج الصلاة فلا أعلم نزاعاً في أنه مستحب الدعاء بعد ختم القرآن، لكن في الصلاة هو الذي حصل فيه الإثارة الآن والبحث فلا أعلم عن السلف أن أحداً أنكر هذا في داخل الصلاة
    কথা হচ্ছে নামাজের ভেতরে দোয়া নিয়ে। নামাজের বাইরে এমন খতমে কোর’আনের পর দোয়া যে মুসতাহাব-এটা নিয়ে আমি কোন ইখতেলাফ আছে বলে আমি জানিনা। 
    কিন্তু নামাজের ভেতরে এমন দোয়া, যা নিয়ে এখন আলোচনা হচ্ছে, আমি জানিনা, সালাফে সালিহীনের কেউ নামাজের ভেতরে এটাকে অস্বীকার করেছেন। 

    এরপর তিনি বলেছেন,
    لأن الدعاء مشروع في الصلاة وخارجها 
    কেননা নামাজের মধ্যে ও বাইরে আমভাবে দোয়া করা শরীয়ত সম্মত। 

    এরপর তিনি বলেছেন,
    وجنس الدعاء في الصلاة معروف من النبي عليه الصلاة والسلام في صلاة الليل فينبغي أن يكون هذا من جنس ذاك.
    রাতের নামাজে, নামাজের ভেতরে দোয়া করা রাসুল সাল্লাল্লাহু লাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে মা’রূফ। (দলীল বিদ্যমান) সুতরাং তারাবীহর সালাতে খতমে কোর’আনের পর দোয়া ও সেই দোয়ার অন্তর্ভুক্ত।

    রেফারেন্সঃ
    ফাতাওয়া বিন বায- ৩০/৩৫ 
    মাজমু উ ফাতাওয়া ওয়ার রাসাইল- ১৩তম খন্ড 


    ফতোয়াটির পর্যালোচনা এবং নামাজের পর সম্মিলিত দোয়াঃ 
    ______________________________ 
    খতমে কোর’আনের পর যে দোয়া রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরাম করেন নাই, সেটাকে মুফতী বায মুসতাহাব বলে ফতোয়া দিয়েছেন যেসব কারণেঃ

    প্রথম কারণঃ 
    কোর’আন তেলাওয়াতের পর দোয়া কবুল হয়, তাই এমন খতমে কোর’আনের পর দোয়া করা মুসতাহাব। 

    * ফরজ নামাজের পর সম্মিলিত দোয়া- 
    এই যদি মুসতাহাব হওয়ার দলীল হয়ে থাকে। তবে একই দলীলে ফরজ নামাজের পর সম্মিলিত ভাবে দোয়া ও মুসতাহাব হয়। 
    কারণ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 
    عن أبي أمامة قال قيل لرسول الله صلى الله عليه سلم : أي الدعاء أسمع قال جوف الليل الآخر ودبر الصلوات المكتوبات 
    হযরত আবু উমামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো, কোন দোয়া অধিক মকবুল হয় (আল্লাহর দরবারে)? তিনি বললেন, শেষ রাতে এবং ফরজ নামাজের পর।
    তিরমিযি-৫/৫২৬, ইমাম তিরমিযি বলেছেন, হাদীসটি হাসান। 

    দ্বিতীয় কারণঃ 
    সালফে সালিহীন এমন দোয়াকে অস্বীকার করেন নাই, তাই এটা মুসতাহাব।

    * ফরজ নামাজের পর সম্মিলিত দোয়া- 
    এই যদি নামাজে খতমে কোর’আনের পর সম্মিলিতভাবে দোয়া মুসতাহাব হওয়ার দলীল হয়, তবে একই দলীলে ফরজ নামাজের পর সম্মিলিত ভাবে দোয়া ও মুসতাহাব হবে। কারণ সাহাবীগণ ফরজ নামাজের পর সম্মিলিত দোয়া করেছেন। মাকামে ইবরাহীমের পেছনে প্রতিদিন ফজর নামাজের পর সম্মিলিতভাবে দোয়া হত। সাহাবায়ে কেরাম উপস্থিত থাকতেন। যেমনটি বিখ্যাত ইমাম ফাকিহী তাঁর আখবারু মাক্কাহ তে উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া আলা বিন হাদরামী রাদিয়াল্লাহু আনহু সাহাবাদেরকে নিয়ে ফরজ নামাজের পর সম্মিলিত দোয়া করেছেন, যেমনটি লা-মাযহাবী স্কলার ডক্টর তাঁর ফুরসানুন নাহারে হাদিসটি উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও আরো বিভিন্ন কিতাবে তা উল্লেখ করা হয়েছে। 
    কোন সাহাবায়ে কেরাম এমন সম্মিলিত ভাবে দোয়া করার প্রতিবাদ করেন নাই, অস্বীকার করেন নাই। 
    তাই নিঃসন্দেহে এটিও মুসতাহাব বলে প্রমাণিত হলো। 


    তৃতীয় কারণঃ
    নামাজের ভেতরে এবং বাইরে আমভাবে দোয়া শরীয়ত সম্মত। তাই এটা মুসতাহাব।

