সোমবার, ১৩ জুন, ২০১৬

রোযার জন্য জান্নাতের একটি দরজাঃ





রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “জান্নাতে আটটি দরজা, তাতে একটি দরজাকে “রাইয়ান” বলা হয়, তা দিয়ে রোযাদার ব্যতীত কেউ প্রবেশ করবে না”। (বুখারি: ৩০৮৪, মুসলিম: ১১৫৫, তিরমিযি: ৭৬৫)

বুখারির বর্ণিত শব্দে হাদিসটি এসেছে এভাবে: “নিশ্চয় জান্নাতে একটি দরজা আছে, যাকে বলা হয় রাইয়ান, কিয়ামতের দিন তা দিয়ে রোযাদার প্রবেশ করবে, তাদের ব্যতীত কেউ সেখান থেকে প্রবেশ করবে না। বলা হবে: রোযাদারগণ কোথায়? ফলে তারা দাঁড়াবে, তাদের ব্যতীত কেউ তা দিয়ে প্রবেশ করবে না, যখন তারা প্রবেশ করবে বন্দ করে দেয়া হবে, অতঃপর কেউ তা দিয়ে কেউ প্রবেশ করবে না”। (বুখারি: ১৭৯৭)

তিরমিযির বর্ণিত শব্দ: “জান্নাতে একটি দরজা আছে, যাকে রাইয়ান বলা হয়, তার জন্য রোযাদারদেরকে আহ্বান করা হবে, যে রোযাদারদের অন্তর্ভুক্ত হবে, সে তাতে প্রবেশ করবে, যে তাতে প্রবেশ করবে কখনো পিপাসার্ত হবে না”। (তিরমিযি: ৭৬৫)

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “আল্লাহর রাস্তায় যে দু’টি জিনিস খরচ করল, তাকে জান্নাতের দরজাসমূহ থেকে ডাকা হবে: হে আব্দুল্লাহ, এটা কল্যাণ। যে সালাত আদায়কারী তাকে সালাতের দরজা থেকে ডাকা হবে। যে মুজাহিদ তাকে জিহাদের দরজা থেকে ডাকা হবে। যে রোযাদার তাকে রাইয়ান দরজা থেকে ডাকা হবে। যে দানশীল তাকে সদকার দরজা থেকে ডাকা হবে। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন : হে আল্লাহর রাসূল, আমার মাথা-পিতা আপনার উপর উৎসর্গ। যাকে এক দরজা থেকে ডাকা হবে না, তার বিষয়টি পরিষ্কার, কিন্তু কাউকে কি সকল দরজা থেকে ডাকা হবে? তিনি বললেন: হ্যাঁ, আমি আশা করছি তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত”। (বুখারি: ১৭৯৮, মুসলিম: ১০২৭)

বুখারি ও মুসলিমের অন্য শব্দে এসেছে: “জান্নাতের প্রহরী তাকে ডাকবে, প্রত্যেক দরজার প্রহরী বলবে: হে অমুক, আস”। (বুখারি: ২৬৮৬, মুসলিম: ১০২৭)

ইমাম আহমাদের বর্ণিত শব্দ: “প্রত্যেক আমলের লোকের জন্য জান্নাতে একটি করে দরজা আছে, তাদেরকে সে আমল দ্বারা ডাকা হবে। রোযাদারদের একটি দরজা রয়েছে, তাদেরকে সেখান থেকে ডাকা হবে, যাকে বলা হয় রাইয়ান। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন: হে আল্লাহর রাসূল, কেউ কি সব দরজা থেকে ডাকা হবে? তিনি বললেন: হ্যাঁ, আমি আশা করছি তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত হে আবু বকর”। (মুসনাদে আহমদ: ২/৪৪৯)



মওলিদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সম্পর্কে ইমাম ইবনে কাসীর (রহঃ) :-


▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄
ইসলাম নতুন নয়; পুরাতন। মীলাদ উন নাবী (صلى الله عليه و آله وسلم) সম্পর্কে কতিপয় অভিমত :
▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄▄
ইমাম ইবনে কাসীর রহমতুল্লাহি আলাইহি'র দৃষ্টিতে আরবলের বাদশাহ সুলতান সালাউদ্দিন আইয়্যুবীর ভগ্নিপতি হযরত মুজাফফর রাহমাতুল্লাহি আলাইহি। 
ইবনে কাসীর রহমতুল্লাহি আলাইহি, যাকে সালাফী / ওহাবীরা তাফসীর ও ইতিহাস শাস্ত্রে সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধা করে থাকে।
________________________
প্রকৃতপক্ষে ইবনে কাসীর লিখেন:

অর্থ: “বাদশা হযরত মুজাফফরুদ্দীন ইবনে যাইনুদ্দীন আবু সাঈদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি দানশীল ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের অন্যতম ছিলেন। সাথে সাথে তিনি সম্মানিত বাদশাও ছিলেন। উনার বহু পূন্যময় কাজের আলামত এখনও বিদ্যমান রয়েছে।”
গ্রন্থ সূত্র :
*_* আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ১৩ তম, খন্ড ১৩৬ পৃষ্ঠা।

তিনি আরো লিখেন :

অর্থ: আরবলের বাদশা হযরত মালিক মুজাফফরুদ্দীন ইবনে যাইনুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি প্রতি বছর পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে তিন লক্ষ দিনার ব্যায় করতেন।”
গ্রন্থ সূত্র :
*_* আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ১৩ তম, খন্ড ১৩৭ পৃষ্ঠা।

তিনি লিখেন :
أحد الاجواد والسادات الكبراء والملوك الامجاد له آثار حسنة وقد عمر الجامع المظفري بسفح قاسيون وكان قدهم بسياقه الماء إليه من ماء بذيرة فمنعه المعظم من ذلك واعتل بأنه قد يمر على مقابر المسلمين بالسفوح وكان يعمل المولد الشريف في ربيع الاول ويحتفل به احتفالا هائلا وكان مع ذلك شهما شجاعا فاتكا بطلا عاقلا عالما عادلا رحمه الله وأكرم مثواه وقد صنف الشيخ أبو الخطاب ابن دحية له مجلدا في المولد النبوي سماه التنوير في مولد البشير النذير فأجازه على ذلك بألف دينار وقد طالت مدته في الملك في زمان الدولة الصلاحية وقد كان محاصر عكا وإلى هذه السنة محمودالسيرة والسريرة قال السبط حكى بعض من حضر سماط المظفر في بعض الموالد كان يمد في ذلك السماط خمسة آلاف راس مشوى وعشرة آلاف دجاجة ومائة ألف زبدية وثلاثين ألف صحن حلوى

অর্থঃ “(মুযাফফর শাহ) ছিলেন একজন উদার/সহৃদয় ও প্রতাপশালী এবং মহিমান্বিত শাসক, যাঁর সকল কাজ ছিল অতি উত্তম। তিনি কাসিইউন-এর কাছে জামেয়া আল-মুযাফফরী নির্মাণ করেন…..(প্রতি) রবিউল আউয়াল মাসে তিনি জাঁকজমকের সাথে মীলাদ শরীফ (মীলাদুন্নবী) উদযাপন করতেন। উপরন্তু, তিনি ছিলেন দয়ালু, সাহসী, জ্ঞানী, বিদ্বান ও ন্যায়পরায়ণ শাসক – রাহিমুহুল্লাহ ওয়া একরাম – শায়খ আবুল খাত্তাব রহমতুল্লাহি আলাইহি সুলতানের জন্যে মওলিদুন্ নববী সম্পর্কে একখানি বই লিখেন এবং নাম দেন ‘আত্ তানভির ফী মওলিদ আল-বাশির আন্ নাযীর’। এ কাজের পুরস্কারস্বরূপ সুলতান তাঁকে ১০০০ দিনার দান করেন। সালাহিয়া আমল পর্যন্ত তাঁর শাসন স্থায়ী হয় এবং তিনি ’আকা’ জয় করেন। তিনি সবার শ্রদ্ধার পাত্র থেকে যান।”
আস্ সাবত্ এক ব্যক্তির কথা উদ্ধৃত করেন-যিনি সুলতানের আয়োজিত মওলিদ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন; ওই ব্যক্তি বলেন:
‘অনুষ্ঠানে সুলতান ভালভাবে রান্নাকৃত ৫০০০ ছাগল, ১০,০০০ মোরগ, ১ লক্ষ বৌল-ভর্তি দুধ এবং ৩০,০০০ ট্রে মিষ্টির আয়োজন করতেন’।”

গ্রন্থ সূত্র :
*_* ’তারিখে ইবনে কাসীর’, ‘আল-বেদায়াহ ওয়ান্ নেহায়া’ ১৩তম খণ্ড, ১৭৪ পৃষ্ঠা।
অনুরূপ বিবরণ জগৎ বিখ্যাত পূর্বেকার উম্মতের ইমামগনের বিখ্যাত যত গ্রন্থ "সীরাতে শামী, সীরাতে হালবীয়া, সীরাতে নববীয়া ও যুরকানী” ইত্যাদিতে ও বিদ্যমান আছে।

জুম’আর দিন প্রসঙ্গে কিছু সহিহ্ হাদিসঃ


রাসুলে কারিম সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
জুম’আর দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায়, তা-ই তাকে দেওয়া হয়। আর এ সময়টি হল জুম’আর দিন আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত, একটি সময়।
*_* বুখারী শরীফ/৯৩৫।

হযরত আবু হুরাইরা(রা) হতে বর্ণিত,
রাসূলে কারিম সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
”যে গোসল করে জুমু’আর উদ্দেশ্যে আসে এবং যে পরিমাণ নফল নামায পড়ার তাওফীক হয় তা পড়ে, এরপর ইমামের খুতবা শেষ হওয়া পর্যন্ত চুপ থাকে এবং ইমামের সঙ্গে নামায আদায় করে, আল্লাহ তা’আলা তার দশ দিনের (সগীরা) গুনাহ মাফ করে দেন।”
*_* সহীহ মুসলিম, ১/২৮৩।

জুমুয়ার দিন রসূলে কারিম হাযরাত মুহাম্মদ সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম এর উম্মত এর জন্য একটি মহান দিন। এ জুম’আর দিনটিকে সম্মান করার জন্য ইহুদী-নাসারাদের উপর ফরজ করা হয়েছিল; কিন্তু তারা মতবিরোধ করে এই দিনটিকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। অতঃপর ইহুদীরা শনিবারকে আর খ্রিষ্টানরা রবিবারকে তাদের ইবাদতের দিন বানিয়েছিল। অবশেষে আল্লাহ তায়ালা তাঁর হাবীব রসূলে কারিম হাযরাত মুহাম্মদ সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম এর উম্মতের জন্য শুক্রবারকে মহান দিবস ও ফযীলতের দিন হিসেবে দান করেছেন। আর উম্মতে মুহাম্মদী তা গ্রহন করে নিল।
*_* বুখারী শরীফ ৮৭৬;
*_* মুসলিম শরীফ ৮৫৫।

হাযরাত আবদুল্লাহ ইবনে আমর [রাযি] থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যেক জুমুআর দিনে নিজের গোঁফ ছোট করেতেন এবং আংগুলের নখ কাটতেন।
*_* আখলাকুন নবী সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম, হাদিস নং-৭৭০।

হাযরাত আবু হুরায়রা [রাযি] থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম বলেছেন,
জুমুআর দিন মসজিদের দরজায় ফিরিশতারা অবস্থান করেন এবং ক্রমানুসারে আগে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকেন। যে সবার আগে আসে সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে একটি মোটাতাজা উট কুরবানী করে। এরপর যে আসে সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে একটি গাভী কুরবানী করে। এরপর যে আসে সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে একটি দুম্বা কুরবানী করে তারপর আগমনকারী ব্যক্তি মুরগী দানকারীর ন্যায়। এরপর আগমনকারী ব্যক্তি ডিম দানকারীর ন্যায়। তারপর ইমাম যখন [খুৎবার প্রদানের জন্য] বের হন তখন ফিরিশিতা তাঁদের দফতর বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ সহকারে খুৎবা শুনতে থাকেন।
*_* বুখারি শরীফ, হাদিস ৮৮২।

হাযরাত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন,
রসূলে কারিম সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
যে ব্যক্তি জুমআর দিন সূরা কাহ্ফ পড়বে তার জন্য এক জুম’আ থেকে আরেক জুম’আ পর্যন্ত আলো বিচ্ছুরিত হবে।
*_* মুসতাদারেক হাকিমঃ২/৩৯৯,
*_* বায়হাকীঃ ৩/২৪৯,
*_* ফয়জুল ক্বাদীরঃ ৬/১৯৮।

হযরত ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত,
রসূলে কারিম সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
যে ব্যক্তি শুক্রবার দিন সূরা কাহফ পাঠ করবে তার পা থেকে আকাশের উচ্চতা পর্যন্ত নূর হয়ে যাবে, যা কেয়ামতের দিন আলো দিবে এবং বিগত জুমআ থেকে এ জুমআ পর্যন্ত তার সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।
*_* সহিহ্ আত তারগীব ওয়া তারহীবঃ ১/২৯৮।

হাযরাত আবু দারদা রাঃ রসূলে কারিম সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন,
যেব্যক্তি সুরায়ে কাহাফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্থ করবে সে দাজ্জালের ফেৎনা হতে রক্ষা পাবে।
*_* মুসলিম শরীফ, হাদিস ১৩৪২,
*_* মুসনাদু আহমদ শরীফ, হাদিস ২০৭২০,
*_* আবু দাউদ শরীফ, হাদিস ৩৭৬৫।

হযরত ইয়াযীদ ইবনে আবি মারয়াম (র) থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন,
আমি একদিন পায়ে হেঁটে জুম’আর জন্য যাচ্ছিলাম। এমন সময় আমার সাথে আবায়া ইবনে রিফায়া (র) এর সাথে সাক্ষাৎ হয়।
তিনি বললেন, সুসংবাদ গ্রহণ কর! তোমার এই পদচারণা আল্লাহর পথেই। আমি আবু আবস (রা) কে বলতে শুনেছি, রাসূলুলে কারিম সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
যে ব্যক্তির পদদ্বয় আল্লাহর পথে ধূলিময় হলো, তার পদদ্বয় জাহান্নামের জন্য হারাম করা হলো।
*_* জামে তিরমিযি, হাদিস ১৬৩৮,
*_* সহীহ বুখারী, হাদিস ৯০৭।

রাসূলে কারিম সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
জুম’আতে তিন ধরনের লোক আসে।
(ক) যে ব্যক্তি অনর্থক আসে, সে তাই পায;
(খ) যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনার জন্য আসে। আল্লাহ চাইলে তাকে দেন, অথবা না দেন;
(গ) যে ব্যক্তি নীরবে আসে এবং কারো ঘাড় মটকায় না ও কষ্ট দেয় না, তার জন্য এই জুম’আ তার পরবর্তী জুম’আ এমনকি তার পরের তিন দিনের (সগীরা) গোনাহ সমূহের কাফফারা হয়ে থাকে। এ কারণেই মহান আল্লাহ্ পাক বলেছেন,
যে ব্যক্তি একটি নেকীর কাজ করে, তার জন্য দশগুণ প্রতিদান রয়েছে (সূরাহ্ আন’আম; আয়াত ১৬০)।
*_* আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১৩৯৬, অনুচ্ছেদ-৪৪।