    * ফরজ নামাজের পর সম্মিলিত দোয়া- 
    এই যদি নামাজে খতমে কোর’আনের পর সম্মিলিত ভাবে দোয়া মুসতাহাব হওয়ার দলীল হয়, তবে একই দলীলে ফরজ নামাজের পর সম্মিলিত ভাবে দোয়া মুসতাহাব হবে। অনেক দলীল রয়েছে। প্রথম কারণের আলোচনায় তিরমিযীর হাদীসটি তন্মধ্যে একটি।
    সুতরাং এই কারণের উপর ভিত্তি করে নিঃসন্দেহে ফরজ নামাজের পর সম্মিলিত ভাবে দোয়া মুসতাহাব। 

    চতুর্থ কারণঃ
    যেহেতু নামাজের ভেতর দোয়ার “জিনস” টি প্রমাণিত। তাই খতমে কোর’আনের পর নামাজের ভেতর সম্মিলিতভাবে দোয়া করা শরীয়ত সম্মত দোয়ারই অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত। আর তাই এটি মুসতাহাব। 

    * ফরজ নামাজের পর সম্মিলিত দোয়া- 
    জী, এই যদি নামাজের ভেতর খতমে কোর’আনের পর সম্মিলিত ভাবে দোয়া মুসতাহাব হওয়ার দলীল হয়, তবে একই দলীলে ফরজ নামাজের পরও সম্মিলিত ভাবে দোয়া মুসতাহাব হবে। 
    কারণ ফরজ নামাজের পর দোয়ার “জিনস” সম্পূর্ণ ভাবে প্রমাণিত। ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ তাই সহীহ বুখারীতে একটি অধ্যায়ের নাম দিয়েছেন, বাবুদ দোয়া ই বা’দাত তাসলীম। অর্থাৎ নামাজে সালাম ফেরানোর পর দোয়ার অধ্যায়। আমীরুল মু’মিনীন ফিল হাদীস ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী রাহিমাহুল্লাহ এ অধ্যায়ের আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, ইমাম বুখারীর এই নামকরণ, এ অধ্যায় ঐ সকল লোকদের প্রতি জবাব যারা ফরজ নামাজের পর দোয়াকে অস্বীকার করে। দেখুন ফাতহুল বারী। 
    তাহলে, মুফতী বাযের ফতোয়ায়, নামাজের ভেতর দোয়ার “জিনস” টি প্রমাণিত হওয়ায় খতমে কোর’আনের পর নামাজের ভেতর সম্মিলিতভাবে দোয়া করা শরীয়ত সম্মত দোয়ারই অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত হলে ঠিক অনুরূপভাবে ফরজ নামাজের পর দোয়ার “জিনস” টি প্রমাণিত হওয়ায় ফরজ নামাজের পর সম্মিলিতভাবে দোয়া করাও শরীয়ত সম্মত দোয়ারই অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত।


    বিশ্বের বিভিন্নস্থানে ২৫ জন নবীর মাজারের ছবি:




    হজরত আবু জর গিফারি (রা.) প্রিয় নবী (সা.) কে প্রশ্ন করেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! পয়গম্বরদের সংখ্যা কত? তিনি জবাব দিলেন, ১ লাখ ২৪ হাজার। তাদের মধ্যে ৩১৫ জন হচ্ছেন রাসূল। (আহমদ ও শরহে মাকাসিদ)।
    তবে আল কোরআনে যেসব পয়গম্বরের নাম উল্লেখ হয়েছে, তাদের সংখ্যা মাত্র ২৫ জন। তাদের কারও কারও আলোচনা বিভিন্ন সূরায় একাধিক জাগায় স্থান পেয়েছে। আবার কারও কারও নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে। এর সংখ্যা মাত্র ৫টি। কোরআনুল কারিম যেহেতু হেদায়েতের বাণী ও উপদেশগ্রন্থ, তাই অতীতকালের জাতি ও সম্প্রদায়ের ঘটনাবলি, তাদের ভালো-মন্দ আমল ও তার পরিণতি বর্ণনার ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক ধারা বর্ণনাপদ্ধতি অবলম্বন করা হয়নি। বরং সত্য প্রচারের লক্ষ্যে দাওয়াত প্রদানের মুখ্যতম পন্থাই গ্রহণ করা হয়েছে। যাতে প্রাচীনকালের সম্প্রদায় ও তাদের প্রতি প্রেরিত পয়গম্বরদের আলোচনা বারবার শ্রবণ করার ফলে শ্রোতাদের অন্তরে দৃঢ়ভাবে গেঁথে যেতে পারে এবং তা শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে বেশ উপযোগীও বটে। কোরআনে বর্ণিত ২৫ জন নবীর নাম হলো-