ইমাম মালিক রাহিমাহুল্লাহ্ বলেনঃ



عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه أَنَّهُ قَالَ: تُعْرَضُ أَعْمَالُ النَّاسِ كُلَّ جُمُعَةٍ مَرَّتَيْنِ، يَوْمَ الْاثْنَيْنِ وَيَوْمَ الْخَمِيسِ، فَيُغْفَرُ لِكُلِّ عَبْدٍ مُؤْمِنٍ إِلَّا عَبْدًا كَانَتْ بَيْنَهُ وَبَيْنَ أَخِيهِ شَحْنَاءُ، فَيُقَالُ: اتْرُكُوا هَذَيْنِ حَتَّى يَفِيئَا. أَوِ ارْكُوا (يعني أخِّروا) هَذَيْنِ حَتَّى يَفِيئَا.
“আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: প্রতি জুমায় [সপ্তাহে] বান্দার আমল দু’বার পেশ করা হয়: সোমবার ও বৃহস্পতিবার। অতঃপর প্রত্যেক মুমিন বান্দাকে ক্ষমা করা হয়, তবে সে বান্দা ব্যতীত যার মাঝে ও তার ভাইয়ের মাঝে বিদ্বেষ রয়েছে। বলা হয়: তাদেরকে ত্যাগ কর, যতক্ষণ না তারা সংশোধন করে নেয়”।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* মুয়াত্তা মালেক; ২/৯০৮, হাদিস ১৭।

রবিবার, ১২ জুন, ২০১৬

কালের সকল মুফাস্সির, মুহাদ্দিস ও ফকিহগণ মাযহাব এর অনুসারী ছিলেনঃ


এসব নিচের পুস্তকে সংরক্ষিত হয়েছে :

০১. তাবাকাতুল হানাফীয়্যাহ্
০২. তাবাকাতুল মালিকিয়্যাহ্
০৩. তাবাকাতুল শাফিয়্যাহ্
০৪. তাবাকাতুল হানাবিলাহ্

উপরোক্ত নামে কিতাবগুলো জীবনীকোষ হিসেবে পরিচিত।
এখানে মৃত্যু সনসহ শাস্ত্রজ্ঞ উলামায়ে ক্বিরামের মাযহাব ভিত্তিক একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা দেয়া হলো :


প্রসিদ্ধ মুফাস্সিরগণ যাঁরা হানাফী ছিলেন :


০১. ইমাম আবু বকর আহমাদ ইবনে আলী আল জাসসাস (৩৭০হি.) তাফসীর আহকামুল ক্বুরআ'ন।
০২. নসর ইবনে মুহাম্মাদ (৩৭৩হি.) তাফসীর সমরকন্দী।
০৩. আব্দুল্লাহ্ ইবনে আহমাদ (৭০১হি.) তাফসীর নাসাফী।
০৪. মুহাম্মাদ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে মুস্তাফা (৯৫২হি.) তাফসীর আবিস সউদ।
০৫. ইসমাইল হাক্বী (১১২৭হি.) তাফসীর রুহুল বয়ান।
০৬. কাজী সানাউল্লা পানিপথী (১২২৫হি.) তাফসীর মাযহারী।
০৭. শিহাবউদ্দীন মাহমুদ আলূসী (১২৭০হি.) তাফসীর রুহুল মাআনী।


প্রসিদ্ধ মুফাস্সিরগণ যাঁরা শাফিয়ী ছিলেন :


০৮. আলী ইবনে মুহাম্মাদ আত তাবারী (৩১০হি.) তাফসীর তাবারী।
০৯. হুসাইন ইবনে মাসউদ আল বাগাবী (৫১৬হি.) তাফসীর বাগাবী।
১০. মুহাম্মাদ ইবনে উমর আর রাযী (৬০৬হি.) তাফসীর কাবীর।
১১. আবদুল্লাহ্ ইবনে বায়যাবী (৬৮৫হি.) তাফসীর বায়যাবী।
১২. আবদুল্লাহ্ ইবনে খাযেন (৭৪১হি.) তাফসীর খাযেন।
১৩. ইসমাইল ইবনে আমর দিমাশকী (৭৭৪হি.) তাফসীর ইবনে কাসীর।
১৪. জালালুদ্দিন মুহাল্লী (৮৬৪হি.) তাফসীর জালালাইন।
১৫. জালালুদ্দিন সুয়ূতি (৯১১হি.) তাফসীর জালালাইন, তাফসীর দুররে মানসূর।
১৬. মুহাম্মাদ ইবনে আহমাদ শিরবীনী (৯৭৭হি.) তাফসীর খতীব।


প্রসিদ্ধ মুফাস্সিরগণ যাঁরা মালেকী ছিলেন :


১৭. মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল্লাহ্ আন্দালুসী (৫৪৩হি.) তাফসীর আহকামুল ক্বুরআ'ন।
১৮. আব্দুল হাক্ব ইবনে গালেব (৫৪৬হি.) তাফসীর ইবনে আতীয়্যাহ্।
১৯. আব্দুর রহমান ইবনে মুহাম্মাদ আস সাআলাবী (৮৭৬হি.) তাফসীর আল জাওয়াহিরুল হিসান।
২০. মুহাম্মাদ ইবনে আহমাদ আল কুরতুবী (৬৭১হি.) তাফসীর কুরতুবী।
২১. মুহাম্মাদ ইবনে ইউসূফ আন্দালুসী (৭৪৫হি.) তাফসীর বাহারুর মুহীত।
২২. আবুল আব্বাস শিহাবুদ্দীন (৭৫৬হি.) তাফসীর আদ দুররুল মাসনুন।
২৩. ইবনু উরফাহ্ (৮০৩হি.) তাফসীর ইবনে উরফাহ্।


প্রসিদ্ধ মুফাস্সিরগণ যাঁরা হাম্বলী ছিলেন :


২৪. ইবনে আদেল আবী হাফস (৮৮০হি.) তাফসীর লুবাব।
২৫. ইবনে রজব (৭৯৫হি.) তাহকিকু তাফসীরুল ফাতিহা।
২৬. ইবনূল কাইয়্যিম আল জাওযীয়া (৭৫১হি.) আত তাফসীরুল কাইয়্যিম।
২৭. ইবনে রজব (৭৯৫হি.) রওয়ায়িয়ূত তাফসীর।


প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিসগণ যাঁরা হানাফী ছিলেন :


০১. মাক্বী ইবনে ইব্রাহীম রহ. (১২৬হি.)
০২. আব্দুল্লাহ্ ইবনে মুবারাক রহ. (১৮১হি.)
০৩. ইমাম আবু ইউসূফ রহ. (১৮২হি.)
০৪. ইমাম মুহাম্মাদ রহ. (১৮৯হি.)
০৫. ইয়াহইয়াহ ইবনে সাইদ আল কাত্তান রহ. (১৯৮হি.)
০৬. ইহইয়াহ ইবনে মাঈন রহ. (২৩৩হি.)
০৭. আবু ইয়ালা আল মুসিলী রহ. (৩০৭হি.)
০৮. ইমাম ত্বাহাবী রহ. (৩১১হি.)
০৯. আলাউদ্দীন মুগলতাইয়ী রহ. (৭৬২হি.)
১০. আলাউদ্দিন ইবনুত তরকুমানী রহ. (৭৪৫হি.)
১১. ইউসূফ যাইলাঈ রহ. (৭৬২হি.)
১২. বাদরুদ্দিন আল আইনী রহ. (৮৫৫হি.)
১৩. রজীউদ্দীন মুহাম্মাদ ইবনে ইব্রাহীম রহ. (৯৭১হি.)
১৪. মুল্লা আলী কারী রহ. (১০১৪হি.)


প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিসগণ যাঁরা শাফিয়ী ছিলেন :


০১. মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাইল বুখারী (২৫৬হি.)
০২. আব্দুর রহমান আন নাসায়ী (৩০৩হি.)
০৩. আবু ইসা তিরমিযী (২৭৯হি.)
০৪. আবু ইবনু হিব্বান (৩৫৪হি.)
০৫. ইবনু খুযাইমা (৩১১হি.)
০৬. আবু দাউদ আত ত্বয়ালিসী (২০৪হি.)
০৭. আলী ইবনে ওমর আদ দারাকুতুনী (৩৮৫হি.)
০৮. আবু বকর আল বায়হাকী (৪৫৮হি.)
০৯. হাকেম আবু আবদিল্লাহ্ (৪০৫হি.)
১০. ইবনূল আসীর (৬০৬হি.)
১১. যাইনুদ্দীন আল ইরাকী (৮০৬হি.)
১২. আবুল হাজ্জাজ আল মিজ্জী (৭৪২হি.)
১৩. শামসুদ্দীন আয যাহাবী (৭৪৮হি.)
১৪. হাফেজ ইবনু হাজার (৮৫২হি.)
১৫. হাফেজ শামসুদ্দীন আস সাখাভী (৯০২হি.)
১৬. ইবনু আসাকীর (৫৭১হি.)
১৭. আবু বকর আল বাগদাদী (৪৬৩হি.)


প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিসগণ যাঁরা মালেকী ছিলেন :


০১. ইবনু আব্দিল বার (৪৬৩হি.)
০২. আবু বকর ইবনূল আরাবী (৫৪৩হি.)
০৩. আবু আব্দুল্লাহ্ আয যুরকানী (১১২২হি.)


প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিসগণ যাঁরা হাম্বলী ছিলেন :


০১. মুসলিম ইবনে হাজ্জাজ (২৬১হি.)
০২. আবু আব্দুর রহমান আদ দারিমী (২৫৫হি.)
০৩. আব্দুর রাজ্জাক সানআনী (২১১হি.)
০৪. আবু দাউদ (২৭৫হি.)


প্রসিদ্ধ ফকিহ্গণ যাঁরা হানাফী ছিলেন :


০১. আবুল হাসান কুদুরী (৪২৮হি.)
০২. আবু বকর সারাখসী (৪৯০হি.)
০৩. আলাউদ্দীন আল কাসানী (৫৮৭হি.)
০৪. আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাহমুদ (৬৮৩হি.)
০৫. কামাল ইবনূল হুমাম (৮৬১হি.)
০৬. ইবনূ নুজাইম (৯৭০হি.)

০৭. আব্দুর রহমান ইবনে মুহাম্মাদ শাইখী যাদাহ (১০৭৮হি.)
০৮. আলাউদ্দীন আল হাসকাফী (১০৮৮হি.)
০৯. ইবনু আবেদীন (১২৫২হি.)


প্রসিদ্ধ ফকিহ্গণ যাঁরা মালেকী ছিলেন :


০১. শিহাবুদ্দীন আল কারাফী (৬৮৪হি.)
০২. ইবনে রুশদ (৫৯৫হি.)
০৩. শামসুদ্দিন আর রুআইনী (৯৫৪হি.)
০৪. খলীল ইবনে ইসহাক আল জুনদী (৭৬৭হি.)
০৫. শিহাবুদ্দীন আল বাগদাদী (৭৩২হি.)
০৬. ইবনূল হাজ্জ (৭৩৭হি.)
০৭. আব্দুল ওহহাব ইবনে আলী (৪২২হি.)
০৮. আবু উমর আল কুরতুবী (৪৬৩হি.)
০৯. আবুল ওয়ালীদ আল কুরতুবী (৫২০হি.)
১০. মুহাম্মাদ আদ দূসুকী (১২৩০হি.)


প্রসিদ্ধ ফকিহ্গণ যাঁরা শাফিয়ী ছিলেন :


০১. আবূ ইসহাক আশ শিরাজী (৪৭৬হি.)
০২. জালালুদ্দীন আস সুয়ূতি (৯১১হি.)
০৩. আবুল হাসান আল মাওয়ারদী (৪৫০হি.)
০৪. মুহীউদ্দীন আন নববী (৬৭৬হি.)
০৫. ইবনূল মুলাক্কীন (৮০৪হি.)
০৬. আবুল কাসেম আব্দুল আজীজ (৬২৩হি.)
০৭. তাকীউদ্দীন আবুল বারাকাত (৮২৯হি.)
০৮. ইমামা গাজালী (৫০৫হি.)
০৯. ইমামুল হারামাইন আব্দুল মালেক (৪৭৮হি.)
১০. শামসুদ্দীন আর রমল্লী (১০০৪হি.)


প্রসিদ্ধ ফকিহ্গণ যাঁরা হাম্বলী ছিলেন :


০১. ইবনু কুদামা (৬২০হি.)
০২. ইবনু বাত্তাহ আল উকবারী (৩৮৭হি.)
০৩. আবুল হাসান আল মারদাভী (৮৮৫হি.)
০৪. শামসুদ্দীন আবুল ফরজ (৩৮১হি.)
০৫. ইবনু মুফলিহ্ (৭৬৩হি.)
০৬. আবু মুহাম্মাদ আল মাবদেসী (৬২৪হি.)
০৭. ইব্রাহীম ইবনে মুহাম্মাদ (১৩৫৩হি.)
০৮. আবুল কাসেম আল খেরাকী (৩৩৪হি.)
০৯. ইবনু কুতাইবা (১০৩৩হি.)
১০. ইবনু তাইমিয়া (৭২৮হি.)

উম্মাহর এসকল প্রসিদ্ধ মুফাস্সির, মুহাদ্দিস, ফকিহ-এর মাধ্যমেই আমরা লাভ করেছি তাফসীর, উসূলে তাফসীর, হাদিস, উসূলে হাদিস, ফিকহ্ ও উসূলে ফিকহ্ সহ সকল প্রকার ইলম।

(Mahmud Hasan)

যে ব্যক্তি আমাকে সপ্নে দেখে, সে অবশ্যই আমাকে দেখেছেঃ (হাদিস এর রেওয়াত সমুহ)



পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (ইফাঃ) 
অধ্যায়ঃ ৪৪/ স্বপ্ন 
হাদিস নম্বরঃ ৫৭২২ | 5722 | ۵۷۲۲
পরিচ্ছদঃ ১. নবী (ﷺ) এর বানীঃ যে ব্যক্তি আমাকে সপ্নে দেখে, সে অবশ্যই আমাকে দেখেছেঃ

৫৭২২। আবূ রবী সুলায়মান ইবনু দাঊদ আতাকী (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখে, সে আমাকে সত্যই দেখেছো কেননা শয়তান আমার রূপ ধারণ করতে পারে না।

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)





পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (ইফাঃ) 
অধ্যায়ঃ ৪৪/ স্বপ্ন 
হাদিস নম্বরঃ ৫৭২৩ | 5723 | ۵۷۲۳

পরিচ্ছদঃ ১. নবী (ﷺ) এর বানীঃ যে ব্যক্তি আমাকে সপ্নে দেখে, সে অবশ্যই আমাকে দেখেছেঃ

وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، وَحَرْمَلَةُ، قَالاَ أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ، شِهَابٍ حَدَّثَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ رَآنِي فِي الْمَنَامِ فَسَيَرَانِي فِي الْيَقَظَةِ أَوْ لَكَأَنَّمَا رَآنِي فِي الْيَقَظَةِ لاَ يَتَمَثَّلُ الشَّيْطَانُ بِي " .
وَقَالَ فَقَالَ أَبُو سَلَمَةَ قَالَ أَبُو قَتَادَةَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ رَآنِي فَقَدْ رَأَى الْحَقَّ " .
وَحَدَّثَنِيهِ زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَخِي الزُّهْرِيِّ، حَدَّثَنَا عَمِّي، . فَذَكَرَ الْحَدِيثَيْنِ جَمِيعًا بِإِسْنَادَيْهِمَا سَوَاءً مِثْلَ حَدِيثِ يُونُسَ .