    ১. হজরত আদম (আ.), মোট ৯টি সূরায় ২৫ জায়গায় তার নাম উল্লেখ হয়েছে। 
    ২. হজরত ইদ্রিস (আ.), দুটি সূরায় দু’বার উল্লেখ হয়েছে। 
    ৩. হজরত নুহ (আ.), ২৮টি সূরায় ৪৩ বার উল্লেখিত হয়েছে। 
    ৪. হজরত হুদ (আ.), তিনটি সূরায় সাতবার উল্লিখিত হয়েছে। 
    ৫. হজরত সালেহ (আ.), চারটি সূরায় ৯ স্থানে উল্লেখ হয়েছে। 
    ৬. হজরত ইবরাহিম (আ.), ২৫ সূরায় ৬৯ বার উল্লেখ হয়েছে। 
    ৭. হজরত লুত (আ.), চৌদ্দটি সূরায় ২৭ বার উল্লেখ হয়েছে। 
    ৮. হজরত ইসমাঈল (আ.), আট সূরায় ১২ জাগায় উল্লেখ হয়েছে। 
    ৯. হজরত ইসহাক (আ.), ১২ সূরায় ১৭ বার আলোচিত হয়েছে। 
    ১০. হজরত ইয়াকুব (আ.), ১০টি সূরায় ১৬ বার আলোচিত হয়েছে। 
    ১১. হজরত ইউসুফ (আ.)। তিনটি সূরায় ২৭ বার উল্লেখ হয়েছে। 
    ১২. হজরত শুয়াইব (আ.), চার সূরায় ১১ বার উলি্লখিত হয়েছে। 
    ১৩. হজরত আইয়ুব (আ.), চারটি সূরায় চার জাগায় আলোচিত হয়েছে। 
    ১৪. হজরত যুল কিফল (আ.), দুটি সূরায় দু’বার আলোচিত হয়েছে। 
    ১৫. হজরত মুসা (আ.), ৩৪টি সূরায় ১৩৭ বার আলোচিত হয়েছে। 
    ১৬. হজরত হারুন (আ.), ১৩টি সূরায় ২০ বার আলোচিত হয়েছে। 
    ১৭. হজরত দাউদ (আ.), ৯টি সূরায় ১৬ বার উল্লেখ হয়েছে। 
    ১৮. হজরত সুলাইমান (আ.), সাতটি সূরায় ১৭ বার উল্লেখ হয়েছে। 
    ১৯. হজরত ইলিয়াস (আ.), দুটি সূরায় তিনবার উলি্লখিত হয়েছে। 
    ২০. হজরত ইয়াসা (আ.), দুটি সূরায় দু’বার উল্লেখ হয়েছে। 
    ২১. হজরত ইউনুস (আ.), দুটি সূরায় দু’বার উল্লেখ হয়েছে। 
    ২২. হজরত জাকারিয়া (আ.), চারটি সূরায় সাতবার উল্লেখ হয়েছে। 
    ২৩. হজরত ইয়াইয়া (আ.), চারটি সূরায় পাঁচবার উল্লেখ হয়েছে। 
    ২৪. হজরত ঈসা (আ.), ১১টি সূরায় ২৫ বার উল্লেখ হয়েছে। 
    ২৫. হজরত মুহাম্মাদ (সা.), চারটি সূরায় মাত্র চার জাগায় তাঁর নাম উল্লিখিত হয়েছে। অন্যান্য স্থানে তাঁর গুণবাচক নাম উলি্লখিত হয়েছে। অথবা আইয়ুহান নবী কিংবা আইয়ুহান রাসূল বলে সম্বোধন করা হয়েছে। এটা বিশ্বনবীর সম্মান ও মর্যাদার পরিচয় বহন করে।

    বুধবার, ২০ জানুয়ারী, ২০১৬

    রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর গোলাম বা পীরের গোলাম বলা কি জায়েজ নাকি শিরিক?


    আমাদের সমাজে কিছু মানুষ ওহাবী সালাফীদের কথা শুনে নাচানাচি শুরু করে অথচ তারা কিছু যাচাই বাছাই না করেই একজনকে শিরিক কুফরের অপবাদ দিয়ে দেয় যার পাপ উল্টা তার কাধে পরে।
    অনেকেই প্রশ্ন করে,
    রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর গোলাম বা পীরের গোলাম বলা কি জায়েজ নাকি শিরিক?

    উত্তরঃ

    গোলাম ( غلام ) শব্দের আরবী প্রতিশব্দ হল, خادم (সেবক), عامل (কর্মচারী) প্রভৃতি। অতএব রাসূলের গোলাম বা পীরের গোলাম বা খাদেম, কর্মচারী, সেবক বলাতে কোন আপত্তি নেই। যেমন, 

    ♦ মুসলিম শরীফের ২য় খন্ডের كتاب الالفاظ من الادب -এ বর্ণিত হয়েছে যেঃ-

    لايقولن احدكم عبدي وامتي كلكم عبيد الله وكل نساءكم اماء الله ولكن ليقل غلامي وجاريتي

    অর্থাৎ, নবীজী ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কেউ عبدي (আমার বান্দাহ) বলোনা। তোমরা সবাই আল্লাহ’র বান্দাহ এবং তোমাদের সকল মহিলারা আল্লাহ’র বান্দী। কিন্তু আমার গোলাম আমার চাকরানী বলতে পার।
    ★ সহিহ মুসলিম, আধ্যায় : ৪১ : শব্দচয়ণ ও শব্দ প্রয়োগে শিষ্টাচার : ৫৬৮১। 

    ইফাঃ অনুবাদ থেকেঃ

    ♦ মুহাম্মদ ইবনু রাফি (রহঃ) হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এ হল সে সব হাদীস, যা আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমাদের কাছে রিওয়ায়াত করেছেন। একথা বলে তিনি কয়েকখানি হাদীস উল্লেখ করেছেন। (সে সবের একখানি হল) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেনঃ তোমাদের কেউ (মনিব সমন্ধে এভাবে) বলবে না যে, তোমার রব্বকে পান করাও, তোমার রব্বকে খাবার দাও, তোমার রব্বকে উযু করাও। তিনি আরও বলেনঃ 