৫৭২৩। আবূ তাহির ও হারামালা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখে, অচিরেই সে আমাকে জাগ্রত অবস্থায় দেখতে পাবে। কিংবা তিনি বলেছেন, সে যেন আমাকে জাগ্রত অবস্থায় দেখতে পেল। কেননা শয়তান আমার রূপ ধারণ করতে পারে না। রাবী আরো বলেন, আবূ সালামা বলেছেন, আবূ কাতাদা বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমাকে দেখল সে নিশ্চয়ই সত্যই দেখল।

(সহিহ)

এবং যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি হাদীস দু'টির সবটুকু তাদের উভয়ের সনদে ইউনুসের হাদীসের সম্পূর্ণ অনুরূপ সমানভাবে উল্লেখ করেছেন।



পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (ইফাঃ) 
অধ্যায়ঃ ৪৪/ স্বপ্ন 
হাদিস নম্বরঃ ৫৭২৪ | 5724 | ۵۷۲٤

পরিচ্ছদঃ ১. নবী (ﷺ) এর বানীঃ যে ব্যক্তি আমাকে সপ্নে দেখে, সে অবশ্যই আমাকে দেখেছেঃ
৫৭২৪। কুতায়বা ইবন সাঈদ ও ইবন রুমূহ (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে (স্বপ্নযোগে) আমাকে দেখল, সে অবশ্যই আমাকে দেখল। কেননা শয়তানের পক্ষে আমার রূপ ধারণ করা সঙ্গত (সম্ভব) নয়। তিনি আরও বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন বাজে স্বপ্ন দেখে, সে যেন ঘুমের মাঝে তার সাথে শয়তানের কারসাজির খবর কাউকে না দেয়।

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)




পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (ইফাঃ) 
অধ্যায়ঃ ৪৪/ স্বপ্ন 
হাদিস নম্বরঃ ৫৭২৫ | 5725 | ۵۷۲۵
পরিচ্ছদঃ ১. নবী (ﷺ) এর বানীঃ যে ব্যক্তি আমাকে সপ্নে দেখে, সে অবশ্যই আমাকে দেখেছেঃ

৫৭২৫। মুহাম্মদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে (স্বপ্নযোগে) আমাকে দেখল, সে অবশ্য আমাকেই দেখল। কেননা শয়তানের পক্ষে সঙ্গত (সম্ভব) নয় যে, সে আমার সাদৃশ্য গ্রহণ করে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)



রবিবার, ৮ মে, ২০১৬

দেওবন্দিরাও কি তাহলে কবর পুজা পীর পুজা করে? নাকি সুন্নীদের বেলায় শুধু এই ফতোয়া?

দেহবন্দী আলেমদের মতে পীর ওলিঃ


আমার কথা হচ্ছে যে পীর মাশায়েখ গণ যদি কোনো উপকারে না আসে তা হলে তোমার দেওবন্দ এর সকল আলেম কেন নিজেদের কে (চিশতিয়া ) বুজুর্গ বলে দাবি করেন ? আর হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজেরে মক্কী (রহ) এর হাতে কেন বায়েত হলেন ? কে কতদিন হাজী সাহেবের খেদমত করেছেন তা এখন বলতে চাচ্ছি না , আজকের পোস্ট হচ্ছে পীর মাশায়েখ গনের প্রয়জন আছে কি না তা দেওবন্দী দের কিতাব থেকে প্রমান করাঃ


দেওবন্দী আলেম কুতুবুল ইরশাদ মাওলানা রশিদ আহমাদ গাংগুহীঃ-

(মহমুদুস সুলুক) কিতাবের ৫২ পৃষ্টায় লিখেছেন যে -

যার পীর নাই তার পীর শয়তান।

(মহমুদুস সুলুক) এর পৃষ্টা নং ৫৯ তে লিখেছেন যেঃ-


একথা খুব ভালো করে জানা প্রয়োজন যে , মুরিদের জন্য একজন কামিল পীরের খুবই দরকার। তিনি তার ইসলাহের জন্য শরীয়াত ও তরিকতের পথের সহায়ক হবেন,ও আল্লাহর নৈকট্ব পাওয়ার পথে উচা,নিচা,সুবিধা,অসুবিধা,ভালো-মন্দের সম্পর্কে তাকে সতর্ক করবেন। যেমন আল্লাহ বলেন ;- হে ঈমানদারগণ , আল্লাহকে ভয় কর ,ও তাকে পাওয়ার জন্য নির্ভরশীল সহায়ক(অসিলা) তালাশ কর(সুরা মায়েদা) আয়াত ৩৫

নবী পাক এরশাদ ফরমান যে ;- আমার সাহাবাগণ তারকা সমতুল্য ,তোমরা যে কারো অনুসরণ করবে হেদায়াত পেয়ে যাবে।
এতে প্রমানিত হয় যে হেদায়াত পাওয়ার জন্য কোনো না কোনো আল্লাহ ওয়ালা বুজুর্গের অনুসরণ করা প্রয়োজন কেননা তার অনুসরণ মাধমেই আল্লাহকে পাওয়া যাবে। 


(মহমুদুস সুলুক) এর পৃষ্টা নং ৬০ এ লিখেছেন যেঃ-


ইমাম গাজ্জালি (রহ) এর কিতাব (এহইয়া-উলুমুদ্দীন ) কিতাবে বর্ণিত হাদিস তুলে ধরে লিখেছেন যে ;- আল্লাহ তায়ালা উম্মতের হেদায়েত যেমন নবীগনের দিয়ে করিয়ে থাকেন ঠিক তেমন মুরিদ গনের হেদায়াত আপন কামিল বুজুর্গের দিয়ে করিয়ে থাকেন। 

এই হাদিসের বেক্ষা করতে গিয়ে রশিদ আহমাদ গান্গুহী সাহেব লিখেছেন যে ;- শায়খে কামিল নবীর নায়েব হিসেবে নবুয়াতের খেদমত আনজাম দিয়ে আপন মুরিদ গনকে সত্পথ দেখান এবং তাদেরকে গোমরাহী থেকে সতর্ক করেন , এ হিসেবে তারা মানুষের জন্য আম্বিয়া কেরামের মত নবীর তরিকায় হিদায়েত ও নাজাতের ওসিলা হন
। 


আরো ইমাম গাজ্জালি সাহেবের বক্তব্য তুলে ধরে লিখেছেন যে ;- পীরের এত সম্মান তার মোটা তাজা সরির ও দৈহিক সক্তি ও পার্থিব সম্পদের কারণে নয় , বরং আল্লাহর মারিফাতের জ্ঞান ও আল্লাহকে পাওয়ার পথের অভিজ্ঞতা ও আখিরাতে নাজাত পাওয়ার যোগ্যতার কারণে। তাই তো দেখা যায় ভালো বংশীয় নয় বরং নিস্য ,গরিব, দরিদ্র , ও ছোট পেশার অনেকেই শায়েখ ও সম্মানী পীর হয়েছেন ও দ্বীনি খিদমত আনজাম দিয়ে মানুষের ইসলাহের জিম্মাদারী পালন করে যাচ্ছেন
। 



[ মাহমুদুস সুলুক - পৃষ্টা ৫৯- ৬০ ]


ওহাবীদের 
নেতা 
শায়েখুল ইসলাম মাওলানা জাকারিয়া এর কিতাব -


(আকাবির কা
সুলুক ও এহসান) কিতাবের ২০ নং পৃঃ 



হজরত মাওলানা ইলিয়াছ (রহ) তাবলীগের নামে পীর মুরিদীর ও জিকির আজকার এর যে মেহনত চালু করেছেন এবং তা করতে সকল কে আদেশ করেছেন ও আমলি নমুনা পেশ করেছেন তাও জেনে এই বেপারে আমার মনস্থির হল যে ;- তাবলীগের নামে পীর মুরিদীর প্রচার করা। 
[আকাবির কা সুলুক পৃষ্টা ২০]


তাবলিগীদের আজিম শায়খুল হাদিস জাকারিয়া -
(শরীয়াত ক তরিকত কা তালাজুম) কিতাবের ১০-১১ নং পেজ এঃ-


হজরত জাবের (রা;) এর একটা হাদিস বর্ণনা করেন যে রাসুলুল্লাহ সা; ইরশাদ করেছেন যে গাছের নিচে যে মুমিন সাহাবা গণ মুরিদ হয়েছেন তাদের কেউ জাহান্নামে যাবে না ৷ তিরমিজি সরিফ ২ য় খন্ডের ২২৫ নং পৃষ্টা
আহ!!পীর মুরিদি নবী সা; এর সর্ণ তরিকা কতই না মূল্যবান ৷ হে আল্লাহ যারা মুরিদ হউয়ার ভেদ বোঝেনি তাদের কে আমল করার তৌফিক দান করুন ৷ 

মুরিদ না হলে বেইমান হয়ে মরতে হয়ঃ

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর বলেন রাসুল্লুল্লাহ (সা;) বলেন যে বেক্তি আল্লাহ ও তার রাসুলের অনুকরণ থেকে হাত সরিয়ে নিবে কেয়ামতের দিন তার নাজাতের জন্য কোনো দলিল থাকবে না ৷ আর যে বেক্তি মুরিদ হওয়া ছাড়া মরবে তার মিত্তু জাহেলি যুগের বেইমান লোকদের মত হবে ( মুসলিম শরিফ ২ খ ১২৮ প্রিষ্ট) বর্ণিত হাদিসের বেক্ষাতে জাকারিয়া সাহেব লিখেছেন যে ;- রাসুলুল্লাহ বলেছেন আল্লাহ ও তার রাসুলের অনুকরণ না করলে ক্ষমার কোনো দলিল থাকবে না তার পক্ষে কিয়ামতের দিন , আর ও বলেন মুরিদ না হয়ে মরলে জাহেলিদের মত মিত্তু হবে ৷যেহেতু নবী পাক দাওয়াত ও তাবলিগ দ্বারা সকলকে মুরিদ করে ঈমানী শিখা দিতেন ৷ তাই তার ও আল্লাহ পাকের অনুকরণে মুরিদ না হলে জাহান্নামী হতে হবে ৷সুরা ফাতাহ এর ১০ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা সকল সাহাবীকে মুরিদ করার ঘোসনা দিয়েছেন ৷ তাই মুরিদ করা ও মুরিদ হওয়া আল্লাহ ও নবীর সর্ণ তরিকা হিসেবে মর্যাদার স্থান পেয়েছে ৷ আর কোরান ও হাদিস দ্বারা ও তা প্রমানিত ৷ এভাবে মুরিদ না হলে আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরোধী বলা হয়েছে ও তাদের কে অশিক্ষিত কাফেরদের মত জাহান্নামী বলা হয়েছে ৷ আর মুজতাহিদ ইমামগণ ও মুরিদ হওয়ার বিসয় কটর মনোভাব বেকত করেছেন ৷ 

[শরীয়াত ও তরিকত কা তালাজুম পৃষ্টা নং ১০-১১]

তো এখান থেকে প্রমান হচ্ছে যে সুধু সুপারিশ না বরং নাজাত এর ওয়াসিলা ও বটে

হজরত ইমাম হাম্বল (রহ ) এর মতে ইমান হলো নবীর নবীর তরিকায় মুরিদ হওয়া ও নবীর আদেস নিশেদ পরিপূর্ণ ভাবে পালন করা ৷ মুরিদ হওয়া একটা বিসয় হলে ও ইমান ,ইসলাম , শরীয়াতের সকল বিসয় এর ভিতর আছে ৷ সুতরাং যে বেক্তি সরিয়াত মানবে না আর গোনাহ করবে সে তার মুরিদ হওয়ার সকল অঙ্ঘিকার ভঙ্গ করবে ৷ অবশ্যই তার ইমান ও কমতে থাকবে ৷ 
( ফয়জুল বারী , সরহে বুখারী ১ খ ৪৮ নং পৃষ্টা )
জাকারিয়া সাহেব তার কিতাব (শরীয়ত ও তরিকত কা তালাজুম ) এর ১২-১৩ নং পৃষ্টা তে -

উপরের বর্ণিত ইমাম হাম্বল (রহ) এর কথা উল্লেখ করে তার বেক্ষাতে লিখেছেন যে ;- মুজতাহিদ ইমামগণ মুরিদ হওয়াকে ঈমানী বিসয় বলে আখ্যায়িত করলেন ৷ কারণ তাদের কাছে বায়েত ও মুরিদ হয়ায়াই ছিল ঈমানী বিসয়৷ আজকাল যদিও আলেমগণ বায়াত হওয়ার বিসয় গুরত্ব দেন না৷ কেন না হতে পারে বায়েত হওয়া ছাড়াই তারা ইমান হাসিল করেছেন ৷তাদের কবরে তারা জবাব দিবে এবং আমাদের কবরে আমরা জবাব দিব ৷ তাই আমাদের উচিত কোরান ,হাদিস ও মুজতাহিদ ইমামগণের অনুসরণ করা৷ ইমাম গনের মতের বিরোধিতা না করা৷ কেননা কোরান বলে বায়েত হলে আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়া যায় ৷ আর হাদিস বলে বায়েত না হলে বেইমান হয়ে মরতে হয় ৷

(শরীয়াত ও তরিকত) কিতাবের ২০ পৃষ্টায়-

জাকারিয়া সাহেব লিখেছেন যে
হজরত আবু ইয়াজিদ (রহ) বলেন অধাতিক লাইনে যার উস্তাদ নেই তার উস্তাদ শয়তান। 
(তাজ্কিরাতুল এহসান ১৬ নং পৃষ্টা)

ইহ্য়ায়ে উলুমুদ্দীন কিতাবে ইমাম গাজালী সাহেব একটা হাদিস বর্ণনা করেছেন যে :-
নবী পাক বলেছেন যে উম্মতের ইসলাহের জন্য নবীর দায়িত্ব যেমন তদ্রুপ মুরিদের ইসলাগের জন্য পীরের দায়িত্ব তেমন। 
(
উক্ত কিতাবে 
তাজ্কিরাতুল এহসান 
এর 
১৯ নং পৃষ্টা 
থেকে 
নিয়েছে)

পীর মুরিদীর লাভঃ
শায়েখ আব্দুল আজিজ মুহাদ্দেস এ দেহলবী সাহেব ব
লেনঃ

হক্কানী বুজুর্গ গণ ও পীর মাশায়েখ গণ নবী (স) এর মৃত সুন্নাত পীর মুরিদী জিন্দা করার কারণে অনেক সওয়াব পাবেন এবং জারা মুরিদ হয়ে মৃত সুন্নাত কে জিন্দা করবেন তারা ও অনেক সয়াব পাবেন। একটা মৃত সুন্নাত কে জিন্দা করলে ১০০ শহিদের সয়াব পাওয়া যায়।

(শরীয়াত ও তরিকত কা তালাজুম পৃষ্টা ২২)













শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৬

ফতোয়া প্রদানে সতর্কতা অবলম্বনঃ


ইসলামে ফেকাহ শাস্ত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অধিকাংশ আমল ফেকাহশাস্ত্রের সাথে সম্পৃক্ত। মানুষের জন্ম থেকে কবরে কাফন সহ যাবতীয় আমল ফিকহ শাস্ত্রের উপর নির্ভর করে।
ঈবাদত ছাড়াও লেন-দেন, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিচার ব্যবস্থা, অর্থনীতি, সমাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি এক কথায় একজন মুসলমানের জীবনের সর্বক্ষেত্রে ফিকহশাস্ত্রের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

ফিকহ শাস্ত্রের বিষয়গুলো এমন যে, এ ব্যাপারে গভীর পাণ্ডিত্য অর্জন ব্যতীত কোন মতামত দেয়া নিতান্তই বোকামী।
আর যাঁরা এ বিষয়ে গভীর পাণ্ডিত্য অর্জন করেছেন, তাঁদেরক্ষেত্রেও দেখা যায়, এ বিষয়ে কোন মতামত দিতে গেলে খুবই সতর্কতা অবলম্বন করেছেন।
রাসূল কারিম সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

من قال علي ما لم أقل فليتبوأ بيتاً في جهنم ، ومن أُفتى بغير علم كان إثمه على من أفتاه ، ومن أشار على أخيه بأمر يعلم الرشد في غيره فقد خانه