    "তোমাদের কেউ (নিজেও) বলেছেনঃ আমার রব্ব বরং বলবে আমার সায়্যিদ- সরদার বা নেতা, আমার মাওলা-মনিব। আর তোমাদের কেউ বলবে না, আমার বান্দা আমার বাঁদী, বরং বলবে, আমার সেবক আমার সেবিকা।"
    (ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক অনুদিত)
    ★ সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), আধ্যায় : ৪১ : শব্দচয়ণ ও শব্দ প্রয়োগে শিষ্টাচার : ৫৬৮১।
    — 
    ব্যাখ্যাঃ
    এখানে সরাসরি গোলাম শব্দটিই ব্যবহার হয়েছে এবং তা ব্যবহারের বৈধতাও দেয়া হয়েছে। সুতরাং কেউ যদি নিজেকে খাদেম বা চাকর বা কর্মচারী অর্থে পীরের গোলাম বলে তা অবশ্যই জায়িয।

    প্রসংগত, হাদীস শরীফে عبدي (আমার বান্দাহ) বলতে নিষেধ করা হয়েছে। কাজেই শরয়ী পরিভাষায় ইবাদাতকারী হিসেবে কেউ তার গোলামকে বা কর্মচারীকে বা খাদেমকে কিংবা কোন মুরীদ নিজেকে পীরের عبد (আবদ তথা বান্দাহ) বলতে পারবে না। কেননা ইবাদতের একমাত্র মালিক আল্লাহ পাকই; এতে সন্দেহ নেই। অন্য যে কাউকেই হোক না কেন, ইবাদাত পাওয়ার যোগ্য বা ইলাহ মনে করলে শিরক হবে; তবে এ অর্থ ছাড়া গোলাম অর্থে যদি عبد (বান্দাহ) শব্দটি কেউ তার কর্মচারী বা খাদেমকে বলে কিংবা কোন মুরীদ নিজেকে গোলাম অর্থে পীরের عبد (বান্দাহ) বলে এতে সমস্যা নেই।

    ♦ আল্লাহ বলেন-

    قل ياعبادي الذين اسرفوا علي انفسهم لاتقنطوا من رحمة الله

    অর্থাৎ, হে নবী! আপনি তাদের কে সম্বোধন করুন, হে আমার বান্দাহগণ, তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ, আল্লাহ’র অনুগ্রহ হতে নিরাশ হয়ো না।
    এ আয়াতেقل ياعبادي (হে আমার বান্দাগণ) এর দু’টি অর্থ প্রকাশ পায়।

    এক, আল্লাহ বলেন- ওহে আমার বান্দাহগণ;
    অথবা
    দুই, হুযুর পাককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, হে নবী আপনি বলুন, হে আমার (অর্থাৎ, আপনার) বান্দাহগণ। এ দ্বিতীয় অর্থে রাসূলুল্লাহ’র বান্দাহ বুঝানো হয়েছে, অর্থাৎ নবীজীর গোলাম এবং উম্মত।

    অনেক বুযুর্গানে দ্বীন দ্বিতীয় অর্থটি গ্রহণ করেছেন। 

    ♦ আল্লামা রুমী মসনবী শরীফে বলেছেন -

    بندہ خود خواند احمد در رشاد * جملہ عالم را بخوان قل یا عباد

    অর্থাৎ, সমগ্র জগতবাসীকে হুযুর স্বীয় বান্দাহ বলেছেন। 

    কুরআন শরীফে দেখুন قل ياعبادي বলা হয়েছে।

    ♦ ইযালাতুল খফা গ্রন্থে শাহ ওলী উল্লাহ সাহেব রাহিমাহুল্লাহ আর রিয়াযুন নফরা ইত্যাদি কিতাবের উদৃতি দিয়ে বলেছেন যে, 
    হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু মিম্বরে দাঁড়িয়ে খুতবা দিতে গিয়ে বলেছিলেন-

    قد كنت مع رسول الله صلي الله عليه وسلم فكنت عبده وخادمه

    অর্থাৎ,আমি হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে ছিলাম। তখন আমি তাঁর বান্দাহ ও খাদেম ছিলাম।
    অতএব, প্রমাণিত হল যে, عبد (বান্দাহ) শব্দটি গোলাম অর্থে আল্লাহকে ছাড়াও ব্যবহার করা যায়।

    ♦ আল্লাহ পাক সুরা তাহরীমের 4 নং আয়াতে সুস্পষ্টভাবে 'মাওলা' শব্দটি নিজেই অন্যদের জন্য ব্যবহার করেছেন।
    যেমন,আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন...

    অবশ্যই মহান আল্লাহ তাঁর [প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা'র] 'মাওলা'।হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালামও তাঁর 'মাওলা' এবং নেককার ঈমানদারগণও তাঁর 'মাওলা'।এছাড়া ফিরিশতাগণও তাঁর সাহায্যকারী।
    হাদীস শরীফেও রয়েছে,রাসুলুল্লাহ আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু এর ফযিলত বর্ণানা করতে গিয়ে ইরশাদ করেছেন,আমি যার 'মাওলা' আলীও তার 'মাওলা'।



    বুধবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৬

    মাযারে সিজদা করা কি শিরিক নাকি হারাম? কদম্বুচি কি শিরিক নাকি সুন্নাহঃ


    সম্মানার্থে হাতে ও কদমে চুম্বন করা সুন্নাহ এর অন্তর্ভুক্ত কিন্তু সিজদায়ে তাজমী হারাম তথা কবীরা গুনাহ তবে শিরিক নয়ঃ

    Written by (Masum Billah Sunny)

    এ সম্পর্কে বহু হাদিস আছে। এক কথায় বলা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে হিজরি ১৪শ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ আ'লা হযরত ইমাম আহাম্মদ রেজা খান বেরলভী (রহঃ) এর লিখিত সিজদায়ে তাজিমী বইটাতে অসাধারণ লিখেছেন অগনিত হাদিসের রেফারেন্স সহ সমস্ত সুত্র সনদসহ বর্ননা করেছেন। 
    Download this book →

    ♦ আলা হজরত শাহ আহমেদ রেযা খান বেরলভি (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বিরচিত "হুরমতে সিজদায় তাজিম" পুস্তকখানির বাংলায় "তাজিমি সিজদাহ" নামকরণ করে প্রকাশ করা হয়েছে।
    http://www.mediafire.com/?33dake3ttuq7kro

    তাই এ ব্যাপারে ওনার আকিদাই আমাদের আকিদাঃ




    সিজদা ২ প্রকারঃ
    1) সিজদায়ে ইবাদতী
    2) সিজদায়ে তাজিমী



    • SIZDAYE IBADATI ©©




    ® তোমরা আল্লাহর জন্য সিজদা কর এবং তাঁরই ইবাদত কর। [সাজদাহ] আন-নাজম, ৫৩/৬২

    ® নিশ্চয় যারা (অর্থাৎ ফেরেশতা) তোমার রবের নিকট আছে তারা তাঁর ইবাদাতের ব্যাপারে অহঙ্কার করে না এবং তারা তাঁরই গুণগান ও মহিমা প্রকাশ করে এবং তাঁরই সম্মুখে সাজদাহবনত হয়। [সাজদাহ] আল-আরাফ, ৭/২০৬  

    ® আর আসমানসমূহ ও যমীনে যে প্রাণী আছে আর ফেরেশতারা আল্লাহর প্রতি সাজদাহবনত হয় আর তারা অহঙ্কার করে না। আল-নাহল, ১৬/৪৯ 

    ® তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে সিজদা করে যা কিছু রয়েছে আসমানসমূহে এবং যা কিছু রয়েছে যমীনে, সূর্য, চন্দ্র, তারকারাজী, পর্বতমালা, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু ও মানুষের মধ্যে অনেকে? আবার অনেকের উপর শাস্তি অবধারিত হয়ে আছে, আল্লাহ যাকে অপমানিত করেন তার সম্মানদাতা কেউ নেই, নিশ্চয় আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন। [সাজদাহ] আল-হাজ্জ, ২২/১৮   

    ® আর আসমানসমূহ ও যমীনের যা কিছু আছে ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় আল্লাহর প্রতি সাজদাহবনত হয় এবং তাদের ছায়াগুলিও। [সাজদাহ] আর-রাদ, ১৩/১৫ 

    ® আর তারকা ও বৃক্ষ উভয়ে (আল্লাহকে) সাজদাহ করে। আর-রাহমান, ৫৫/৬  

    ® কেবল যারা আমার আয়াতসমূহ বিশ্বাস করে, তাদেরকে এর দ্বারা উপদেশ দেয়া হলে সিজদায় লুটিয়ে পড়ে এবং তাদের রবের প্রশংসার সহিত তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর আর তারা অহঙ্কার করে না। [সাজদাহ] আস- সাজদাহ, ৩২/১৫




    • SIZDAYE TAZIMI ©© এই সিজদা গুলো মুলত সম্মানার্থে হয়েছিল তাও আল্লাহর ইশারায় বা হুকুমে তাই একে সিজদায়ে ইবাদতী বললে তারা সালাফীরা সংগে সংগে শিরক ও কুফরে লিপ্ত হবে।




    তার প্রমান আল-কুরআন থেকেই দিব কারণ যদি সিজদায়ে তাজিমী ছিল বলে না মানা হয় তবে নবীগন ও ফেরেশতাগনের উপর শিরিকের অপবাদ দেয়া হবে।


    সূরা ত্বোয়া-হা 70 :-

    فَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سُجَّدًا قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ هَارُونَ وَمُوسَى
    70
    অতঃপর যাদুকররা সেজদায় পড়ে গেল। তারা বললঃ আমরা হারুন ও মূসার পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম।

    সূরা ত্বোয়া -হা 116 :-

    وَإِذْ قُلْنَا لِلْمَلَائِكَةِ اسْجُدُوا لِآدَمَ فَسَجَدُوا إِلَّا إِبْلِيسَ أَبَى
    116
    যখন আমি ফেরেশতাদেরকে বললামঃ তোমরা আদমকে সেজদা কর, তখন ইবলীস ব্যতীত সবাই সেজদা করল। সে অমান্য করল।

    সূরা হিজর: 29 - অতঃপর (আদম আ. কে)
     যখন
     ঠিকঠাক করে নেব এবং তাতে আমার রূহ থেকে ফুক দেব, তখন তোমরা তার সামনে সেজদায় পড়ে যেয়ো।



    সূরা হিজর: 30 - তখন ফেরেশতারা সবাই মিলে সেজদা করল।

    সূরা হিজর: 31 - কিন্তু ইবলীস-সে সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত হতে স্বীকৃত হল না।

    সূরা বনী ইসরাঈল: 61 - স্মরণ কর, যখন আমি ফেরেশতাদেরকে বললামঃ আদমকে সেজদা কর, তখন ইবলীস ব্যতীত সবাই সেজদায় পড়ে গেল। কিন্তু সে বললঃ আমি কি এমন ব্যক্তিকে সেজদা করব, যাকে আপনি মাটির দ্বারা সৃষ্টি করেছেন?