“যে ব্যক্তি এমন কথা বলল, যা আমি বলিনি, তবে সে জাহান্নামে নিজের জন্য একটি ঘর তৈরি করল। আর যাকে ইলম ব্যতীত ফতোয়া প্রদান করা হল, এর গোনাহ ফতোয়া প্রদান কারীর উপর বর্তাবে। আর যে ব্যক্তি তার ভাইকে এমন বিষয়ে পরামর্শ দিল যার বিপরীত বিষয়ের মাঝে সে কল্যাণ দেখছে, তবে সে তার সাথে প্রতারণা করল”
গ্রন্থ সূত্র :
*_* মুসনাদে আহমাদ, ১৪/৩৮৪পৃ., হাদিস ৮৭৭৬;
*_* আবু দাউদ, আস সূনান, ৩/৩২১ পৃ., হাদিস ৩৬৫৭,
*_* ইমাম ইবনুল বার, জামিউল বায়ানুল ইলমি ওয়া ফাদ্বলিহি, ২/৮৬০পৃ., হাদিস ১৬২৫।
*_* বাইহাকী শরীফ।
হাযরাত আহমাদ ইবনে ইউসূফ রুবায়ী সান'আনি রহ. বলেন,
'হাদিসটি আবু দাউদ ও আহমাদ ইবনে হাম্বাল সংকলণ করেছেন, আর এ সনদের সমস্ত রাবী সিকাহ্ বা বিশ্বস্ত'।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* সান'আনি, ফাতহুল গাফ্ফার, ৪/২০৫৬পৃ., হাদিস ৫৯৮৪।
আলবানী সূনানে আবু দাউদের তাহকিকে সনদটি হাসান বলে অভিহিত করেছেন।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* আলবানি, সহিহুল সূনানে আবু দাউদ, হাদিস ৩৬৫৭।
আল্লামা ইবনূল কাইয়্যূম আরেকটি হাদিস সংকলণ করেছেন,
"রসূলে কারিম সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ইলম ব্যতীত মানুষকে ফাতওয়া দিল তার উপর আসমান ও যমীনের সমস্ত ফিরিশ্তাদের লা'নাত বা অভিশাপ"।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইবনূল কাইয়্যূম আয যাওজী, ই'লামুল মুয়াক্কীয়ীন, ৪/১৬৭পৃ.।
বিখ্যাত তাবেয়ী ইবনে আবী লাইলা (রহঃ) বলেছেন,
عن عبد الرحمن بن أبي ليلى قال: أدركت في هذا المسجد (مسجد رسول الله صلى الله عليه وسلم ) مائة وعشرين من أصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم ما منهم احد يسأل عن حديث أو فتيا إلاّ ودّ ان أخاه كفاه ذلك. وفي لفظ آخر: كانت المسالة تعرض على أحدهم فيردها إلى الآخر، ويردها الآخر حتى ترجع الى الذي سأل عنها أول مرة.
“তাবেয়ী আব্দুর রহমান ইবনে আবী লাইলা (রহঃ) বলেন, আমি এই মসজিদে (মসজিদে নববীতে) একশ বিশ (১২০) জন সাহাবীর সাথে সাক্ষাৎ করেছি। তাদের কাউকে যখন কোন হাদীস বা ফতোয়া জিজ্ঞেস করা হত, প্রত্যেকেই পছন্দ করতেন, তাঁর আরেকভাই এর উত্তর প্রদানে যথেষ্ঠ"।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইমাম ইবনে আসাকির, তারিখে দামেস্ক, ৩৬/৮৬পৃ.।
*_* ইমাম ইবনে সা'দ, আত তাবাকাতুল ক্বুবরা, ৬/১৬৬পৃ.।

তিনি অন্য বর্ণনায় ইমাম ইবনে সা'দ রহ. (ওফাত ২০৭হি.) বর্ণনা করেন; সেখানে তিনিও অন্য বাক্যে তাই সংকলণ করেছেন।
এ তাবিয়ী আব্দুর রহমান ইবনে আবী লাইলা রহ. থেকে আরও একাধিক সূত্রের বর্ণনা রয়েছে।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইমাম ইবনে সা'দ, আত তাবাকাতুল ক্বুবরা, ৬/১৬৬-১৬৭পৃ.।

তিনি অন্য বর্ণনায় বলেছেন,
“তাবিয়ী ইবনে লায়লা রহ. বলেন, আমি ১২০ জন আনসারী সাহাবীদের সাক্ষাত লাভ করেছি, তাঁদের নিকট যখন মাসআলা পেশ করা হত, তখন সে আরেকজনের কাছে সেটা পাঠাত, অতঃপর তিনি আরেকজনকে জিজ্ঞেস করতে বলতেন, এভাবে অবশেষে প্রথমে যার নিকট প্রশ্ন করা হয়েছিল, তার নিকট ফিরে আসত”।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইবনূল কাইয়্যূম আয যাওজী, ই'লামুল মুয়াক্কীয়ীন, ৪/১৬৮পৃ.।

"হযরত আবু বকর রা. এবং হযরত উমর রা. কোন সমস্যার মুখোমুখি হলে অন্যান্য সাহাবীদের সাথে পরামর্শ করতেন এবং এ সম্পর্কে রাসূলে কারিম সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম এর পক্ষ থেকে কোন নির্দেশনা আছে কি না সেগুলো জিজ্ঞেস করতেন"।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* আল-ইনসাফ, শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী (রহঃ), পৃষ্ঠা-১৮।
[দুনিয়া বিখ্যাত ফকিহ্ তাবিয়ী ইবন আবি লায়লা রহ. সম্পর্কে :
তিনি কত বড় ফকিহ্ ছিলেন সে সম্পর্কে ইমাম যাহাবী রহ. তাঁর বিখ্যাত কিতাব 'তারিখুল ইসলাম'-এ উল্লেখ করেন,
"ইমাম আহমাদ ইবন ইউনুস রহ. বলেন, তাবিয়ী আব্দুর রহমান ইবন আবী লাইলা রহ. দুনিয়ার মধ্যে সবচে' বড় ফকিহ্ ছিলেন"।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইমাম যাহাবী রহ., তারিখুল ইসলাম, ৩/৯৬৭পৃ.।]


হযরত উমর (রাঃ) কোন সমস্যার মুখোমুখি হলে, বদরী সাহাবীদেরকে একত্র করে তাদের সাথে পরামর্শ করে সমাধান দিতেন।
তাই বলে কতিপয় অপরিণামদর্শী ব্যক্তিদের মত সকল ধরনের প্রশ্ন আসলে কোন চিন্তা-ভাবনা এবং সময় না নিয়েই ফাতওয়া প্রদান করতেন না।
যেমনটি জাকির নায়কের ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হচ্ছে। লোকটি প্রথম প্রথম তাকে ফিকহি বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলতেন যে, এগুলো আমার আয়ত্তের বাইরে।
যখন তিনি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলেন তখন সিরত্বল মুস্তাকিমে অধিষ্ঠিত 'আহলুস সূন্নাহ'-র বিপরীতে নিজের দল তথাকথিত আহলে হাদিস শব্দধারীদেরকে বেগবান করার জন্য সকল বিষয়ে ফাতওয়া দিতে শুরু করলেন, আর পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত হলেন।
মুফাস্সিরকূল শিরোমণী বিখ্যাত মুজতাহিদ ফকিহ্ সাহাবী হাযরাত আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস রা. বলেছেন,
إن كل من أفتى الناس في كل ما يسألونه عنه لمجنون"

“যে ব্যক্তি মানুষের সকল প্রশ্নের উত্তর দেয় এবং সকল বিষয়ে ফতোয়া প্রদান করে সে অবশ্যই পাগল”।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইবনূল কাইয়্যূম আয যাওজী, ই'লামুল মুয়াক্কীয়ীন, ১/২৮পৃ., এবং ২/১২৭পৃ.।
এটি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকেও বর্ণিত আছে।
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম বলেছেন,
الجرأة على الفتيا تكون من قلة العلم ومن غزارته وسعته فإذا قل علمه أفتى عن كل ما يسأل عنه بغير علم

“ফতোয়া প্রদান করতে উদ্যত হওয়াটা কম ইলমের কারণেও হতে পারে আবার অধিক ইলমের কারণেও হতে পারে। অতএব যখন কারও ইলম কম থাকে, তখন তাকে যে বিষয়েই প্রশ্ন করা হয়, না জেনে সে সকল বিষয়ে সমাধান দেয়"।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইবনূল কাইয়্যূম আয যাওজী, ই'লামুল মুয়াক্কীয়ীন, ১/২৮পৃ.।

তাবেয়ী মুহাম্মাদ বিন সিরিন (রহঃ) বলেন-
لأن يموت الرجل جاهلاً خير له من أن يقول بلا علم
“অজ্ঞতাবশতঃ কথা বলার চেয়ে কোন ব্যক্তির জন্য মূর্খ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা শ্রেয়”।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* আদাবুশ শরইয়্যাহ, আল্লামা ইবনু মুফলিহ্ (রহঃ), খ.২, পৃষ্ঠা-৬৫।
এ বিষয়ে তাঁর আরেকটি বক্তব্য রয়েছে, তিনি বলেন,
“কোন বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে না জেনে অজ্ঞতাবশতঃ কথা বলার চেয়ে কোন ব্যক্তির জন্য মূর্খ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা শ্রেয়; অথবা তার বলে দেয়া উচিৎ হবে আমি এ বিষয়ে জানি না"।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইবনূল কাইয়্যূম আয যাওজী, ই'লামুল মুয়াক্কীয়ীন, ২/১২৭পৃ.।

বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা ইবনে ওহাব (রহঃ) বলেন,
وعن ابن وهب قال : سمعت مالكاً يقول :وذكر قول القاسم : لأن يعيش الرجل جاهلاً خير له من أن يقول على الله مالا يعلم ، فقال مالك : هذا كلام ثقيل ثم ذكر مالك أبا بكر الصديق وما خصه الله به من الفضل وآتاه إياه قال مالك : يقول أبو بكر في ذلك الزمان : لا يدري ولا يقول هذا لا أدري قال : وسمعت مالك بن أنس رحمه الله يقول : من فقه العالم أن يقول لا أعلم فإنه عسى أن يهيأ له الخير

“অর্থাৎ আমি ইমাম মালেক (রহঃ) কে বলতে শুনেছি, তিনি বিখ্যাত তাবিয়ী ও আওলাদে রাসূল (সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম) ইমাম কাসেম (রহঃ) এর উক্তি উল্লেখ করেছেন- “আল্লাহর ব্যাপারে অজ্ঞতাবশতঃ কোন কথা বলার চেয়ে কোন ব্যক্তির জন্য অজ্ঞ-মূর্খ থাকাটা অধিক শ্রেয়; অথবা তার বলা উচিৎ হবে আমি এ বুষয়ে জানি না।”
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইমাম ইবন আসাকির (ওফাত-৫১৭হি.), তারিখে দামেস্ক, ৪৯/১৭৬পৃ., দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ্, বৈরুত লেবানন, প্রকাশ ১৪১৫ হি.।
*_* ইমাম ইবন আবি ইয়ালা (ওফাত-৫২৬হি., তাবাকাতুল হানাবালাত, ১/৭০পৃ., দারুল মা'আরিফ, বৈরুত লেবানন।
উপরোক্ত কথা উল্লেখ করে ইমাম মালেক (রহঃ) বলেন, এটি অনেক ভারী কথা। অতঃপর তিনি হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) এর ফযিলত ও বৈশিষ্ট্য এবং বিশেষভাবে তাঁকে যে ইলম ও মর্যাদা দান করা হয়েছে, সেটি আলোচনা করলেন। অতঃপর বললেন, “হযরত আবু বকর (রাঃ) এর সময়ে তিনি বলতেন যে, “আমি জানি না”। কিন্তু বর্তমানে এরা কেউ বলে না যে, আমি জানি না।”
ইবনে ওহাব (রহঃ) বলেন, আমি ইমাম মালেক (রহঃ) কে বলতে শুনেছি, “বুদ্ধিমান আলেমের কর্তব্য হল সে যেন বলে দেয় যে, “আমি জানি না”। কেননা এর দ্বারা হয়ত তার জন্য উত্তম কোন বিষয়ের ব্যবস্থা করা হবে”।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ই’লামুল মুয়াক্বিয়ীন, আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম, ২/১২৮পৃ.।
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ) বলেন-
من أفتى الناس وليس بأهل للفتوى فهو آثم عاص ومن أقره من ولاة الأمور على ذلك فهو آثم أيضاً.

“যে ব্যক্তি মানুষকে ফতোয়া দেয়ার যোগ্য নায় হয়েও ফতোয়া প্রদান করল, সে গোনাহগার ও আল্লাহর অবাধ্য। এবং শাসকদের যারা তাকে তার এ কর্মের সমর্থন করবে তারাও গোনাহগার হবে”।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ই’লামুল মুয়াক্বিয়ীন, আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-১৬৬।

হযরত আবু ইসহাক (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
"كنت أرى الرجل في ذلك الزمان وإنه ليدخل يسأل عن الشيء فيدفعه الناس عن مجلس إلى مجلس حتى يدفع إلى مجلس سعيد بن المسيب كراهية للفتيا"

““আমি সেই যুগে দেখেছি, যখন এক ব্যক্তি কোন একটা বিষয়ে কাউকে জিজ্ঞেস করতো, তখন একজন আরেকজনের নিকট প্রেরণ করত। অবশেষে লোকটি সাইদ ইবনুল মুসাইয়্যিব (রঃ) এর মজলিশে এসে উপনীত হতো। ফতোয়া প্রদানে তাদের অপছন্দ থাকায় মানুষ তখন এটা করত"।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ই'লামুল মুয়াক্কীয়ীন, ইবনুল কাইয়্যুম, ১/২৮পৃ.।

হযরত ইমাম মালেক (রহঃ) থেকে বর্নিত তিনি বলেন,
وعن مالك : قال أخبرني رجل أنه دخل على ربيعة بن أبي عبد الرحمن فوجده يبكي فقال له : ما يبكيك وارتاع لبكائه فقال له : أمصيبة دخلت عليك ؟ فقال : لا ولكن أستفتي من لا علم له ، وظهر في الإسلام أمر عظيم قال ربيعة : وبعض من يفتي ههنا أحق بالسجن من السراق

"আমাকে জনৈক ব্যক্তি সংবাদ দিয়েছে যে, সে হযরত রবীয়া ইবনে আবু আব্দুর রহমান (রহঃ) এর নিকট গিয়ে দেখল যে, তিনি ক্রন্দন করছেন। সে তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, কি কারণে ক্রন্দন করছেন? আপনার উপর কি কোন মুসীবত আপতিত হয়েছে? রবীয়া ইবনে আবু আব্দুর রহমান উত্তর দিলেন, আমি অযোগ্য লোকের নিকট ফতোয়া জিজ্ঞেস করেছি। “ইসলামের মাঝে মারাত্মক একটি জিনিসের আবির্ভাব হয়েছে। তিনি বলেন- বর্তমানে যারা ফতোয়া দেয়, তাদের কেউ কেউ চোরদের চেয়েও বেশি জেলে আবদ্ধ থাকার যোগ্য”।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ই'লামুল মুয়াক্কীয়ীন, ইবনুল কাইয়্যুম, ১/১৫৯পৃ.।
*_* আহমাদ বিন হামদান হারানী, সিফাতুল ফাতওয়া, পৃ. ১১।

রবিয়া ইবনে আবু আব্দুর রহমান মদীনার বিখ্যাত ফকীহ ছিলেন। এবং হাফেযে হাদীস ছিলেন। তাঁর নিকট থেকে ইমাম মালেক (রহঃ) ফিকহ শিখেছেন। তিনি ১৩৬ হি: সনে মৃত্যু বরণ করেছেন। ইসলামের দ্বিতীয় শতকে যদি তিনি একথা বলে থাকেন, তবে আমাদের সময়ের জাকির নায়েকের মত অপরিণামদর্শী অজ্ঞ-মূর্খদের যুগে কী বলা হবে?