    সূরা ত্বোয়া-হা: 116 - যখন আমি ফেরেশতাদেরকে বললামঃ তোমরা আদমকে সেজদা কর, তখন ইবলীস ব্যতীত সবাই সেজদা করল। সে অমান্য করল।

    সূরা কাহফ:50 - যখন আমি ফেরেশতাদেরকে বললামঃ আদমকে সেজদা কর, তখন সবাই সেজদা করল ইবলীস ব্যতীত। সে ছিল জিনদের একজন। সে তার পালনকর্তার আদেশ অমান্য করল। অতএব তোমরা কি আমার পরিবর্তে তাকে এবং তার বংশধরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করছ? অথচ তারা তোমাদের শত্রু। এটা জালেমদের জন্যে খুবই নিকৃষ্ট বদল।

    সূরা আল আ’রাফ:11 - আর আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, এরপর আকার-অবয়ব, তৈরী করেছি। অতঃপর আমি ফেরেশতাদেরকে বলছি-আদমকে সেজদা কর তখন সবাই সেজদা করেছে, কিন্তু ইবলীস সে সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত ছিল না।

    সূরা আল আ’রাফ:12 - আল্লাহ বললেনঃ আমি যখন নির্দেশ দিয়েছি, তখন তোকে কিসে সেজদা করতে বারণ করল? সে বললঃ আমি তার চাইতে শ্রেষ্ট। আপনি আমাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা।

    সূরা ছোয়াদ: 75 - আল্লাহ বললেন, হে ইবলীস, আমি স্বহস্তে যাকে সৃষ্টি করেছি, তার সম্মুখে সেজদা করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? তুমি অহংকার করলে, না তুমি তার চেয়ে উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন?


    ★ পবিত্র কুরআনের সূরা ইউসুফে হযরত ইউসুফ (আঃ) তার পিতাকে বল্লেন- 

    ذْ قَالَ يُوسُفُ لِأَبِيهِ يَا أَبتِ إِنِّي رَأَيْتُ أَحَدَ عَشَرَ كَوْكَبًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ رَأَيْتُهُمْ لِي سَاجِدِينَ 

    যখন ইউসুফ পিতাকে বললঃ পিতা, আমি স্বপ্নে দেখেছি এগারটি নক্ষত্রকে। সুর্যকে এবং চন্দ্রকে। আমি তাদেরকে আমার উদ্দেশে সেজদা করতে দেখেছি। (সূরা ইউসূফ 4) 


    ★ সূরা ইউসুফের অন্য আয়াত হচ্ছে - 

    وَرَفَعَ أَبَوَيْهِ عَلَى الْعَرْشِ وَخَرُّواْ لَهُ سُجَّدًا وَقَالَ يَا أَبَتِ هَـذَا تَأْوِيلُ رُؤْيَايَ مِن قَبْلُ قَدْ جَعَلَهَا رَبِّي حَقًّا وَقَدْ أَحْسَنَ بَي إِذْ أَخْرَجَنِي مِنَ السِّجْنِ وَجَاء بِكُم مِّنَ الْبَدْوِ مِن بَعْدِ أَن نَّزغَ الشَّيْطَانُ بَيْنِي وَبَيْنَ إِخْوَتِي إِنَّ رَبِّي لَطِيفٌ لِّمَا يَشَاء إِنَّهُ هُوَ الْعَلِيمُ الْحَكِيمُ 

    এবং তিনি পিতা-মাতাকে সিংহাসনের উপর বসালেন এবং তারা সবাই তাঁর সামনে সেজদাবনত হল। তিনি বললেনঃ পিতা এ হচ্ছে আমার ইতিপূর্বেকার স্বপ্নের বর্ণনা আমার পালনকর্তা একে সত্যে পরিণত করেছেন এবং তিনি আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। আমাকে জেল থেকে বের করেছেন এবং আপনাদেরকে গ্রাম থেকে নিয়ে এসেছেন, শয়তান আমার ও আমার ভাইদের মধ্যে কলহ সৃষ্টি করে দেয়ার পর। আমার পালনকর্তা যা চান, কৌশলে সম্পন্ন করেন। নিশ্চয় তিনি বিজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (সূরা ইউসূফ 100) 


    ★ সূরা বাকারায় রয়েছেঃ - 

    وَإِذْ قُلْنَا لِلْمَلاَئِكَةِاسْجُدُواْ لآدَمَ فَسَجَدُواْ إِلاَّ إِبْلِيسَ أَبَى وَاسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنَ الْكَافِرِينَ 

    এবং যখন আমি হযরত আদম (আঃ)-কে সেজদা করার জন্য ফেরেশতাগণকে নির্দেশ দিলাম, তখনই ইবলীস ব্যতীত সবাই সিজদা করলো।
    সে (নির্দেশ) পালন করতে অস্বীকার করল এবং অহংকার প্রদর্শন করল।
    ফলে সে কাফেরদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেল। (সূরা আল বাক্বারাহ 34) 


    ★ আল্লাহপাক রাব্বুল আলামীন বলেন -

    مَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانتَهُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ

    রসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা। (সূরা আল হাশর 7)

    ★ 
    Hadith # 1

    The Sahaba asked: O Prophet (Peace be upon him) we are more deserving of prostrating to you than the animals. The Prophet (Peace be upon him) replied: It is not allowed for anyone,“IF IT WAS ALLOWED I WOULD HAVE ASKED WOMEN TO PROSTRATE TO THEIR HUSBANDS”

    Reference :
    ★ Sunnan Darimi, Volume No. 1, Page No. 10,
    ★ Sahih Ibn Hibban (4/335), 
    ★ Imam al-Mundhri narrated another variant of camel prostrating to Prophet and he declared the chain as “Jayyid (strong) having famous thiqa narrators” (3/35)]

    ♦ Hadith # 2

    কাইস বিন সা'দ (রা:) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি ইয়েমেনের "হীরা" নামক এলাকায় গিয়ে দেখতে পেলাম, সে এলাকার লোকেরা নিজ প্রশাসককে সিজদা করে। তখন আমি মনে মনে ভাবলাম, এ জাতীয় সিজদাহ'র উপযুক্ত একমাত্র রাসূলই (আ:) হতে পারে। অন্য কেউ নয়। তাই আমি মদীনায় এসে রাসূল (আ:) কে ঘটনাটি এবং আমার মনের ভাবটুকু জানালে তিনি বললেন: " বলো! 
    তুমি আমার ইন্তিকালের পর আমার কবরের পাশ দিয়ে গেলে আমার কবরটিকে সিজদাহ করবে কি? আমি বললাম: না, তিনি বললেন: তাহলে এখনও করোনা। আমি যদি কাউকে কারোর জন্য সিজদাহ করতে আদেশ করতাম তাহলে মহিলাদেরকে নিজ স্বামীদের জন্য সিজদাহ করতে আদেশ করতাম। কারণ, আল্লাহ্‌ তা'আলা পুরুষদেরকে নিজ স্ত্রীদের উপর প্রচুর অধিকার দিয়েছেন "।

     (আবু দাউদ, হাদীস ২১৪০)

    ♦ Hadith # 3 



    হযরত ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল হযরত আনাছ বিন মালিক (রাঃ) থেকে উল্লেখ করেছেন যে - 
    আনছারিদের গ্রামে ২টি পাগল উট ছিল ,সেই পাগলা উটের অবস্থা দেখে উটের মালিক দয়াল নবীর (সঃ) দরবারে এল সমাধানের জন্য । তার কথা শুনে আল্লাহর নবী গেলেন দেখতে ,

    যখন দয়াল নবী (সঃ)সেখানে পৌঁছলেন একে একে উট দুটি আল্লাহর নবীর কদমে সিজদায় পড়ে গেলেন যা দেখে উপস্থিত সাহাবারা (রাঃ) বলতে লাগলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ (সঃ) - জানোয়ার হয়ে এগুলা সিজদা করতে পারলে আমরা কেন করবোনা।
    ‪‎তখন‬ রাসুল(সঃ) বলেছেন যদি আমি হুকুম দিতাম তাইলে স্ত্রীদের বলতাম তারা যেন তাদের স্বামীদের সিজদা করে ।


    (মুসনাদে আহমদ)

    ♦ 
    Hadith # 4




    হযরত‬ আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর থেকে ইমাম তিরমিজী উল্লেখ করেছেন যে প্রিয় নবী হুযুর পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ ফরমান,
    যদি আমি কাউকে কারো প্রতি সিজদা করার নির্দেশ দেয়ার ইচ্ছা পোষন করতাম,তাহলে মহিলাকে নির্দেশ দিতাম নিজের স্বামীকে সিজদা দেয়ার জন্য।

    (সুনানে তিরমিযি)


    • ®®® ফতোয়ায়ে আ'লা হযরত (রহঃ) ®®®


    ★ ইমাম আলা হযরত (রহঃ) বলেছেন -
    আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো জন্য ইবাদতের উদ্দেশ্য সিজদা করা হলে তা নিশ্চিত ও সর্বসম্মতভাবে ঘৃন্য শিরক ও সুস্পষ্ট কুফর। আর সিজদা-ই তাহিয়্যাহ বা সম্মানার্থে সিজদা নিশ্চিতভাবে হারাম ও গুনাহ-ই কবীরা । 
    তিনি তাযীমী সিজদাকে কুফর বলার ক্ষেত্রে মতবিরোধ রয়েছে বলেছেন। 
    (আয্ যুবদাতুয্ যাকিয়্যাহ পৃষ্ঠা 7 )
    (Fatawa Rizvia,Jild22,Page423)




    • KISSING HANDS & FEET ©©




    ★ কদম্বুচি জায়েজঃ বিস্তারিত এখানে (click here: http://goo.gl/onPXKs)
    ↓ নিচে শুধু ১টি হাদিস রেফারেন্স সহ দিলামঃ

    عن زارع وكان فى وفد عبد القيس قال لما قدمنا المدينة وجعلنانتبادر من رواحلنا فنقبل يد رسول الله صلى الله عليه وسلم ورجله

    অর্থাৎ, হযরত যারেঈ রাদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু যিনি আব্দুল কায়েস গোত্রের প্রতিনিধি দলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা যখন মদিনা মনোওয়ারায় আগমন করলাম তখন আমাদের বাহন হতে তাড়াতাড়ি নেমে পড়লাম এবং রসূল-এ করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’র হস্ত মোবারক ও পা মোবারক চুম্বন করলাম।