এপ্রসঙ্গে আহমাদ বিন হামদান হারানী রহ. [মৃত্যু-৬৯৫ হিঃ] লিখেছেন-
فكيف لو رأى ربيعة زماننا هذا وإقدام من لا علم عنده على الفتيا مع قلة خبرته وسوء سيرته وشؤم سريرته وإنما قصده السمعة والرياء ومماثلة الفضلاء والنبلاء والمشهورين المستورين والعلماء الراسخين والمتبحرين السابقين ومع هذا فهم ينهون فلا ينتهون وينبهون فلا ينتبهون قد أملي لهم بانعكاف الجهال عليهم وتركوا ما لهم في ذلك وما عليهم ، فمن أقدم على ما ليس له أهلاً من فتيا أو قضاء أو تدريس أثم ، فإن أكثر منه وأصر واستمر فسق ولم يحل قبول قوله ولا فتياه ولا قضاؤه هذا حكم دين الإسلام ،

“যদি রবীয়া ইবনে আবু আব্দুর রহমান আমাদের এ সময়টি দেখতেন? তিনি যদি বর্তমান সময়ের অজ্ঞ লোকদের ফতোয়া প্রদানের অবস্থা প্রত্যক্ষ করতেন? নিজেদের অযোগ্যতা-অনভিজ্ঞতা, নিকৃষ্ট চারিত্রিক অবস্থা, অভ্যন্তরীণ কলুষতা, লৌকিকতা ও প্রশংসা-প্রিয়তা এবং পূর্ববর্তী গভীর পাণ্ডিত্যের অধিকারী যুগশ্রেষ্ঠ উলামায়ে কেরামের পথ থেকে বিচ্যুত থাকা সত্ত্বেও তাদের নিকট অজ্ঞ লোকদের ভিড় তাদেরকে জরাগ্রস্ত করেছে, ফলে তারা তাদের গ্রহণীয়-বর্জণীয় সকল বিষয় পরিত্যাগ করেছে; অথচ তাদেরকে নিষেধ করা সত্ত্বেও তারা নিবৃত্ত হয় না, তাদেরকে সতর্ক করা সত্ত্বেও তারা সতর্ক হয় না। সুতরাং কেউ ফতোয়া, বিচার কিংবা পাঠদানের যোগ্য না হয়েও যদি সে কাজে অগ্রসর হয়, তবে সে গোনাহগার হবে। এধরণের বিষয় যদি তার নিকট থেকে বারংবার প্রকাশ পেতে থাকে অথবা সে যদি এর উপর অটল থাকে, তবে সে ফাসেক হয়ে যাবে। এধরণের ব্যক্তির কোন কথা, ফতোয়া এবং কোন ফয়সালা গ্রহণ করা জায়েয নয়। এটি ইসলামের শাশ্বত বিধান।”
গ্রন্থ সূত্র :
*_* আহমাদ বিন হামদান হারানী রহ, সিফাতুল ফাতাওয়া, পৃষ্ঠা-১১-১২।



আহমাদ ইবনে হামদান হারানী রহ. মৃত্যুবরণ করেছেন-৬৯৫ হি: সনে। অর্থাৎ এখন থেকে সাত শ’ বছর পূর্বে তিনি একথাগুলো বলেছেন। সুতরাং বর্তমান যুগের যে কী করুণ অবস্থা তা সহজেই অনুমেয়।

তাবেয়ী মুহাম্মাদ ইবনে সিরিন (রহঃ) বলেন,
"قال حذيفة: إنما يفتي الناس أحد ثلاثة رجل يعلم ناسخ القرآن ومنسوخه وأمير لا يجد بدا وأحمق متكلف" قال ابن سيرين: فأنا لست أحد هذين وأرجو أن لا أكون أحمق متكلفا".

বিখ্যাত সাহাবী হযরত হুযাইফা (রাঃ) বলেন, মানুষকে ফতোয়া প্রদান করে তিন ব্যক্তির কোন এক ব্যক্তি-
১. কুরআনের নাসেখ-মানসুখ সম্পর্কে অবগত ব্যক্তি।
২. ফতোয়া প্রদানে বাধ্য আমীর বা শাসক।
৩. অথবা নিরেট মূর্খ লোক।
মুহাম্মদ ইবনে সিরিন (রহঃ) বলেন, আমি প্রথম দু’শ্রেণীর অন্তর্ভূক্ত নই। সুতরাং আমি তৃতীয় ব্যক্তি হতে চাই না।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইলামুল মুয়াক্কীয়ীন, ইমাম ইবনূল কাইয়্যূম, ১/২৮পৃ.।

পূর্ববর্তী বুযুর্গদের স্বভাব ছিল, যখন তাদেরকে কোন ফতোয়া জিজ্ঞেস করা হতো, তারা যদি এর সুস্পষ্ট উত্তর জানতেন, তখন তা বলে দিতেন। কিন্তু যদি এ বিষয়ে কোন উত্তর জানা না থাকত, সাথে সাথে বলে দিতেন, আমি জানি না। আর যদি একই প্রশ্নের বিভিন্ন উত্তরের সম্ভাবনা থাকত, তখন তারা বলতেন, এটি আমার নিকট পছন্দনীয়। আমার নিকট এটি ভাল মনে হয়।
যেমন ইমাম মালেক (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি ফতোয়া প্রদান করলে অনেক সময় বলতেন,
إن نظنُّ إلاَّ ظنَّاً وما نحن بمستيقنين
“আমি শুধু ধারণাই রাখি, এ ব্যাপারে সুনিশ্চিত নই”।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইলামুল মুয়াক্কীয়ীন, ইমাম ইবনূল কাইয়্যূম, ১/৩৫পৃ.।

হযরত আলী (রাঃ) বলেন,
وابردها على الكبد إذا سئل أحدكم عمَّا لا يعلم ، أن يقول : الله أعلم [تعظيم الفتيا لابن الجوزي/৮১
“আমার নিকট অধিক প্রশান্তিকর হল, তোমাদের নিকট কেউ যদি কোন প্রশ্ন করে, আর তোমরা সে সম্পর্কে না জেনে থাকো, তবে বলে দিবে, “আল্লাহই ভাল জানেন”।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইমাম ইবন আয যওজী, তা'যিমুল ফাতওয়া, ১/৮৩পৃ., হাদিস ২৩।

প্রখ্যাত তাবিয়ী ও আওলাদে রাসূল (সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম) ইমাম ইবনে কাসেম রহ. বলেন, ইমাম মালেক (রহঃ)-কে বলতে শুনেছি, ইমাম মালেক রহ. বলেন,
إني لأفكر في مسألة منذ بضع عشرة سنة ، فما اتَّفق لي فيها رأي إلى الآن
“আমি প্রায় দশ বছর যাবৎ একটি মাসআলা নিয়ে চিন্তা করছি, এখনও পর্যন্ত উক্ত মাসআলায় সমাধানে আসতে পারিনি"।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইমাম কাযি আয়াজ রহ., তারতিবুল মাদারেক, ১/১৭৮পৃ.।
তিনি আরও বলেন,
ربما وردت علي المسألة فأفكر فيها ليالي
“অনেক সময় আমার নিকট মাসআলা পেশ করা হয়, আমি রাতের পর রাত সেগুলো নিয়ে গবেষণা করি।”
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইমাম কাযি আয়াজ রহ., তারতিবুল মাদারেক, ১/১৭৮পৃ.।
এই হল, আমাদের পূর্ববর্তীদের অবস্থা।
এটিকে বর্তমান অবস্থার সাথে একটু তুলনা করুন। টি.ভি, রেডিও, পত্র-পত্রিকা এবং বিভিন্ন টকশোতে অবাধে ফতোয়ার ছড়াছড়ি। প্রত্যেকের নিজের মত মতো ফতোয়া দিচ্ছে। যার যা মনে চাচ্ছে, শরীয়তের বিষয়ে অবলীলায় তা বলে দিচ্ছে। শরীয়ত যেন লা-ওয়ারিস সম্পদ!

আল্লামা ইবনে আবিদীন শামী (রহঃ) উত্তম কথা বলেছেন-
لا تَحْسَبِ الفِقه تَمْراً أنْتَ آكِلُه *** لَنْ تَبْلُغِ الفِقْهَ حَتَّى تَلْعَقَ الصَبْرَا
“ফিকহ শাস্ত্রকে তুমি একটি খেজুর মনে করো না যে, তা মুখে পুরে খেয়ে ফেলবে। তুমি কখনও ফিকহ অর্জন করতে পারবে না, যতক্ষণ না তুমি ধৈর্য্য ধারণ ও অধ্যবসায় গ্রহণ করবে।”

তিনি বলেছেন-
إذ لو كان الفقه يحصل بمجرد القدرة على مراجعة المسألة من مظانها لكان أسهل شيء ولما احتاج إلى التفقه على أستاذ ماهر وفكر ثاقب باهر.
لَو كَانَ هَذَا العِلمُ يُدركُ بالمُنى مَا كُنْتَ تُبصِرُ في البَرِيِّةِ جَاهِلا

“কেননা কিতাব দেখে মাসআলা প্রদানের যোগ্যতার নাম যদি ফিকহ হত, তবে এটি সর্বাধিক সহজ বিষয় হত এবং এর জন্য কোন দক্ষ, অভিজ্ঞ এবং গভীর পাণ্ডিত্যের অধিকারী উস্তাদের সংস্পর্শের প্রয়োজন হত না।” “এই ইলম যদি এমনিতেই অর্জিত হত, তবে তুমি পৃথিবীতে কোন অজ্ঞ লোক দেখতে পেতে না।”


হযরত উকবা ইবনে মুসলিম (রহঃ) বলেন-
وعن عقبة بن مسلم قال : صحبت عبد الله بن عمر أربعة وثلاثين شهراً فكثيراً ما كان يسأل فيقول : لا أدري ، ثم يلتفت إلي فيقول : تدري ما يريد هؤلاء ؟ يريدون أن يجعلوا ظهورنا جسراً لهم إلى جهنم

“আমি ৩৪ বছর হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) সংস্পর্শে থেকেছি। তাকে যে প্রশ্ন করা হত, তার অধিকাংশ ক্ষেত্রে তিনি বলতেন-“লা আদরি” (আমি জানি না)। অতঃপর তিনি আমাকে লক্ষ্য করে বলতেন- “এরা আমাদের পিঠকে জাহান্নামের সেতু বানাতে চায়”।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* জামেউ বয়ানিল ইলমি ও ফাযলিহি, আল্লামা ইবনু আব্দিল বার (রহঃ), খ.২, পৃষ্ঠা-৮৪১।
প্রখ্যাত ফকিহ্ সাহাবী ইবন উমর রা. কি অপরিণামদর্শী 'জাকির নায়েক' হতেও কম জ্ঞানী ছিলেন!

তাবেয়ী হযরত আতা (রহঃ) বলেন-
أدركت أقواماً إن كان أحدهم ليسأل عن الشيء فيتكلم وإنه ليرعد
“আমি এমন সম্প্রদায়কে দেখেছি, যাদের নিকট কোন বিষয় জিজ্ঞেস করা হলে, তারা সে বিষয়ে কোন কথা বলতে গিয়ে কাঁপতেন”।
[কোন ধরণের ত্রুটি হওয়ার ভয়ে কাঁপতেন]
গ্রন্থ সূত্র :
*_* মুয়াফাকাত, আল্লামা শাতবী (রহঃ), খ.৪, পৃষ্ঠা-২৮৬।

বিখ্যাত ইমাম ও হাদিস বিশারদদের ইমাম হযরত সুফিয়ান সাউরী (রহঃ) বলেন-
أدركت الفقهاء وهم يكرهون أن يجيبوا في المسائل والفتيا حتى لا يجدوا بداً من أن يفتوا وقال : أعلم الناس بالفتيا أسكتهم عنها وأجهلهم بها أنطقهم

“আমি এমন ফকীহদেরকে পেয়েছি যারা মাসআলা ও ফতোয়া প্রদান করতে অপছন্দ করতেন। নিতান্ত নিরূপায় হলে তারা ফতোয়া প্রদান করতেন। ফতোয়ার ক্ষেত্রে সর্বাধিক জ্ঞাত সেই ব্যক্তি, যে চুপ থাকে, আর এক্ষেত্রে যে অধিক কথা বলে, সে হল চরম মূর্খ”।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* আল-আদাবুশ শরইয়্যাহ, আল্লামা ইবনে মুফলিহ (রহঃ), খ.২, পৃষ্ঠা-৬৬।
*_* আজরী বাগদাদী (৩৬০হি.), আখলাকুল উলামা, ১/১০২পৃ.।

হযরত আব্দুল মালিক বিন আবি সুলাইমান (রহঃ) বলেন-
سئل سعيد بن جبير عن شيء فقال : لا أعلم ثم قال : ويل للذي يقول لما لا يعلم : إني أعلم
“হযরত সাইদ ইবনে জুবাইর (রহঃ) কে কোন একটা বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন- “আমি জানি না”। অতঃপর তিনি বলেন- সে ধ্বংস হোক! যে জানে না অথচ বলে যে, আমি জানি”।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইবন আব্দুল বার রহ., জামিউল বায়ানিল 'ইলমি ওয়া ফাদ্বলিহি, ২/৮৩৬পৃ., হাদিস ১৫৬৮।
ইমাম মালেক (রহঃ) কে কখনও পঞ্চাশ(৫০)-টি প্রশ্ন করা হলে তিনি একটিরও উত্তর দিতেন না।
তিনি রহ. বলতেন-
من أجاب في مسألة فينبغي قبل الجواب أن يعرض نفسه على الجنة والنار وكيف يكـون خلاصه في الآخرة ثم يجيب فيها
“যে ব্যক্তি কোন মাসআলার সমাধান দিল, উত্তর প্রদানের পূর্বে তার জন্য কর্তব্য হল, সে নিজেকে জান্নাত ও জাহান্নামের সম্মুখে উপস্থিত করবে এবং পরকালে তার কিভাবে মুক্তি হবে এটি চিন্তা করবে, অতঃপর তার উত্তর প্রদান করবে”।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইমাম ইবনূল কাইয়্যূম, ই'লামুল মুয়াক্কীয়ীন, ৪/১৬৭পৃ.।
ইমাম মালেক (রহঃ) আরো বলেন-
ذل وإهانة للعلم أن تجيب كل من سألك
“প্রত্যেক ব্যক্তির প্রশ্নের উত্তর প্রদান ইলমের প্রতি অবমাননা ও লাঞ্ছনা প্রদর্শন।”
গ্রন্থ সূত্র :
*_* আদাবুশ শারঈয়্যাহ্, ইমাম ইবন মুফলিহ্, ২/৫৯পৃ.।


ইমাম যাহাবী (রহঃ) এর উক্তি প্রণিধানযোগ্য-
الجَاهِلُ لاَ يَعلَمُ رُتْبَةَ نَفْسِه ، فَكَيْفَ يَعْرِفُ رُتْبَةَ غَيْرِهِ
“মূর্খ লোকেরা নিজের অবস্থা সম্পর্কেই অবগত নয়, তবে তারা অন্যের মর্যাদা সম্পর্কে কিভাবে অবগত হবে।”
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইমাম যাহাবী রহ., সিয়ারু আলামিন আন নুবালা, ১১/৩২১পৃ.।

Mahmud Hasan




শুক্রবার, ৪ মার্চ, ২০১৬

টয়লেটে কুলুখ নেয়ার পর পানি ব্যবহার করাঃ


লিখেছেন : কলম সৈনিক

আহলে হাদীস সর্দার মুজাফফর বিন মুহসিন নামক উদ্ভট মুফতী বলেছেন,
পানি থাকা অবস্থায় কুলুখ নেয়া শরিয়ত সম্মত নয়। কুলুখ নেয়ার পর পানি ব্যবহার সম্পর্কিত যে হাদীস বর্ণনা করা হয়, তা মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন।
বেচারা আরো বলেন,
“সুতরাং সামাজিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত উক্ত মিথ্যা প্রথাকে অবশ্যই উচ্ছেদ করতে হবে। পানি থাকা অবস্থায় যেন কোন স্থানে কুলুখের স্তুপ সৃষ্টি না হয়”।
দেখুন,
জাল হাদীসের কবলে রাসুলুল্লাহ (সা) এর সালাত/৩৯