    Reference :

    ১) ইমাম বুখারী : তারিখুল কবীর : ৪/৪৪৭ পৃ: ১৪৯৩
    তিনি বলেন ```হাদিসটি বিশুদ্ধ বা হাসান।```

    ২) ইমাম বুখারী : আল আদব আল মুফ্রাদাত : ২৩৮ পৃ: ৯৭৫
    তিনি বলেন ```হাদিসটি বিশুদ্ধ বা হাসান।```

    ৩) ইমাম ইবনে শায়বা : আল-মুসান্নাফ : ৮/৫৬২ পৃ:

    ৪) ইমাম আবু দাউদ : আস সুনান : ৪/৩৫৭ পৃ: অধ্যায়: কিতাবুল আদব
    , হাদিস : ৫২২৫

    ৫) ইমাম তাবারানী (২৬০-৩৬০হি) : মুজমাউল কবীর : ৫/২৭৫ পৃ: হাদিস ৫৩১৩

    ৬) ইমাম তাবারানী : মুজমাউল আওসাত : ১/১৩৩ পৃ: হাদিস ৪১৮

    ৭) ইমাম বায়হাকী : আস সুনানে কোবরা : ৭/১০২ পৃ: হাদিস ১৩৩৬৫
    তিনি বলেন ```হাদিসটি সহিহ।```

    ৮) ইমাম বায়হাকী : শুয়াবুল ইমান : ১১/২৯৪ পৃ: হাদিস ৮৫৬০
    তিনি বলেন ```হাদিসটি সহিহ।```

    ৯) ইমাম শায়বানী : আহাদিসুল মাসানী : ৩/৩০৪ পৃ: হাদিস ১৬৮৪
    তিনি বলেন ```হাদিসটি হাসান বা বিশুদ্ধ।```

    ১০) ইবনে হাজর আসকালানী : তালখীসুল হবির : ৪/৯৩ পৃ: হাদিস ১৮৩০
    তিনি বলেন ```হাদিসটি সহিহ।```

    ১১) আসকালানী : আদ-দিরায়্যাত ফি তাখরিজ আহাদিসুল হিদায়াত : ২/২৩২ পৃ: হাদিস ৬৯১
    তিনি বলেন ```হাদিসটি সহিহ।```

    ১২) ইমাম খতিব তিবরিযী : মিশকাত : ৩/১৩২৮ পৃ: হাদিস ৪৬৮৮ (মুসাফা ও মু'আনাকা অধ্যায়)

    ১৩) ইমাম মিযযী : তাহজীবুল কামাল : ৭/২৬৬ পৃ:
    তিনি বলেন ```হাদিসটি সহিহ।```

    ১৪) ইমাম যায়লাই : নাসীবুর রিয়াদ্ধ : ২/২৩২ পৃ:
    তিনি বলেন ```হাদিসটি সহিহ।```

    ১৫) ইমাম আবি আছিম : আস-সুন্নাহ : হাদিস ১৯০

    ১৬) শায়খ মুহাদ্দিসে দেহলবী : আশিয়াতুল লুমআত : ৩/৫০৮ পৃ: হাদিস ৪৬৮৮
    তিনি বলেন ```হাদিসটি সহিহ।```

    ১৭) ইমাম মোবারকপুরী : তুহফাতুল আহওয়াজী : ৭/৫৬২ পৃ:
    তিনি বলেন ```হাদিসটি সহিহ।```

    ১৮) ইবনে হাজর আসকালানী : ফতহুল বারী : ৮/৮৫ পৃ:
    তিনি বলেন```হাদিসটি সহিহ।```

    ১৯) ইমাম বায়হাকী : দালায়েলুল নবুওয়াত : ৫/৩২৭ পৃ:
    তিনি বলেন ```হাদিসটি সহিহ।```

    ২০) মোল্লা আলী কারী : মিরকাত শরহে মিশকাত ৭ম খন্ড ৮০ পৃষ্ঠা।
    তিনি বলেন ```হাদিসটি সহিহ।```

    ২১) আলী ইবনে আব্দুল মালিক আল হিন্দী [ওফাত ৯৭৫] : কানজুল উম্মাল।

    ২২) ইমাম ইবনে জারির আল তাবারী [২২৪-৩১০ হি] : তাফসীরে তাবারী

    ২৩) বজলুল মাজহুদ ৬ ষ্ঠ খন্ড ৩২৮ পৃষ্ঠা।

    ২৪) মায়ালিমুস সুনান।

    ২৫) এলাউস সুনান ১৭ তম খন্ড ৪২৬ পৃষ্ঠা

    ২৬) At-Tayalisi in his Musnad

    ২৭) Al-Bazzar in his Musnad (3:278).

    ২৮) Al-Haithami narrated it.

    ২৯) Ibn al-Muqri narrated it in his Kitab ar-Rukhsa, p. 80 #20

    ৩০) Ibn Abd al-Barr declared it Hassan,

    ৩১) al-Mundhiri confirmed it in Mukhtasar al-Sunan (8:86) and declared it Hasan.

    ৩২) নাসিরুদ্দিন আলবানী : সহিহুল আবু দাউদ : ৪/৩৫৭ পৃ: হাদিস ৫২২৫
    তিনি বলেন ```হাদিসটি হাসান বা বিশুদ্ধ ।```