জবাবঃ

কুলুখ ব্যবহার করে পানি নেয়া সংক্রান্ত সহীহ হাদীসঃ
___________________________
হযরত আলী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তোমাদের পূর্ববর্তীরা শক্ত পায়খানা করতো। আর তোমরা কর নরম ভাবে। সুতরাং তোমরা পাথর (কুলুখ) ব্যবহার করে তারপর পানি ব্যবহার কর।
রেফারেন্সঃ
আস সুনানুল কুবরা, মুসান্নাফ ইবনি আবী শাইবাহ।

ইবনু হাজার আসকালানী (রাহ) এর পর্যালোচনাঃ
_________________________
ইমাম ইবনু হাজা আসকালানী (রাহ) বলেন, এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম ইবনু আবী শাইবাহ এবং ইমাম বাইহাকী হাসান সনদে।
অর্থাৎ হাদীসটি সহীহ।
রেফারেন্সঃ
আদ দিরায়াহ-১/৯৭
হাদীসটির পূর্ণ সনদ উল্লেখ করেছেন ইমাম যায়লায়ী (রাহ)।
রেফারেন্সঃ
নাসবুর রায়াহ-১/২১৮

ইমাম নববী (রাহ) এর ফতোয়াঃ
_________________
ইমামগণ ঐক্যমত পোষণ করেছেন যে, পানি এবং পাথর দ্বারা পবিত্রতা হাসিল করা উত্তম। আর তা হচ্ছে প্রথমে পাথর (কুলুখ) দ্বারা এবং তারপর পানি দ্বারা পবিত্রতা হাসিল করা। তবে কেউ যদি এ দুটি (পাথর এবং পানি) এর কোন একটি দ্বারা পবিত্রতা হাসিল করে, তবে তা জায়েয।
রেফারেন্সঃ
শারহু মুসলিম লিন নাওয়াওয়ী-৩/১৬৩
এমন কথাই বলেছেন জামিউত তিরমিযীর ব্যাখ্যাকার মুবারকপুরী।
তুহফাতুল আহওয়াযী-১/৭৮

ইবনু তাইমিয়্যাহ এর ফতোয়াঃ
__________________
ইবনু তাইমিয়্যাহ বলেন,
প্রথমে কুলুখ ব্যবহার এবং পরে পানি ব্যবহার করে পবিত্রতা হাসিল করা- এটাই হচ্ছে উত্তম কাজ। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল ও এটাকে জায়েয বলেছেন। তাছাড়া আরেকটি দলীল হলো, মদীনা মুনাওওয়ারার আনসারগণ পবিত্রতা হাসিলের জন্য পাথর এবং পরে পানি ব্যবহার করতেন। আর এর স্বপক্ষে আল্লাহ আয়াত নাযিল করেছেন,
(সূরা তাওবাহ,১০৮)

রেফারেন্সঃ
শারহু উমদাতিল ফিকহ
তাহারাত অধ্যায়, টয়লেটে প্রবেশ করা পরিচ্ছদ।

______________
সম্মানিত পাঠক,
তাহলে ব্যাপারটি কী দাঁড়ালো?
প্রশ্রাব পায়খানার পর পবিত্রতা হাসিলের জন্য উত্তম হলো প্রথমে কুলুখ এবং পরে পানি ব্যবহার করা উত্তম। আর এটাই সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত, যা উপরে আলোচনা করা হলো।
কিন্তু এসব সহীহ হাদীস এবং বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিসগনণের রায় এমনকি তাদের ইমামের ফতোয়া উপেক্ষা করে নামধারী আহলে হাদীস সর্দার মুজাফফর বিন মুহসিন বলে দিলেন, সমাজে প্রচলিত কুলুখ ব্যবহার একটি
“মিথ্যা প্রথা”!!!!!!
আর এ সংক্রান্ত হাদীস নাকি
মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন!!!!!!!
আজব খেলা!
_________________
লেখাটি শেয়ার / কপি করুন। প্রচার করুন। সকলকে এ প্রতারণা সম্পর্কে সচেতন করুন।

রাসুলগণের সুন্নাত চারটি। লজ্জা করা, আতর ব্যবহার করা, মিসওয়াক করা, এবং বিবাহ করাঃ



নামধারী আহলে হাদীস সর্দার মুজাফফর বিন মুহসিন বলেছেন, নীচের হাদীসটি নাকি দুর্বল!!
দেখুন,
জাল হাদীসের কবলে রাসুলুল্লাহ (সা) এর সালাত/ ৩৪
হাদীসঃ
হযরত আবু আইয়ূব (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, রাসুলগণের সুন্নাত চারটি। লজ্জা করা, আতর ব্যবহার করা, মিসওয়াক করা, এবং বিবাহ করা।
আরবী এবারতঃ
حدثنا سفيان بن وكيع حدثنا حفص بن غياث عن الحجاج عن مكحول عن أبي الشمال عن أبي أيوب قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم أربع من سنن المرسلين الحياء والتعطر والسواك والنكاح
হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম তিরমিযী (রাহ) তার জামি’তে। বর্ণনা শেষে তিনি বলেছেন, হাদিসটি হাসান (সহীহ)।
তিনি বলেছেন,
حديث حسن غريب
রেফারেন্সঃ
জামি তিরমিযি- ৩/৩৮২
ফাতহুল গাফফার -৩/১৩৯৬
কেউ কেউ এ হাদীসকে দুর্বল বলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মুবারকপুরী তার জবাব দিয়েছেন। বলেছেন,
وقد عرفت أنه مجهول إلا أن يقال : إن الترمذي عرفه ولم يكن عنده مجهولا ، أو يقال إنه حسنه لشواهده
অর্থাৎ, আমি এ হাদিসের একজন রাবী সম্পর্কে জানিনা। তিনি মাজহুল (অপরিচিত)। তবে ইমাম তিরমিযি (রাহ) হয়ত তাকে চিনতেন এবং এ রাবী তাঁর নিকট অপরিচিত ছিলেন না। অথবা তিনি হাদীসটিকে অন্যান্য সনদ থাকার কারণে ‘হাসান’ বলেছেন।
রেফারেন্সঃ
তুহফাতুল আহওয়াযী।
এ সনদ ছাড়াও অন্য সনদে এ হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে-
رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ هُشَيْمٌ ، وَمُحَمَّدُ بْنُ يَزِيدَ الْوَاسِطِيُّ ، وَأَبُو مُعَاوِيَةَ ، وَبِهِ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الْحَجَّاجِ ، عَنْ مَكْحُولٍ ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ
এ সনদে কিন্তু সেই মাজহুল (অপরিচিত) রাবী নেই, যাকে নিয়ে কেউ কেউ সন্দেহ পোষণ করেছিলেন।
রেফারেন্সঃ
জুয উ ইবনিদ দিমইয়াতী-১৩
হামযা আহমাদ যাইন ও বলেছেন, হাদীসটির সনদ হাসান। অর্থাৎ হাদীসটি সহীহ।
রেফারেন্সঃ
শুয়াবুল ঈমান-২৩৫৮১
আলবানী কিন্তু প্রথমে দুর্বল বললেও পরে অন্য স্থানে এ হাদিসটিকে হাসান বলতে বাধ্য হয়েছেন।
382 - [ 7 ] ( حسن )
وعن أبي أيوب قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : " أربع من سنن المرسلين : الحياء ويروى الختان والتعطر والسواك والنكاح " . رواه الترمذي
রেফারেন্সঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ-৩৮২- ১/৮২
যেখানে পর্যালোচনা করে হাদীসটিকে হাসান তথা সহীহ এর পর্যায়ের ব্যাপারে সিদ্দান্ত দেয়া হয়েছে, সেখানে নামধারী আহলে হাদিস সর্দার মুজাফফর কিন্তু এক পায়ে খাঁড়া।
চোখ বন্ধ করে ফোতোয়া দিয়ে দিলেন, হাদীসটি দুর্বল!!!!!

https://smartanalysis.wordpress.com/

মুযাফফর বিন মুহসিনঃ জালিয়াতির এক জীবন্ত প্রমাণ


লিখেছেন : কলম সৈনিক
____________________________
লেখাটি কপি / শেয়ার করুন, যাতে ‘জাল হাদীসের কবলে রাসুল (সাঁ) এর সালাত’ নামক বইটি পড়ে যারা বিভ্রান্ত হচ্ছেন, তাদের নিকট এই বার্তাটি পৌঁছে যায়।
প্রথমে যা জেনে নিলে ভাল হয়ঃ
________________
যয়ীফ হাদীস বলা হয় ঐ হাদীসকে যার সনদের মধ্যে হাদিস কবুল হবার শর্তগুলোর মধ্যে কোন একটি শর্ত অনুপস্থিত থাকে।
কিন্তু জাল হাদিস বলা হয় ঐ হাদিসকে যার সনদের মধ্যে মিথ্যাবাদী বর্ণনাকারী থাকে।
মোট কথা, জাল এবং যয়ীফ হাদীসের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। যয়ীফ হাদীসকে জাল হাদিস বলা হয় না, আবার জাল হাদীসকে ও যয়ীফ বা দুর্বল হাদিস বলা হয়না।
এ পার্থক্য যে করতে পারেনা, আবার হাদীস নিয়ে লম্বা লম্বা কথা বলে, সে হচ্ছে এ যামানার এক জঘন্য দাজ্জাল যে নাকি মুসলমানকে বিভ্রান্ত করার টিকাদারী নিয়েছে।
মুযাফফর বিন মুহসিনঃ
লা-মাযহাবী, নামধারী আহলে হাদিসদের জনপ্রিয় শায়েখ।
উনি আমাদের সালাত যে হচ্ছেনা তা প্রমাণ করার জন্য একটি বই লিখেছে। নাম দিয়েছে,
‘জাল হাদীসের কবলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সালাত’।
বইটির কভার দেখলে আপনি এ নামটি বাংলাতে এভাবেই দেখবেন। কিন্তু পাতা উল্টালেই পরের পৃষ্টার উপরে দেখবেন লোকটা বইটির নাম আরবীতে লিখেছে। লিখেছে-
صلاة الرسول صلي الله عليه وسلم بقبضة الاحاديث الضعيفة والموضوعة
আমরা যদি এ আরবী লাইনের অনুবাদ করি, তবে অর্থ দাঁড়াবে,
যয়ীফ ও জাল হাদীসের কবলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সালাত।
তারমানে আরবীতে উনি বলতে চেয়েছে, বইটি যয়ীফ এবং জাল হাদীসের সমন্বয়ের আলোকে লিখা হয়েছে।
কিন্তু বইটির কভার পেইজে বাংলা নামের মধ্যে শুধু জাল হাদিসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
তাহলে প্রশ্ন হলো,
আরবী নামের সেই যয়ীফ হাদীস গেল কই?
তাহলে কি সে আরবী অনুবাদ করতে জানেনা?
নাকি সে জানেনা যয়ীফ হাদীস কাকে বলে আর জাল হাদিস কাকে বলে? এ দুটুর মধ্যে পার্থক্য কী?
তারমানে সে আরবী ভাষা জানেনা?
বাংলা বই কয়েকটা জোগাড় করে সে বই লিখেছে?
আপনি যদি বলেন, অসতর্কতা বশতঃ বইটির মূল নাম থেকে বাদ পড়ে গেছে। তা কীভাবে সম্ভব? যে বই লেখা হয়েছে আমাদের সালাতকে জাল প্রমাণিত করার জন্য এত সতর্কতা নিয়ে? এত সিরিয়াস হয়ে? সে সিরিয়াস বইয়ের নামের মধ্যে অসতর্কতা?
কেউ তা মেনে নিবে?
না।
তাছাড়া আমি এখানে যে স্ক্রীন শট দিয়েছি, সেটা হচ্ছে দ্বিতীয় সংস্করণ। যদি একান্তই অসতর্কতার কারণে হয়ে থাকতো, তবে সেটা পরে শুদ্ধ করা হত।
কিন্তু তা করা হয়নি।
তাঁর মানে?
লেখকের নিকট তার লিখিত বইয়ের আরবী নাম আর বাংলা নাম একই। এখানে কোন ভুল নেই।
আপনি যদি বলেন, লেখক এখানে নাম দীর্ঘ হয়ে যাবার ভয়ে শর্ট করে লিখেছে।
এটা কি গ্রহণযোগ্য ?
অবশ্যই নয়।
আরবীতে বইয়ের নাম লিখলেন- জাল ও যয়ীফ হাদীসের কবলে
আর বাংলাতে তা শর্ট হয়ে তা হয়ে গেল কেবল জাল হাদিসের কবলে?
শর্ট করার নামে জাল হাদিস এর কথা উল্লেখ করে বুঝানো হলো- জাল আর যয়ীফ হাদিস একই, তাই উভয়টির নাম উল্লেখ না করে একটিই উল্লেখ করা হলো!
আরো অবাক লাগে,
এই বই পড়ে নাকি জামায়াতে ইসলামীর মাওলানা সাঈদী বলেছেন, আমি ৬৮ বছর পর আজ নতুন করে নামাজ শিখলাম!!

সম্মানিত পাঠক,
তো বইয়ের নামের মধ্যে যখন এই জালিয়াতি, তখন ভাবুন, ভেতরে কী পরিমাণ জালিয়াতির স্তুপ রয়েছে।
https://www.facebook.com/photo.php?fbid=452038414978883
https://www.facebook.com/photo.php?fbid=452775198238538
https://www.facebook.com/photo.php?fbid=454918454690879

মঙ্গলবার, ১ মার্চ, ২০১৬

এত বড় জানাযা আর কোন দিন দেখি নিঃ আল্লাহু আকবার



→ শহীদ মমতাজ ক্বাদেরী (রহঃ) এর জানাযায় লক্ষ কোটি নবীপ্রেমিক সুন্নী মুসলিম জনতার জোয়ার উঠেছে। নবীর শানে কুটুক্তি কয়ায় তিনি একজনকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন। তার এই ফাসিঁর বিরোদ্ধে পাকিস্তানের সুন্নী মুসলিম জনতার বিক্ষোভ সমাবেশ।

আল্লাহ পাক ওনাকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করুন।-- আমিন
৩ মিনিটের এই ভিডিওটি দেখুনঃ

https://goo.gl/UJbYVA

রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

ফরজ নামাজের পর সম্মিলিত দোয়াঃ(হাদিসের আলোকে)








শাফেয়ী মাযহাবে ফরজ নামাজের পর সম্মিলিত দোয়ার ফতোয়াঃ





শাফেয়ী মাযহাবের বিশ্ববিখ্যাত ইমাম, হাফিযুল হাদিস আন- নাওয়াওয়ী রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর ইমাম এবং মুক্তাদীর দোয়া করা সর্বসম্মতিক্রমে মুসতাহাব। তিনি একাকী নামাজ আদায় কারী পুরুষ, নারী, মুসাফির এবং অন্যান্যদের ক্ষেত্রেও দোয়া করাকে মুস্তাহাব বলেছেন।
তিন আরো বলেন,
মুসতাহাব তারীকা হচ্ছে, ফরজ নামাজ শেষে ইমাম সাহেব মুক্তাদীর দিকে মুখ করে বসবেন এবং দোয়া করবেন।
রেফারেন্সঃ
আল-মাজমু’
খন্ড- ৩
পেইজ নাম্বার- ৪৬৫,৪৬৯
এবার কি বিশ্ব বিখ্যাত এই হাফিযুল হাদীসকে বেদ'আতী বলবেন?
কারণ, তিনি যে ফরজ নামাজের পর সম্মিলিত দোয়া মুসতাহাব ফতোয়া দিয়ে দিলেন!
_______________
বিঃ দ্রঃ
ফরজ নামাজের পর ইমাম সাহেবের মুখ ফেরানো, কিংবা কোন কোন সালাতের পর বা সকল সালাতের পর এভাবে মুখ ফিরিয়ে সম্মিলিত দোয়া -- এনিয়ে ইমামগণের মধ্যে এখতেলাফ রয়েছে।
কিন্তু সকলেই মুল/ আসল অর্থাৎ ফরজ সালাতের পর সম্মিলিত দোয়ার ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন। মুস্তাহাব বলেছেন।
______________
লেখাটি কপি শেয়ার করুন।

(কলম সৈনিক)

ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর চোর ধরার ১টি মজার কাহিনীঃ


  • ইমাম আযম আবু হানিফা রহঃ এর এক প্রতিবেশীর ময়ূর চুরি হয়ে ছিল । সে ইমাম আযমের কাছে এ ঘটনা বললো । ইমাম আযম ওকে বললেন, তুমি এ কথা আর কাউকে বলিও না । ইমাম আযম মসজিদে গেলেন । যখন সব লোক নামাযের জন্য জমায়েত হলো, ইমাম আযম দাঁড়িয়ে বললেন, বড় লজ্জার বিষয়, প্রতিবেশীর ময়ূর চুরি করে এমন অবস্থায় নামায পড়তে আসল ওর মাথায় এখনও ময়ূরের পালক রয়েছে । এ কথা শুনা মাত্র এক ব্যক্তি স্বীয় মাথায় হাত দিল এবং মাথা লুকাতে চেষ্টা করলো । ইমাম আযম লোকটিকে বললেন, ওর ময়ূর তুমিই চুরি করেছ । লোকটি স্বীকার করলো এবং ময়ূরটি ফেরত দিয়ে দিল । 
  • [সূত্রঃ খায়রাতুল হাসান ১০২ পৃষ্ঠা]

শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

রাসুল (সাঃ) এর শালিনতা ও ওনার কারণে আবূ তালিবের পরিবারে খাদ্যে বরকতঃ



★ যরত রাসূলুল্লাহ্ (সা) নিজে বর্ণনা করেন-শৈশবে কুরায়শী বালকদের সাথে খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতাম। তন্মধ্যে বড় বড় পাথর একস্থান থেকে অন্যস্থান সরিয়ে নিয়ে যাওয়া একটা খেলা ছিল। এ খেলা খেলতে গিয়ে প্রায় সকল বালকই উলঙ্গ হয়ে যেত। পরনের কাপড় কাঁধে দিয়ে পাথর বহন করত। আমি সময় সময় এরুপ উলঙ্গ হওয়ার উপক্রম করতাম। এ সময় অদৃশ্য কোন শক্তি আমাকে ঘুষি মারত। তাতে বেশ ব্যথা পেতাম এবং বলত, ‘চাদের পরে ফেলো।’ আমি শক্ত করে চাদর বেঁধে পরতাম। এভাবে সকল বালকের মাঝে কেবল আমি চাদরপরা খালি কাঁধে পাথর বহন করতাম।
(ইবন ইসহাক)


★ হযরত ইব্ন আব্বাস ও মুজাহিদ থেকে বর্ণিত আছে যে, আবূ তালিবেরা সকালে একত্রে বসে বা আলদা আলদা যখন আহার করত তাদের পেট ভরত না। (কারণ আবূ তালিবের পরিবারের লোকসংখ্যা ছিল বেশি, আর তিনি কখনও সচ্ছল ছিলেন না।) কিন্তু রাসূল (সা) যখন তাদের সাথে বসে আহার করতেন তখন সকলেরই পেট ভরে যেত। সেজন্য সকাল কিংবা সন্ধ্যায় খাওয়ার সময় হলে আবূ তালিব বলতেন- অপেক্ষা করো, আমার বাছা আসুক। তারপর রাসূল (সা) আসলে সকালে একসাথে আহার করতেন। তখন সকালের পেট তো ভরতই, খাদ্য বেঁচেও যেত। আর তিনি খাদ্যে অংশগ্রহণ না করলে সকালে (খাদ্যের স্বল্পতা হেতু) ক্ষুধার্ত থাকত। দুধ থাকলে আবূ তালিব প্রথমে রাসূল (সা)-কে পান করাতেন, এরপর সকালে এ পাত্র থেকে পান করতেন। এতে সকলেই পূর্ণভাবে তৃপ্ত হয়ে যেতেন। তাঁকে আবূ তালিব বলতেন, ‘তুমি বড়ই বরকতওয়ালা।’ (খায়ায়েসুল কোবরা)

★ হযরত উম্মে আরমান রেওয়ায়েত করেন- আমি কখনও রাসূল (সা)-কে ক্ষুধা-তৃষ্ণার কথা বলতে শুনিনি। তিনি ভোরে যমযমের পানি পান করতেন। আমারা তাকে সকালের খাবার দিলে তিনি বলতেন, আমার পেট ভরা। (মাদারেজুন্নবুওয়াত ও খাসায়েসুল কোবরা)

পারস্য রাজপ্রসাদের গম্বুজ ভূমিসাৎঃ


হযরত ওয়াহাক ইব্ন মুনাব্বিহ বর্ণনা করেন-যখন আল্লাহ্ পাক রাসূলুল্লাহ্ (সা)-কে প্রেরণ করলেন, তখন পারস্য সম্রাট সকালবেলা দেখলেন , তাঁর প্রাসাদের গম্বুজ ভূমিসাৎ হয়ে গেছে এবং দজলা নদীর স্রোত বন্ধ হয়ে আছে। এতে সম্রাট অত্যন্ত বিচলিত হলেন। গণক, জ্যোতির্বিদ এবং জাদুকরদের দরবারে তলব করে বললেন, ব্যাপারটি কি, চিন্তা-ভাবনা করো।’

তারা নিজেদের জ্ঞান ও সাধনা দ্বারা জানতে চেষ্টা করতে গিয়ে দেখল, আকাশের চারপাশ বন্ধ। যে পথে ওরা এসব এতদিন জানতে পারত সে পথ অন্ধকার। তারা নিজেদের শাস্ত্রে ব্যর্থ হয়ে অপমানিত হয়ে গেল। এমনকি কোন জাদুকরের জাদু, অতীন্দ্রিয় কৌশল এবং জ্যোতিষীর গণনা কিছুই কার্যকর রইল না।
(সীরাতে ইব্ন ইসহাক)

রাসুলুল্লাহ (দুরুদ) ওনাকে গাছ ও পাথরের সালামঃ



★ নবুওয়াতপ্রাপ্তির প্রাক্কালে মুহাম্মদ (সা)-এর অবস্থা কিছু ভিন্ন হয়ে গেল। নির্জনতা ভাল লাগত। লোক-কোলাহলে অস্থিরতা বোধ করতেন। অন্তরে এক ধরনের শূন্যতা ও অপূর্ণতাবোধ তাঁকে আকুল করে রাখতো । তাই মাঝে মাঝে লোকালয় ছেড়ে দূরে মক্কার উপকন্ঠে জনবিরল পার্বত্য উপত্যকায় বা বিস্তীর্ণ সমভূমির দিকে তিনি চলে যেতেন। কোন গাছ বা পাথরের পাশ দিয়ে যখন তিনি অতিক্রম করতেন, সেগুলো তাঁকে সালাম দিত। আওয়াজ হতো- আস্সালামু আলাইকুম ইয়া রাসূলাল্লাহ। কোথা থেকে এ আওয়াজ ও সালাম আসে, কে দেয় দেখার জন্য তিনি চারদিকে চোখ ফেরাতেন, খুঁজতেন। কিন্তু শুধু গাছ বা পাথর ব্যতীত কিছুই তাঁর চোখে পড়ত না।
এভাবে যতক্ষণ আল্লাহর ইচ্ছা হতো তিনি দাঁড়িয়ে থাকতেন। চারদিকে দেখতেন এবং শুনতেন। তারপর এক রমযান মাসে যখন তিনি হেরার গুহায় ধ্যানে মগ্ন ছিলেন, আল্লাহ্ তা’আলার তরফ থেকে সম্মান ও মর্যদার বাণী ওহী নিয়ে জিবরাঈল আমীন (আ) আসলেন তাঁর কাছে। (ইব্ন ইসহাক)

★ বুখারী ও মুসলিমের বর্ণনা মতে- রাসূল (সা) নিজেই ইরশাদ করেনঃ মক্কায় একটি পাথরকে আমার চেনা আছে, ওহী আসার আগে সেটি আমায় সালাম দিত। হাদীসের কোন গ্রন্থে এরুপ আছে যে, সেই পাথরটি ছিল হাজারে আসওয়াদ। (সীরাতে ইব্ন ইসহাক)

★ রাসূল (সা)-এর ক্ষেত্রে আল্লাহ্ পাক যেমন একটি খেজুর গাছের কান্ডকে ক্রন্দন করার ক্ষমতা প্রদান করেছিলেন তেমনি গাছ ও পাথরকে কথা বলার ক্ষমতা দান করেছিলেন। তাতে বোঝা যায়, জিন ও ইনসানের উপর তখনও তাঁর নবুওয়াত ও রেসালাত প্রকাশিত হয়নি। কিন্তু সৃষ্টি জগতের অন্য সকল কিছুর উপরই তা প্রকাশিত হয়ে গিয়েছিল। তারা সবাই রাসূল (সা)-এর উপর ঈমান এনেছিল এবং তাকে ভালবাসা ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছিল। (ইব্ন ইসহাক)

রাসূল (সা)-এর নবুওয়াতের জীবনে পরবর্তীকালে এরুপ আরও বহু ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল।


★ হযরত আলী (রা) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ আমরা রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর সাথে যখন মক্কায় ছিলাম, তখন একদিন তিনি আমাদের নিয়ে শহরের একদিকে গেলেন। তাঁর সামনে যে বৃক্ষ, টিলা বা পাথর পড়ত সেই তাঁকে ‘আস্সাললামু আলাইকুম ইয়া রাসূলুল্লাহ্’ বলত। আমি নিজে তা শুনতাম। (বায়হাকী ও তিবরানী)

★ আবূ নায়ীম কর্তৃক বণিত অন্য এক রেওয়ায়েতে আছে- রাসূল (সা) ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম’ বলে জওয়াব দিতেন। জিবরাঈল (আঃ) তাঁকে এ সালাম শিক্ষা দিয়েছিলেন। (খাসায়েসুল কোবরা)

তথ্যসূত্র
রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর জীবনে আল্লাহর কুদরত ও রুহানিয়াত (লেখকঃ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল গফুর হামিদী, প্রকাশকঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ)

'উম্মী' শব্দের অর্থ ও তাৎপর্যঃ


আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন-

اَلَّذِيْنَ يَتَّبِعُوْنَ الرَّسُوْلَ النَّبِىَّ الْاُمِّىَّ الَّذِيْنَ يَجِدُوْنَهُ مَكْتُوْبًا عِنْدَهُمْ فِىْ التَّوْرَاةِ وَالْاِنْجِيْلِ يَأْمُرُهُمْ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهَهُمْ عَنِ الْمُنْكَرِ لَهُمْ الطَّيِّبَتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيْهِمْ الْخَبَائِثُ وَيَضَعُ عَنْهُمْ اِصْرَهُمْ وَالْاَغْلَلَ الَّتِىْ كَانَتْ عَلَيْهِمْ ط فَالَّذِيْنَ اَمَنُوْا بِهِ وَعَزَّرُوْهُ وَنَصَرُوْهُ وَاتَّبَعُو النُّوْرَ الَّذِيْنَ اُنْزِلَ مَعَهُ اُولَئِكَ هُمْ الْمُفْلِحُوْنَ
(১৫৭ سوره الاعراف: اية)

তরজমা: ওই সব লোক, যারা দাসত্ব করবে এ রসূল, পড়া বিহীন অদৃশ্যের সংবাদ দাতার যাকে লিপিবদ্ধ পাবে নিজের নিকট তাওরীত ও ইঞ্জীলের মধ্যে; আর পবিত্র বস্তু সমূহ তাদের জন্য হালাল করবেন এবং অপবিত্র বস্তুসমূহ তাদের উপর হারাম করবেন; এবং তাদের উপর থেকে ওই কঠিন কষ্টের বোঝা ও গলার শৃঙ্খল, যা তাদের উপর ছিলো, নামিয়ে অপসারিত করবেন। সুতরাং ওইসব লোক, যারা তাঁর উপর ঈমান এসেছে, তাকে সম্মান করেছে, তাঁকে সাহায্য করেছে এবং ওই নূরের অনুসরণ করেছে, যা তাঁর সাথে অবতীর্ণ হয়েছে তারাই সফলকাম হয়েছে।
— সূরা আ’রাফ: আয়াত- ১৫৭, তরজমা কানযুল ঈমান

প্রথম অর্থঃ
আয়াতে হুযুর পাক (সঃ) কে উম্মী উপাধি দিয়ে আল্লাহ পাক সম্বোধন করেছেন । উম্মী শব্দের একাধিক অর্থ হতে পারে- এটা ‘উম্মুন’ দ্বারা শব্দের সাথে সম্পৃক্ত শব্দ। আরবীতে (উম্মুন) বলে মাকে, আসল বা মূলকে। অর্থাৎ এর অর্থ হচ্ছে মা-বিশিষ্ট নবী। দুনিয়ায় সব মানুষ মা-বিশিষ্টই হয়; কিন্তু যেমন ‘মা’ আল্লাহ্ তা‘আলা হুযূর-ই আকরামকে দান করেছেন, তেমন গোটা দুনিয়ায় কেউ পায়নি। হযরত মরিয়মও ‘মা’-ই ছিলেন। কিন্তু ‘নবীকুল সরদার’ যেমন বে-মেসাল (উপমাহীন), তাঁর আম্মাজানও তুলানাহীন (বে-মেসাল)। কবির ভাষায়-
وه كنوپارى اك مريم وه نَفَخْتُ فِيْهِ كادم هے عجب نشان اعظم مر امنه كا جايا وه هے سب سے افضل ايا
অর্থ: তিনি ওই পবিত্র কুমারী মরিয়ম, তিনি আল্লাহর তা‘আলার বাণী- ‘আমি তার মধ্যে রূহ ‘ফুৎকার করেছি’-এর প্রাণবায়ু বা সারতত্ব। তিনি এক বৃহত্তর নিদর্শনের আশ্চর্যজনক প্রকাশস্থল। (এতে কোন সন্দেহ নেই।) কিন্তু হযরত আমেনার মহান সন্তান (হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম) হলেন সবার সেরা, সবার চেয়ে শ্রেষষ্ঠ হিসেবেচ এ ধরা বুকে তাশরীফ এনেছেন।
যে ঝিনুক নিজের পেটে মূল্যবান মুক্তা ধারণ করে, ওই ঝিনুকও মূলবান হয়ে যায়। যেই বরকতময়ী মা আপন পাক গর্ভাশয়ে ওই অদ্বিতীয় মুক্তাকে ধারণ করেন, তিনি কতই বরকত মণ্ডিত হবেন! (তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।)

দ্বিতীয় অর্থঃ
আরেক বৈশিষ্ট্য ‘পড়াবিহীন’। এর অর্থ হচ্ছে তিনি আপন মায়ের গর্ভাশয় থেকে সর্ববিষয়ে জ্ঞানবান হয়েই ভূমিষ্ঠ হয়েছেন, দুনিয়ার কারো নিকট পড়ালেখা করেন নি, করতে হয়নি। কবি বলেন-
خاك وبراوج عرش منزل – امى وكتاب خانه در دل امى ودقيقه دان عالم – بے سايه وسائبان عالم
অর্থ: তিনি মাটির পৃথিবীতে সদয় অবস্থান করছেন, অথচ আরশের সর্বোচ্চ আসনে আসীন হয়েছেন। তিনি ‘উম্মী’ (দুনিয়ার কোন ওস্তাদের নিকট পড়ালেখা করেননি, কিন্তু তাঁর পবিত্র নূরানী হৃদয়ে রয়েছে বিশালতম কিতাবখানা- (গ্রন্থালয়)
তিনি ‘উম্মী’ উপাধিধারী, অথচ বিশ্বের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ণ বিষয়াদি সম্পর্কে অবগত। তাঁর ছায়া ছিলো না, অথচ সেটা বিশ্বের জন্য বিশাল সামিয়ানা। হুযূর আকরামের ছায়া ছিলো না, কিন্তু সমগ্র দুনিয়ার উপর তাঁর ছায়া রয়েছে।

তৃতীয় অর্থঃ
‘উম্মী’ শব্দের তৃতীয় অর্থ- ‘উম্মুল কোরা’ (মক্কা মুকাররামাহ্)’য় সদয় অবস্থানকারী।

চতুর্থ অর্থঃ
এর চতুর্থ অর্থ- তিনি সমগ্র বিশ্বের মূল।
তথ্যসূত্র
mishukifti.wordpress.com

জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ১০ সাহাবীর নামঃ





পবিত্র কোরআনের অন্যত্র আল্লাহ তাআলা তাদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণে নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল করে বলেন : ‘মুহাজির ও আনছারগণের মধ্যে অগ্রবর্তী সাহাবীগণ এবং কল্যাণকর্মের মাধ্যমে তাদের অনুসারীগণের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হয়েছেন। আর তারাও তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন।’ (আত-তাওবাহ ১০০)

সাহাবিদের প্রশংসায় রাসুল (সা) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের মধ্যে তারাই সব চাইতে নেক লোক যাদের মাঝে আমি প্রেরিত হয়েছি।’ অন্য বর্ণনায়, রাসুল (সা) বলেছেন: ‘সবচাইতে সেরা মানব আমার সাহাবাগণ।’

আবদুল্লাহ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, ‘তোমরা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবিদের গালাগাল করো না। কেননা তাদের এক মুহূর্তের (ইবাদতের) মর্যাদা তোমাদের প্রত্যেকের জীবনের আমলের চেয়ে বেশি।’ (ইবন মাজা : ১৬২)


তবে সাহাবাগণের মধ্যে এমন দশ সাহাবা রয়েছেন, যারা জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত দশ সাহাবি বলে পরিচিত। আরবি আশারা শব্দের অর্থ দশ। আর মুবাশশারা শব্দের অর্থ সুসংবাদপ্রাপ্ত। অর্থাৎ যারা দুনিয়ায় বেহেশেতের সুসংবাদ পেয়েছে তাদের আশারায়ে মুবাশশারা বা বেহেশেতের সুসংবাদপ্রাপ্ত দশ সাহাবি বলা হয়।

তাদের সম্পূর্ণ তালিকা হলো:
– হযরত আবূ বাকর সিদ্দীক (রা)
– হযরত উমার বিন খাত্তাব (রা)
– হযরত উসমান বিন আফফান (রা)
– হযরত আলী বিন আবি তালিব (রা)
– হযরত আবূ উবাইদাহ বিন জাররাহ (রা)
– হযরত সা’দ বিন আবি ওয়াক্কাস (রা)
– হযরত আবদুর রহমান বিন আওফ (রা)
– হযরত যুবাইর বিন আওম (রা)
– হযরত তালহা বিন উবায়দুল্লাহ (রা)
– হযরত সাঈদ বিন যায়দ (রা)।

এই দশজন সাহাবি সম্পর্কে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তাদের মর্যাদা সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, আবু বকর জান্নাতি, উমর জান্নাতি, উসমান জান্নাতি, আলী জান্নাতি,তালহা জান্নাতি, যুবাইর জান্নাতি, আবদুর রহমান জান্নাতি, সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস জান্নাতি, সাঈদ ইবনে যায়েদ জান্নাতি এবং আবু উবায়দা ইবনুল জাররাহ (রা.)। -তিরমিজি

ইংরেজীতে বিস্তারিত পড়ুনঃ




→→ The narration pertaining to these ten companions is recorded by Ahmad (1/193) and At-Tirmithee (no. 3747) 
Abdur-Rahmaan Ibn ‘Awf (radiallahu anhu) 
narrated that the Prophet (salallahu alayhi wassalam) said:


أَبُو بَكْرٍ فِي الْجَنَّةِ وَعُمَرُ فِي الْجَنَّةِ وَعَلِيٌّ فِي الْجَنَّةِ وَعُثْمَانُ فِي الْجَنَّةِ وَطَلْحَةُ فِي الْجَنَّةِ وَالزُّبَيْرُ فِي الْجَنَّةِ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ فِي الْجَنَّةِ وَسَعْدُ بْنُ أَبِي وَقَّاصٍ فِي الْجَنَّةِ وَسَعِيدُ بْنُ زَيْدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ فِي الْجَنَّةِ وَأَبُو عُبَيْدَةَ بْنُ الْجَرَّاحِ فِي الْجَنَّةِ

Abu Bakr is in Paradise, ‘Umar is in Paradise, ‘Alee is in Paradise, ‘Uthmaan is in Paradise, Talhah is in Paradise, Az-Zubayr is in Paradise, ‘Abdur-Rahmaan Ibn ‘Awf is in Paradise, Sa’d Ibn Abee Waqqaas is in Paradise, Sa’eed Ibn Zayd Ibn ‘Amr Ibn Nufayl is in Paradise, and Abu ‘Ubaydah Ibn Al-Jarraah is in Paradise.

→→ It also has other supporting narrations by way of Sa’d Ibn Zaid (radiallahu anhu) from Ahmad (1/187-188) and At-Tirmithee (no. 3747).



→→ Al-Hakim narrated - declaring it sahih - from,
Ibn Mas`ud (radiallahu anhu) 
 who said the Prophet said: "A man from the dwellers of Paradise is about to come into your sight." Whereupon Abu Bakr came and sat among them.2 The Prophet had already given him the glad tidings of Paradise before that occasion. Meaning: When he said: "Abu Bakr is in Paradise, `Umar is in Paradise, `Uthman is in Paradise, `Ali is in Paradise, Talha is in Paradise, al-Zubayr [ibn al-`Awwam] is in Paradise, `Abd al-Rahman ibn `Awf is in Paradise, Sa`d [ibn Abi Waqqas], Sa`id [ibn Zayd ibn `Amr] is in Paradise, and Abu `Ubayda ibn al-Jarrah is in Paradise."



(Narrated from `Abd al-Rahman ibn `Awf and Sa`id ibn Zayd in the Sunan and Ahmad in his Masnad).


→→ Abu Daoud in his book , narrates from ,
Saeed bin Zaid (ra) said: 
I bear witness, I heard the messenger of Allah (s) say: Ten are in Paradise: The prophet is in Paradise, Abu Bakr in Paradise, Talha in Paradise, Omar in Paradise, 'Uthman in Paradise, Saad bin Malik in Paradise, and AbdulRahman bin `Awf in Paradise. If you wish I could tell you the tenth? He said. They said: Who is he? He said: Saeed bin Zaid."

1. Abu Bakr in Paradise,

2. Talha in Paradise,

3. Omar in Paradise,

4. 'Uthman in Paradise,

5. Saad bin Malik in Paradise, and

6. AbdulRahman bin `Awf in Paradise.

7. Saeed bin Zaid."

→→ al-Tirmithi in his book under #3747, narrates from,
Abdur-Rahmaan Ibn ‘Awf (radiallahu anhu) 
The prophet (s) said: Abu Bakr in Paradise, Omar in Paradise, 'Uthman in Paradise, Ali in Paradise, Talha in Paradise, al- Zubair (bin al-'Awwam) in Paradise, AbdulRahman bin `Awf in Paradise, Saad (bin Abi Waqqass) in Paradise, Saeed (bin Zaid), and abu 'Ubaida bin al- Jarrah in Paradise." 


1. Abu Bakr in Paradise,

2. Omar in Paradise,

3. 'Uthman in Paradise,

4. Ali in Paradise,

5. Talha in Paradise,

6. al- Zubair (bin al-'Awwam) in Paradise,

7. AbdulRahman bin `Awf in Paradise,

8. Saad (bin Abi Waqqass) in Paradise,

9. Saeed (bin Zaid), and

10. abu 'Ubaida bin al- Jarrah in Paradise."


→→ al-Tirmithi , under #3748, narration by "

Saeed bin Zaid (ra) said: 
that the prophet (s) said in a number of people, ten are in Paradise: Abu Bakr in Paradise, Omar in Paradise, 'Uthman, Ali, al-Zubair, Talha, AbdulRahman, Abu 'Ubaida, and Saad bin Abi Waqqass. He counted these nine and was quite about the tenth. They said: By Allah, abu-alAawar (i.e. Saeed), who is the tenth? He said: You swore by Allah - abu-alAawar is in Paradise." al-Tirmithi commented that abu-alAawar is Saeed bin Zaid bin Amr bin Nawfal.


1. Abu Bakr in Paradise,

2. Omar in Paradise,

3. 'Uthman,

4. Ali,

5. al-Zubair,

6. Talha,

7. AbdulRahman,

8. Abu 'Ubaida,

9. and Saad bin Abi Waqqass.

10. abu-alAawar -> Saeed bin Zaid bin Amr bin Nawfal.








বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জানাযাঃ



ইবনে মাজাহ শরিফে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, মঙ্গলবার সাহাবায়ে কেরাম রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম.-এর গোসল ও কাফনের কাজ শেষ করেন। নবীজির দেহ মোবারক রওজার পাশে রাখেন। সাহাবারা দল দলে নবীজির কাছে আসতে থাকেন। কারও ইমামতিতে নয়; সবাই একা একা নামাজ ও দুরুদ শেষে বেরিয়ে যান। ইবনে মাজাহ


অন্য কিতাবে আছে, রাসুল সা.-এর ইন্তেকাল এক আগে সাহাবিরা নবীজির দরবারে আসলেন। সাহাবাদের দেখে নবীজির চোখে বেদনার জল। নবীজি বললেন, আমি তোমাদের আল্লাহর কাছে সোপর্দ করছি, আল্লাহ তোমাদের সঙ্গী হবে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. জানতে চাইলেন, হে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম.! আপনার যাওয়ার সময় খুব নিকটে চলে এসেছে, আপনার ইন্তেকালের পর আপনাকে কে গোসল দিবে? রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম. বললেন, আমার আহলে বাইত মানে আমার পরিবারের সদস্যরা।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ আবার জানতে চাইলেন, কে আপনাকে কাফন পরাবে? রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আআলাইহী ওয়া সাল্লাম. বললেন, আমার আহলে বাইত। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ আবার জানতে চাইলেন কে আপনাকে কবরে নামাবে? রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম. বললেন, আমার আহলে বাইত। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ আবার জানতে চাইলেন কে আপনার জানাজা কে পড়াবে? তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম-এর চোখ বেয়ে বেদনার জল নেমে এলো। তিনি বললেন, তোমাদের নাবীর জানাজা এমন হবে না, যেমন তোমাদের হয়। যখন আমার গোসল হয়ে যাবে তখন তোমরা সবাই ঘর থেকে বের হয়ে যাবে। সবার আগে জিবরাইল আমার জানাজা পড়বে। তারপর মিকাঈল ও ইস্রাফিল ধারাবাহিকভাবে আরশের অন্যান্য ফেরেশতারা আসবে ও আমার জানাজা পড়বে। তারপরে তোমাদের পুরুষরা, নারীরা এবং শিশুরা আমার জন্য দোয়া ও সালাম পড়বে। অতঃপর তোমরা আমাকে আল্লাহর সোপর্দ করে দিবে। আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া-৫/২২২, দালায়েলুন নবুয়্যাহ লিল বায়হাককি।



নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওওয়া সদসাল্লাম এর জানাজা বিষয়ে আরো দীর্ঘ হাদিস পাওয়া যায় তিরিমিজি শরিফে। সাহাবি হজরত সালেম বিন ওবায়েদ রা. বলেন, আমি প্রথমে হজরত আবু বকর সিদ্দিক রা. কে রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম এর ইন্তেকালের সংবাদ দিই। তখন আবু বকর সিদ্দিক রা. আমাকে বললেন, তুমি আমার সঙ্গে ভেতরে আসো। সাহাবি হজরত সালেম বিন ওবায়েদ রা. বলেন, হজরত আবু বকর রা. যখন আকা সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম নিকট যেতে চাইলেন, তখন চারপাশে মানুষের প্রচন্ড- ভিড়। হজরত আবু বকর রা. লোকদের বললেন, তোমরা আমাকে সামান্য রাস্তা দাও! লোকেরা ভেতরে যাওয়ার পথ করে দিল! তিনি ভেতরে গেলেন, মাথা নুইয়ে কাছে গিয়ে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম. কে দেখলেন। নবীজির পবিত্র কপালে হজরত আবু বকর রা. চুমু খেলেন। তারপর কোরআনের আয়াত পড়লেন, যার অর্থ হলো, নিশ্চয় তুমিও ইন্তেকাল করবে এবং তারাও ইন্তেকাল করবে।

হজরত আবু বকর রা. বেরিয়ে এলে; লোকেরা জানতে চাইলেন, ওগো নবীজির বন্ধু! নবীজি কি ইন্তেকাল করেছেন? হজরত আবু বকর রা. বললেন, হ্যা। তখন লোকেরা নবীজির ইন্তেকালের খবর দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করলো । তারপর সাহাবায়ে কেরাম হজরত আবু বকর রা. কে জিজ্ঞেস করলেন, ওগো নবীজির বন্ধু! নবীজির কি জানাজার নামাজ পড়া হবে? তিনি বললেন, হ্যা। জিজ্ঞাসা করা হল, কিভাবে? হজরত আবু বকর রা. বললেন, এভাবে যে, এক এক জামাত নবীজির ঘরে প্রবেশ করবে এবং জানাজা পড়ে বেরিয়ে আসবে। তারপর অন্য জামাত প্রবেশ করবে। সাহাবারা হজরত আবু বকর রা. কে জিজ্ঞাসা করলেন, নবীজিকে কি দাফন করা হবে? তিনি বললেন, জি।

জিজ্ঞাসা করা হল, কোথায়? তিনি বললেন, যেখানে আল্লাহ তায়ালা নবীজির রূহ কবজ করেছেন সেখানেই। কেননা, আল্লাহ তায়ালা নিশ্চয় নবীজিকে এমন স্থানে মৃত্যু দান করেছেন যে স্থানটি উত্তম ও পবিত্র। সাহাবারা দৃঢ়ভাবে মেনে নিলেন হজরত আবু বকর রা.-এর কথা। হজরত আবু বকর রা. নিজেই নবীজির আহলে বায়াত তথা রাসুলের পরিবার ও বংশের মানুষদের ডেকে গোসল নির্দেশ দেন। সূত্র : শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস : ৩৭৯, ৩৯৭, শরফুল মুস্তফা, বর্ণনা নং-৮৫০, আল আনওয়ার ফি শামায়িলিন নাবিয়্যিল মুখতার, বর্ণনা নং-১২০৯

ইমাম শাফি রহ. এবং কাজি ইয়াজ রা. বলেন, নবীজি সা.-এর জানাজা পড়া হয়েছে। কিতাবুল উম্মু/ সিরাতে মস্তুফা/৩য় খ-: ২৩৫
পুনশ্চ : নবীজির জানাজা হয়েছে। সাহাবারা একা একা পড়েছেন। কেউ ইমামতি করেননি। তবে তাবাকাতে ইবনে সাদের বরাতে বলা হয়, হজরত আবু বকর ও ওমর রা. এক সঙ্গে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম.-এর ঘরে উপস্থিত হন। নবীজির দেহ মোবরক সামনে রেখে নামাজ-সালাম ও দুরুদ পেশ করেন। দীর্ঘ দোয়ার সময় পেছনে সারিবদ্ধ সাহাবিরা আমিন আমিন বলেছেন।